ন্যাভিগেশন মেনু

ইসরাইলি প্রকাশক পিয়েরে রাভি ও চীনা বই


চীনা বর্ণে লেখা "হ্যালো, জেরুসালেম থেকে" শীর্ষক একটি ছোট ব্ল্যাকবোর্ড পশ্চিম জেরুসালেমের ইসরাইলি প্রকাশক পিয়েরে রাভির বাড়ির দেয়ালে ঝুলানো আছে। এর পাশের ক্যাবিনেটে, চীন থেকে পাঠানো পুরস্কারের সার্টিফিকেট এবং ট্রফির পাশাপাশি রাভির সন্তানদের ছবি রয়েছে। রাভি সাংবাদিকদের বলেন, “এগুলো আমার গর্ব।“

চীনা বই বিশেষ অবদান পুরস্কার হল প্রকাশনা শিল্পের সর্বোচ্চ বিদেশি-সম্পর্কিত পুরস্কার যা জাতীয় সংবাদ প্রকাশনা ব্যুরোর উদ্যোগে জাতীয় সম্মানের কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

২০২০ সালের ডিসেম্বরে, বেইজিংয়ে ‘১৪তম চীনা বই বিশেষ অবদান পুরস্কার’ অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। সেখানে ১৫টি দেশের ১৫ জন বিজয়ীকে সম্মানিত করা হয়, যারা চীনের প্রকাশনা শিল্পকে বিশ্বব্যাপী পরিচয় করিয়ে দিতে এবং চীনের সাথে বিভিন্ন দেশের বিনিময় ও পারস্পরিক শিক্ষা প্রচারে অসামান্য অবদান রেখেছেন। রাভি তাদের একজন।

"আমি যখন ইমেলে প্রথম খবরটি জানি, তখন বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। অবশ্যই আমি খুব আনন্দিত ও অবাক হয়েছিলাম। এই সম্মান আমার প্রচেষ্টার স্বীকৃতিস্বরূপ।" রাভি এখনও পুরস্কারের কথা ভেবে উদ্বেলিত হন।

ছোটবেলা থেকেই, রাভি চীনসম্পর্কিত বই পড়তে শুরু করেন এবং প্রাচ্যের সুদূর প্রাচীন সভ্যতা তাকে আকর্ষণ করে। সেই সময়ে, বাজারে হিব্রু ভাষায় খুব কম চীনসম্পর্কিত বই পাওয়া যেতো। বেশিরভাগই ছিল ঐতিহাসিক বই। এ জন্য রাভি খুব দুঃখ অনুভব করতেন।

শৈশবের দুঃখ পরে রাভির ক্যারিয়ার অন্বেষণের মূল চালিকাশক্তি হয়ে ওঠে। তিনি তার নামে একটি প্রকাশনা সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন, চীনা প্রকাশনা সংস্থাগুলির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করতে থাকেন এবং প্রকাশনার জন্য হিব্রু ভাষায় ২০টিরও বেশি চীনা বই ধারাবাহিকভাবে সংকলন করেন। এর মধ্যে রয়েছে চীনের উন্নয়ন দর্শনের বই, উপন্যাস এবং একাডেমিক বই, ইত্যাদি। তিনি তার মেয়ের সঙ্গে সহ-লেখক হিসেবে দুটি শিশুতোষ বই চীনা ভাষায় অনুবাদও করেন। চীনের প্রেস বইগুলো প্রকাশ করেছে।

"এইভাবে চীনের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন আমার শৈশবের ইচ্ছা পূরণ করেছে। আমি চীন সম্পর্কে গভীর জ্ঞান অর্জন করেছি," রাভি বলেন।

২০১৯ সালে, রাভি ছেংতু যান এবং প্রথমবারের মতো মশলাদার হট পটের স্বাদ গ্রহণ করেন। তখন তিনি নিজের চোখে জায়ান্ট পান্ডাও দেখেন। তিনি বলেন, চীনা শহরগুলোর দ্রুত উন্নয়ন আশ্চর্যজনক। তিনি ইসরাইল ও চীনের জনগণের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া প্রচারের গুরুত্ব সম্পর্কে আরও সচেতন হন।

রাভি বলেন, ইসরাইল ও চীন একে অপর থেকে অনেক দূরে অবস্থিত। দুই দেশের অনেক মানুষ কখনও একে অপরের দেশে যায়নি। উভয় দেশের জনগণের একে অপরের সম্পর্কে যে নেতিবাচক পূর্বধারণা রয়েছে, তা হ্রাস করা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। "আমার মতে, সংস্কৃতি, বিশেষ করে বই, মানুষের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু হিসেবে কাজ করতে পারে। বই বিভিন্ন দেশের মানুষের মধ্যে ব্যবধান কমাতে, দূরত্ব কমাতে সাহায্য করে।" রাভি সাংবাদিকদের বলেন, তিনি অদূর ভবিষ্যতে ইসরাইলি পাঠকদের হাতে আরও চীনা বই তুলে দিতে চান। আর এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই তিনি একাধিক চীনা প্রকাশনা সংস্থার সঙ্গে চুক্তিও স্বাক্ষর করেছেন। - সূত্র: সিএমজি