ন্যাভিগেশন মেনু

কপ১৫-এ অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যাশা


জাতিসংঘ জীববৈচিত্র্য দলিলে স্বাক্ষরকারী পক্ষগুলোর ১৫তম সম্মেলনের (কপ১৫) প্রথম অধিবেশন সোমবার চীনের ইয়ুননান প্রদেশের খুনমিং শহরে শুরু হয়েছে। এতে বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণকারীরা বলেন, সম্মেলনের সাফল্য মানবজাতির অভিন্ন ভবিষ্যত উজ্জ্বল করবে বলে তাঁরা আশা করছেন।

এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘পরিবেশগত সভ্যতা: পৃথিবীর সকল প্রাণের জন্য একটি অভিন্ন সম্প্রদায় গঠন’। সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ মহাসচিবের পরিবেশ পরিকল্পনা দপ্তরের নির্বাহী পরিচালক ইঙ্গার এন্ডারসেন বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন সরকার ও ব্যক্তিগত সংস্থার উচিৎ নীতি প্রণয়নে প্রাকৃতিক পরিবেশকে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রাখা এবং পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাজারের শক্তিসহ অন্যান্য শক্তির অভাব দূর করা। বিভিন্ন দেশ মানবজাতির টেকসই ভবিষ্যতের প্রচেষ্টা চালাবে বলেও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি। 

তিনি বলেন,“জীববৈচিত্র্য কমে যাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের সংকট মোকাবিলার জন্য ২০২১ সালের শেষ কয়েক মাস খুব গুরুত্বপূর্ণ। কপ১৫ সম্মেলনের দু’পর্যায়ের অধিবেশন পরপর অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তাতে আমাদের উচিত ২০২০ সালের পর বিশ্বব্যাপী জীববৈচিত্র্যের কাঠামো ও তার বাস্তবায়নের ওপর নজর রাখার জন্য যৌথ প্রচেষ্টা চালানো। এটি হবে আমাদের প্রত্যেকের টেকসই ভবিষ্যত উপভোগের একমাত্র উপায়।”

আন্তর্জাতিক বাঁশ ও বেত নেটওয়ার্কের মহাপরিচালক লু থিয়ান মিং চায়না মিডিয়া গ্রুপকে (সিএমজি) দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাত্কারে বলেন, বর্তমানে জীববৈচিত্র্য অধিক থেকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এবারের সম্মেলনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সমাজ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের ওপর আরও বেশি গুরুত্বারোপ করবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।

তিনি বলেন,“এ সম্মেলনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় পর্যায়ে জীববৈচিত্র্য রক্ষার বিষয়টি সম্প্রসারিত হবে। বিশেষ করে, আগামী ১০ বছর হলো জাতিসংঘের প্রাকৃতিক কাঠামো পুনরুদ্ধারের দশক। জীববৈচিত্র্যের সঙ্গে এর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। এবারের সম্মেলন আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় পর্যায়ে এর বিভিন্ন দিক এগিয়ে নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।”

ক্লায়েন্টআর্থ সংস্থার বেইজিং কার্যালয়ের প্রধান প্রতিনিধি দিমিত্রি নিকোলাস দে বোয়ের বলেন, তিনি এবারের কপ১৫ সম্মেলনের ওপর খুব গুরুত্ব দিচ্ছেন। আয়োজক ও চেয়ারম্যান দেশ হিসেবে চীন সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে আরও গঠনমুলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। 

তিনি বলেন,“প্রথমত: আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য রক্ষায় আর্থিক সমর্থন দেওয়া হবে। দ্বিতীয়ত: সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন সবদিকেই রেডলাইন জারি করেছে। সমুদ্র সংরক্ষণকাজ জোরদার হলে, এটি আরো দৃষ্টি কাড়বে। তৃতীয়ত: সবুজ সরবরাহ চেইন। এবং চতুর্থত: জলবায়ু পরিবর্তনের কিছু প্রতিশ্রুতি।”

পলসন ইন্সটিটিউটের উপদেষ্টা টেরি টাউনশেন্ড গত এক দশক ধরে চীনে বসবাস করছেন। তিনি বলেন, গত ১০ বছর তিনি চীনের জীববৈচিত্র্য-বিষয়ক নীতির উন্নয়ন দেখেছেন। পাশাপাশি তিনি নিজেই চীনের প্রাকৃতিক পরিবেশের সুস্থতা উপভোগ করছেন। তিনি বলেন, এবারের সম্মেলনের লক্ষ্য বিভিন্ন সরকারের কাছে গুরুত্ব পাবে এবং বাস্তবায়িত হবে।

তিনি বলেন, “জীববৈচিত্র্যর বিষয়কে বিভিন্ন দেশের নেতা, বিশেষ করে অর্থনৈতিক নীতি প্রণয়নকারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন। আমার মনে হয়, ১০ বছর আগে যে লক্ষ্য নির্ধারিত হয়েছে, তা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। এবারের সম্মেলনে নির্ধারিত লক্ষ্যগুলো বাস্তবায়িত হতে হবে। সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের নেতারা লক্ষ্যগুলো বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতি দেবেন বলে আমি আশা করি।” - ওয়াং তান হোং রুবি, সিএমজি