চীনের উহানে অতিমারি কোভিড-১৯ প্রাদুরভাব দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারত দ্রুততার সঙ্গে টিকা উৎপাদনে এগিয়ে আসে। বসে থাকেনি ভারতের অতি ঘনিষ্ট বন্ধু বাংলাদেশ। শেখ হাসিনা সরকার সঙ্গে সঙ্গে ভারত থেকে তিন কোটি ডোজ টিকা কেনার জন্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউটকে আগাম বায়নার টাকা দিয়ে চুক্তিবদ্ধ হয়।
এরমধ্যে ভারত থেকে এক কোটি ৩০ লাখ টিকা পেয়েও যায়। তবে তারমধ্যে ৩৩ লাখ টিকা পেয়েছে উপহার হিসেবে।এতে আপ্লুত শেখ হাসিনা সরকার ও দেশের মানুষ।
এরমাঝেই ভারতজুড়ে ব্যাপকভাবে কোভিড ছড়িয়ে পড়ে ও বিপুল সংখ্যক প্রতিদিন মারা যেতে থাকে। দেশের চাহিদা মেটাতে বাধ্য হয়ে সেরাম টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। এ নিয়ে ভারতবিরোধী গোষ্ঠী ও শেখ হাসিনা সরকার বিরোধীরা নানা অপপ্রচার চালায়।
যাইহোক, ছয় মাস বন্ধ রাখার পর ভারত পুনরায় তাদের উদ্বৃত্ত করোনা টিকা আগামী অক্টোবর থেকে রপ্তানি শুরু করবে বলে জানিয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখভাই মান্ডভিয়া।
তিনি জানান, অক্টোবরের শুরুতে বাংলাদেশসহ ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলো আবার টিকা পেতে শুরু করবে। যুক্তরাষ্ট্রে কোয়াডভুক্ত চার দেশের নেতাদের বৈঠকের আগে টিকা রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে ভারত।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরের একদিন আগে গতকাল সোমবার দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী এই ঘোষণা দিয়েছেন যে, প্রতিবেশী দেশগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা পাবে।
এদিকে টিকা রপ্তানির ঘোষণা আসার পর ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন জানিয়েছে, বাংলাদেশের মতো অগ্রাধিকারের তালিকায় থাকা অংশীদাররা প্রথম দিককার প্রাপকের তালিকায় থাকবে। বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কাসহ যেসব দেশে আবার টিকা পাঠানো হবে, তার পুরোটাই হবে সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড।
আর বাংলাদেশের মানুষের কাছে চরম আস্থা রয়েছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ডের টিকা। গত এপ্রিলের মাঝের দিকে বিশ্বজুড়ে টিকার রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারত। এতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ টিকার সংকটে পড়ে।বাংলাদেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিডশিল্ড প্রয়োগ হয়েছে ১ কোটি ২৪ লাখ ২৭ হাজার ৮৬৬ ডোজ।
ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা প্রয়োগ হয়েছে ১ লাখ ৩১১ ডোজ। চিনের সিনোফার্মের টিকা প্রয়োগ হয়েছে ১ কোটি ৯৮ লাখ ৩৬ হাজার ৭৮ ডোজ। আর মডার্নার টিকা প্রয়োগ হয়েছে ৪৯ লাখ ৫০ হাজার ৭৫২ ডোজ।
এদিকে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে গতকাল সোমবার ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা গত ১৬ সপ্তাহের মধ্যে সবচেয়ে কম। এর আগে গত ২৭ মে ২২ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তারপর থেকে দৈনিক মৃত্যু ক্রমেই বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে দৈনিক মৃত্যু আড়াইশোর ঘর ছাড়িয়ে যায়।
গত কিছুদিন ধরে সংক্রমণের হার কমার সঙ্গে সঙ্গে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যাও কমছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ২৭ হাজার ২৫১ জনে। রবিবার করোনায় ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
এস এস