ন্যাভিগেশন মেনু

ভারতে বিক্ষোভরত কৃষকদের ডাকে পালিত হচ্ছে বনধ্


কৃষি আইন প্রত্যাহারের জন্য দিল্লিতে বিক্ষোভরত কৃষকদের ডাকে ভারতজুড়ে বনধ্ পালিত হচ্ছে। সরকারের সাথে তিন দফা আলোচনায় কোনো সুরাহা না আসার মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) এ বনধ্ কর্মসূচি পালনের ডাক দেওয়া হয়।

গত ১২ দিন ধরে হাজার হাজার কৃষক দিল্লির প্রবেশপথগুলো ঘেরাও করে অবস্থান করছে। এরই মধ্যে দেশটির অন্তত ১৫টি বিরোধী দল কৃষকদের এ আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছে।

যদিও সরকার ও আন্দোলনরত কৃষকদের মধ্যে ৯ ডিসেম্বর পরবর্তী বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

ভারতের ক্ষমতাসীন সরকার বলছে, যে সংস্কারের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তাতে বেসরকারি খাত কৃষিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখার সুযোগ পাবে কিন্তু এটি কৃষকদের আয়ের কোনো ক্ষতি করবেনা। কিন্তু কৃষকরা এই প্রস্তাব গ্রহণ করতে রাজি নয়।

এর আগে কৃষক নেতা রাকেশ টিকাইত দিল্লি থেকে ঘোষণা করেন, কেন্দ্র যতোই আশ্বাস দিক, ৮ ডিসেম্বর ভারত বনধ হচ্ছেই।

গত শনিবার সংবাদসংস্থা এএনআইকে তিনি বলেন, ‘সরকার একটি খসড়া তৈরি করে আমাদের দেবে। ওরা বলছে, রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গেও আলোচনা করবে। এমএসপি নিয়েও কথা হয়েছে, কিন্তু আমরা বলেছি কৃষক আইন নিয়ে আলোচনা করতে হবে এবং সেগুলি সংশোধন করতে হবে। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ভারত বনধ হচ্ছেই।’

শনিবার সকালে কৃষক নেতারা বলেছিলেন, রাস্তায় থাকতে তাঁদের অসুবিধা নেই এবং সরকার তাঁদের দাবি না মানলে বিক্ষোভ অবস্থান চলবে। তারা আশা করছেন, সরকার তিন কৃষি আইন বাতিল করবে। কিন্তু তারা এই আইনের কোনও সংশোধন মেনে নেবেন না। 

এদিকে, তিন কৃষি বিলের বিরুদ্ধে কৃষক বিক্ষোভের অবসান ঘটাতে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কৃষক নেতাদের একের পর এক বৈঠকেও সমাধান মিলেনি। বৈঠকে উপস্থিত কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল ও সোম প্রকাশ এমএসপি নিয়ে কৃষকদের আশঙ্কা ভিত্তিহীন বলে জানান। 

সরকারের দাবি, কেন্দ্রের নতুন কৃষক নীতিতে চাষিরা সংকটে পড়বেন না। প্রয়োজনে এপিএমসি আরও মজবুত করার আশ্বাসও দেন তিন মন্ত্রী। তবে তাতে রাজি না হয়ে ভারত বনধের সিদ্ধান্তে অটল থেকে তা স্পষ্ট করেছেন কৃষক নেতারা।

বিক্ষোভরত কৃষকদের বড় অংশই এসেছে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা থেকে। মূলত এরাই দেশটির ধনী কৃষক সম্প্রদায়। প্রথমে পুলিশ তাদের বাধা দিয়েছিলো। পরে তারা শহরে প্রবেশের অনুমতি পেলেও হাজার হাজার কৃষক শহরের সীমান্তেই অবস্থান নিয়ে আছে এবং সরকার সংস্কার থেকে সরে না আসা পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান নেওয়ার হুমকি দিয়েছে।

ওদিকে ভারতে বিতর্কিত তিনটি আইন বাতিলের দাবিতে কৃষকরা গত দশ-বারোদিন ধরে যে তুমুল আন্দোলন করছেন, তার প্রতি দুনিয়াজুড়ে প্রবাসী শিখ সম্প্রদায় সমর্থন জানাচ্ছেন। তাদের আন্দোলনের প্রচার চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এবং দেশে বিদেশে প্রভাবশালী শিখ সম্প্রদায়ের মধ্যেও।

নিউ ইয়র্ক থেকে লন্ডন, টরন্টো থেকে সানফ্রান্সিসকো, অকল্যান্ড থেকে বার্লিন - এই সপ্তাহান্তে বিশ্বের বিভিন্ন শহরে ভারতীয় দূতাবাসের সামনে শিখরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, আন্দোলনকারী কৃষকদের সমর্থনে গাড়ির মিছিল পর্যন্ত বের করছেন।

এডিবি/