ন্যাভিগেশন মেনু

দমন-পীড়ন নয়, গণতান্ত্রিক অধিকারে বিশ্বাস করে সরকার: ওবায়দুল কাদের


বর্তমান সরকার দমন-পীড়ন নয় বরং সকল দল-মতের নিয়মতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক অধিকারে বিশ্বাস করে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

ওবায়দুল কাদের বুধবার (২৯ জুন) গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন। বিবৃতিতে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিবৃতির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।

বিরোধী দল দমনে আরও হিংস্র রূপে সরকার, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুলের এই বিবৃতি বিএনপির দৈনন্দিন মিথ্যাচারের অপরাজনীতির অংশ ছাড়া আর কিছু নয়।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দমন-নিপীড়ন নয় বরং সকল দল-মতের মানুষের সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক অধিকারে বিশ্বাস করে। সে কারণে বিএনপি ও ছাত্রদল নেতাদের উস্কানিমূলক বক্তব্যের পরও আওয়ামী লীগ সর্বোচ্চ সহনশীল আচরণ করেছে।

সেতু মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নেতারা গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে ব্যর্থ এবং তাদের দেশবিরোধী ধ্বংসাত্মক রাজনীতির কারণে জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়ে জাতির গৌরবের প্রতীক পদ্মা সেতু নিয়ে নাশকতার রাজনীতি শুরু করেছে। রাজপথে ও গণমাধ্যমে বিএনপি নেতারা অবাধ বাকস্বাধীনতা ভোগ করছে এবং সেই সুযোগে প্রতিদিন নির্লজ্জভাবে বক্তৃতা ও বিবৃতির মাধ্যমে নির্জলা মিথ্যাচার ও গুজব ছড়িয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে আজ বাংলাদেশে এক নবতর উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। বাঙালি জাতির এই গণজাগরণে হতাশ হয়ে দিশাহারা বিএনপি আজ তাদের হতাশা-ব্যর্থতা ঢাকতে সরকারের বিরুদ্ধে কাল্পনিক নির্যাতন-নিপীড়নের অভিযোগ তুলছে। অপরদিকে বিএনপি নেতাকর্মীদের দিয়ে পদ্মা সেতুর নাট-বোল্ট খুলে দেশের উন্নয়নের বিরুদ্ধে হীন ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে।

মির্জা ফখরুল ইসলামকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ফখরুল সাহেব কী ভুলে গেছেন, তাদের শাসনামলে কীভাবে আওয়ামী লীগের ২৬ হাজার নেতাকর্মীর মায়ের বুক খালি করা হয়েছে? তারা শুধু আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হত্যা করেনি ২০০৪ সালে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় হাওয়া ভবনের মদদে আওয়ামী লীগের সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে নির্মমভাবে হত্যা চেষ্টার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র চালিয়েছিল।’

তিনি আরও বলেন,  ‘২০০১-২০০৬ সময়কালে বিএনপি-জামাত অশুভ জোট শুধু রাজনৈতিক কর্মীদের হত্যা করেনি, তারা দেশের সাংস্কৃতিক কর্মী, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের উপরও নির্মম নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়েছে। তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলা ভাই, শায়েখ আব্দুর রহমান ও মুফতি হান্নানের মতো ভয়ঙ্কর দুধর্ষ জঙ্গিদের উত্থান ঘটে। এই জঙ্গিগোষ্ঠী আওয়ামী লীগ সমাবেশে শুধু নয়, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিক জঙ্গি হামলা চালায় এবং এই জঙ্গিদের হামলা থেকে ব্রিটিশ কূটনীতিকও রেহাই পায়নি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি তথাকথিত অপারেশন ক্লিন হার্টের মাধ্যমে শতাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে শুধু হত্যাই করেনি একই সাথে হত্যাকারীদের ইনডেমিনিটি দিয়েছিল। বিএনপি এদেশের সংবিধান, সুশাসন ও মানবাধিকারকে বার বার হত্যা করেছে। তাদের রাজনীতি এখনও মানুষ খুনের রাজনীতি।

তিনি বলেন, বিএনপির শীর্ষ নেতার উপস্থিতিতে ছাত্রদল-যুবদল নেতারা তাদের রাজনৈতিক সমাবেশে স্লোগান দেয় ’৭৫-এর হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেক বার’। এ ধরনের প্রকাশ্যে খুনের হুমকি দেওয়ার পরও এবং ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও ফৌজদারী অপরাধমূলক কর্মকা- করার পরও বিএনপি নেতাদের দমনে হিংস্র আচরণ তো দূরের কথা সরকারের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রকার আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।

ওবায়দুল কাদের বিএনপির উদ্দেশ্যে বলেন, মিথ্যাচার-গুজব বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বক্তব্য প্রদান করবেন না। পদ্মা সেতু নিয়ে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে উস্কানি দেবেন না। বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সুদৃঢ় নেতৃত্বে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাবে।