ন্যাভিগেশন মেনু

বোনা আমন ধান নিয়ে দুশ্চিন্তায় চাটমোহরের কৃষকেরা


বোনা আমন ধানের শীষ বের হওয়ার পূর্বেই বিল থেকে বর্ষার পানি দ্রুত নেমে যাওয়ায় পাবনার চাটমোহর উপজেলার চারটি ইউনিয়নের হাজার হাজার কৃষক বোনা আমন ধানের ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন। এ ধান গাছ গুলো প্রায় ১০ থেকে ১২ ফিট লম্বা হয়ে থাকে। সাধারণত পানি বাড়ার সাথে সাথে ধান গাছের উচ্চতাও সমভাবে বাড়ে। এ ধান আবাদে সেচের প্রয়োজন হয় না।

আশ্বিন মাসের মাঝামাঝি সময়ে এসে বোনা আমন ধানের শীষ বের হয়। কিন্তু এ বছর আশ্বিন মাসের শুরু থেকেই দ্রুত বিলের পানি কমতে থাকে এবং কয়েক দিনের মধ্যে ধান খেত শুকিয়ে যায়। উপজেলার হান্ডিয়াল, নিমাইচড়া, বিলচলন (আংশিক) এবং ছাইকোলা ইউনিয়নের (আংশিক) এলাকার বিলের পানি ইতমধ্যে প্রায় শেষ হয়ে শুকিয়ে যাওয়ায় এসব এলাকার ধান খেত শুকিয়ে গেছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে চাটমোহরের ১১ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকায় ১১,০২০ হেক্টর জমিতে বোনা আমন ধানের চাষ হয়েছিল। বর্ষাকাল শুরুর দিকে প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ৮৯০ হেক্টর জমির বোনা আমন ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম হলে কৃষকেরা কাঁচা ধান গাছ কেটে গবাদী পশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে। ১০,১৩০ হেক্টর জমিতে ধান থেকে যায়। বর্ষার পানি দ্রুত নিঃশেষ হয়ে যাওয়ায় এখন পর্যন্ত আরো প্রায় ১০০০ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

উপজেলার বরদানগর গ্রামের কৃষক রতন হোসেন বাংলাদেশে পোস্টকে জানান, এই বছর পাঁচ বিঘা জমিতে বোনা আমন ধান চাষ করেছেন তিনি। জমি চাষ, বীজ, সার, নিড়ানো বাবদ ইতমধ্যে বিঘা প্রতি চার হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ধান কেটে বাড়ি আনতে বিঘা প্রতি আরও দুই হাজার টাকা খরচ হবে। সব মিলিয়ে বিঘা প্রতি ছয় হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। ধানের শীষ বের হওয়ার আগেই জমি শুকিয়ে গেছে। মাঝে মধ্যে বৃষ্টি হলে এ এলাকার কৃষক গড়ে বিঘা প্রতি চার থেকে পাঁচ মন হারে ফলন পেতে পারেন। আমনের ভর মৌসুমে যার দাম পাওয়া যেতে পারে চার হাজার টাকা। এ এলাকার অন্তত ত্রিশটি গ্রামের বোনা আমন চাষীদের বিঘা প্রতি লোকসান যাবে দুই হাজার টাকা।

তিনি আরও জানান, এ এলাকার পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রিত না হওয়ায় কোন কোন বছর বর্ষার শুরুতে কচি ধানের চারা পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে যায় আবার কোন কোন বছর আশ্বিন মাসের শুরুতে পানি চলে যাওয়ায় ধান গাছ শুকিয়ে মারা যায়। বছরের পর বছর এভাবেই ঝুঁকি নিয়ে এ এলাকার কৃষকেরা বোনা আমন ধানের চাষ করে আসছেন।

চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ.এ. মাসুমবিল্লাহ জানান, চাটমোহরের এ নিচু এলাকা গুলোতে ধলদীঘা, আজলদীঘা, জিরাশাইল, কালবোরণসহ স্থানীয় জাতের বোনা আমন ধানের চাষ হয়। অনিয়ন্ত্রিত বন্যার কারণে এ এলাকার কৃষকেরা অনেক সময়ই ক্ষতির শিকার হন। তবে মাঝে মধ্যে বৃষ্টি হলে ধানের ফলন বিপর্যয় কিছুটা কমবে।

আইকেআর/সিবি/ওআ