ন্যাভিগেশন মেনু

অ্যাডভেঞ্চার প্রেমীদের জন্য সুন্দরবন ভ্রমণ


বাংলাদেশে বহু দর্শনীয় স্থান আছে, আছে পাহাড় ও জলরাশি, কোথাও আছে আশ্চর্য ও বিস্ময়কর স্থান, আছে চরাঞ্চল ও সবুজ আর সবুজ। ঋতুর সাথে তাল মিলিয়ে প্রকৃতি ও পারিপার্শ্বিক সব কিছুই পরিবর্তন হয়। বিশ্বের সর্ববৃহৎ ‘ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন’ তেমনি এক বিচিত্র সুন্দরের নাম।

বিভিন্ন ধরনের জীবকুলের বাসস্থান, নানা রকমের গাছপালার সমারোহ ও বিন্যাস এবং বন্য প্রানীর অনন্য বিচিত্রতা এই সুন্দরবনকে করেছে অপরূপ প্রাকৃতিক নিদর্শন হিসেবে। সুন্দরী গাছের আধিক্যের কারণে নাম হয় সুন্দরবন। সুন্দরবনের আগের নাম ছিল বাদাবন।

গোটা সুন্দরবন ২টি বন বিভাগের অন্তর্ভুক্ত। যার মধ্যে আছে ৪টি প্রশাসনিক রেঞ্জ। বুড়িগোয়ালিনি, চাঁদপাই, শরণখোলা, খুলনা। আর আছে ১৬টি ফরেস্ট ষ্টেশন।

১৮৭৫ সালে সুন্দরবনকে সংরক্ষিত বন হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। ১৯৯৯ সাল থেকে সুন্দরবন ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়ে।

এই ম্যানগ্রোভ ফরেস্টে বিচরণ করে ৫০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩২০ প্রজাতির পরিযায়ী পাখি, ৫০ প্রজাতির সরীসৃপ, ৮ প্রজাতির উভচর, প্রায় ৪০০ প্রজাতির মাছ। তাছাড়া রয়েছে প্রায় ৩৫০ প্রজাতির উদ্ভিদ।

এই বনের অধিকাংশ উদ্ভিদ ম্যানগ্রোভ ধরনের। সুন্দরবন চিরসবুজ তাই দেখতে প্রায় এক রকম। এ বনের প্রধান বৃক্ষ সুন্দরী ও গেওয়া। এছাড়া গোলপাতা, কেওড়া, টাইগার ফার্ন, পশুর, তুনশা, ঝানা ইত্যাদি উদ্ভিদ প্রচুর জন্মে।

বুড়িগোয়ালিনী:

যারা সুন্দরবন ভ্রমণে আগ্রহী, অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় এবং এই বনকে খুব কাছে থেকে দেখতে ইচ্ছুক তারা প্রথমে সাতক্ষীরা থেকে সুন্দরবন যাবেন। ঢাকা থেকে সাতক্ষীরা জেলার দূরত্ব ৩৪৩ কি.মি। সাতক্ষীরা থেকে ৭০ কি.মি দূরত্বে শ্যামনগর উপজেলার নীলডুমুর। এই নীলডুমুরের অবস্থান বুড়িগোয়ালিনীতে।

সুন্দরবনের ৪ হাজার ১১০ বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে ১ হাজার ৭০০ কিলোমিটার জলাভূমি । এ বনে চলাচলের কোন রাস্তা নেই । তাই সুন্দরবন বেড়াতে নদীই একমাত্র ভরসা। এখান থেকে আপনি ট্রলার বা লঞ্চে সুন্দরবনের গহিন অরন্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে পারেবেন।

কলাগাছিয়া ফরেস্ট ক্যাম্প:

বুড়িগোয়ালিনি রেঞ্জের কলাগাছিয়া ফরেস্ট ক্যাম্প। জেনে রাখা দরকার যে, সুন্দরবনের এই সাতক্ষীরা রেঞ্জেই রয়েল বেঙ্গল টাইগারের বেশি আনাগোনা। কলাগাছিতে ফরেস্ট ক্যাম্পের পেছন দিয়ে রয়েছে বনের ভিতর দিয়ে পায়ে হাঁটার পথ। এখানে অনেক ধরনের গাছ আছে। ভাগ্যে থাকলে এখানে হরিণ, বানর, নানান ধরনের পাখি, সাপ, কাঁকড়ার দেখা পাওয়া যাবে। কলাগাছির এই হাঁটা পথে কিন্তু বাঘ মামাও হাঁটে। সুন্দরবনে গাছ, লতা-পাতা এতোই ঘন ও জটলা পাকানো যে, এর মধ্যে দিয়ে হেঁটে যাওয়া প্রায় অসম্ভব। সুন্দরবন পুরোটাই নো ম্যান’স ল্যান্ড তাই এখানে বন বিভাগ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনুমতি ছাড়া অন্য কারও বসবাসের নিয়ম নেই।

মান্দারবাড়ি সি-বিচ:

সাতক্ষীরা থেকে মান্দারবাড়ীর দূরত্ব ১০০ কিলোমিটার। খুলনা থেকে ১৯০ কিলোমিটার। এই মান্দারবাড়িতে রয়েছে সুন্দরবনের সবচেয়ে বড় সমুদ্র সৈকত। যেখানে বাঘ মামা সকালে মর্নিংওয়াক করে। আপনি সুন্দরবনের প্রতিটি স্পটেই বাঘ মামার পায়ের ছাপ দেখতে পারবেন। এখানে আরও দেখা মিলতে পারে টাইগার কাঁকড়া। এই টাইগার কাঁকড়ার একটা চিমটি আপনার সারাজীবনের কান্না হতে পারে। এছাড়াও দেখতে পাবেন সামুদ্রিক কাঁকড়া। এই সৈকত থেকে সকালের সূর্যোদয় এবং বিকালের সূর্যাস্ত উপভোগ করতে পারবেন।

নীলকমল বা হিরণ পয়েন্ট:

সুন্দরবনে যতগুলো দর্শনীয় স্পট আছে তার মধ্যে নীলকমল অন্যতম। ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো ৭৯৮তম বিশ্ব ঐতিহ্য ঘোষণা করার পর যে ফলকটি তৈরি করা হয় সেটা এখানে আছে। নীলকমল বা হিরণ পয়েন্ট একই যায়গা। হিরণ পয়েন্ট অনেক সাজানো গোছানো। হিরণ পয়েন্টে আছে ওয়াচ টাওয়ার যা উচ্চতায় প্রায় ৫ তলার সমান। হিরণ পয়েন্টের আসল অ্যাডভেঞ্চের হলো পেছন দিকের জঙ্গলের পায়ে হাঁটার রাস্তা ধরে ১ কিলোমিটার ভিতরে যেখানে আছে শনের বন। আর এই সন বনেই বাঘ মামা ঘোরাফেরা করে। নীলকমল খালে নৌকা ভ্রমণ করার ব্যবস্থা আছে। এছাড়া  নীল কমলে হরিণ, বিভিন্ন ধরনের পাখি, বানর, গুইসাপ ও কুমির দেখা যায়।

সুপতি ফরেস্ট স্টেশন:

বাগেরহাটের শরণখোলা রেঞ্জের রায়েন্দা থেকে সুন্দরবনের গয়েশ্বর নদীর বুক চিরে এগোলে পড়বে সুপতি ফরেস্ট স্টেশন।  বাগেরহাটের শরণখোলা রেঞ্জের সুপতি ফরেস্ট স্টেশন থেকে অনুমতি নিয়ে দুইজন বনরক্ষী সঙ্গে নিতে চলে যেতে হবে সুন্দরবনের গহীন অরণ্যে।

সুন্দরবন জীব বৈচিত্রে ভরপুর। আর রয়েল বেঙ্গল টাইগারের আবাস এখানিই। লালচে কালো ডোরা কাটা দাগের মায়াময় চেহারার এই বন বিড়াল যে কতটা চালাক এবং হিংস্র তা আপনি বিশ্বাস করতে পারবেন না। আর সুন্দরবনে বাঘকে অন্য নামে ডাকার নিয়ম নেই। বাঘকে মামা বলে সম্বোধন করা হয়।

কচিখালি অভায়ারন্য: 

কচিখালি অভায়ারণ্যের মূল আকর্ষণ চিত্রা হরিণ। এই বনে প্রচুর পরিমাণ চিত্রা হরিণ বিচরণ করে। এক সময় বাংলাদেশের অনেক  বনাঞ্চলে চিত্রা হরিণ দেখা যেতো। শিকারির উপদ্রবের কারণে চিত্রা হরিণ শুধু সুন্দরবনেই দেখা যায়। ১৯৭৩ সালের বন্যপ্রানী অধ্যাদেশ বলবৎ করায় হরিণের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।

সুন্দরবনকে ঘিরে রয়েছে অনেক গীত, গল্প কাহিনী। এ বনে হিংস্র জন্তু-জানোয়ার থেকে যারা রক্ষা করেন তাঁদের কাষ্ঠ দেবতা, গাজীকালু, রাজ্যেশ্বরী বলে ডাকা হয়।  তারপরও বাঘে নৌকা থেকে মানুষ নিয়ে যায়।

গত ১০০ বছরে অনেক প্রাণি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তার মধ্যে রয়েছে গণ্ডার, বুুনো মোষ, নীলগাই, নেকড়ে, মিঠা পানির কুমির, মায়া হরিণ প্রায় বিলুপ্ত।

সুন্দরবনের কোল ঘেঁষে বসবাসকারী মানুষ জীবিকার তাগিদে এই বনের উপর নির্ভর করেন। মাছ ধরা তাদের মধ্যে একটি। বন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জেলেরা টিকিট সংগ্রহ করে বনে ঢোকেন। এ জন্যে প্রতিটি জেলে নৌকাকে রেজিষ্ট্রি করতে হয়। ধরা মাছের উপর আগে থেকেই বন বিভাগকে ট্যাক্স দিয়ে জেলেরা মাছ বাজারে বিক্রি করেন। এই মাছের উপর নির্ভর করে বেঁচে আছেন জেলেরা। এই জেলেরা ছোট খাল থেকে শুরু করে সাগরেও মাছ ধরেন।

কটকা অভয়ারণ্য:

কচিখালি অভয়ারণ্য থেকে বাদামতলি বিচ ডানে রেখে সামনে এগোলেই কটকা অভয়ারণ্য রেস্ট হাউস। এখানে রয়েছে অনেক বাওয়ালী। বন বিভাগের অনুমতিতে তারা সাধারণত শীতকালে গাছ এবং গোলপাতা কাটেন। টানা একমাসের মতো তারা বনে অবস্থান করেন। মাটি থেকে উপরে গাছের সঙ্গে শক্ত করে টোং ঘর বানিয়ে রাত্রি যাপন করেন। বাঘ, শাপ, কুমিরের সঙ্গে মোকাবেলা করে তাদের টিকে থাকতে হয়। মৌয়ালরাও অনুমতি নিয়ে এপ্রিল ও মে মাসের দিকে দলবদ্ধ ভাবে মধু সংগ্রহের জন্য এক লাইন করে হেঁটে বনে প্রবেশ করে মৌচাক খোঁজে তারপর মধু সংগ্রহ করেন। এছাড়াও চুনারু ও মাঝিরাও জীবিকার তাগিদে বনের উপর নির্ভর করেন।

কটকা অভায়ারণ্যে অনেক হরিণের দেখা মিলবে। তাছাড়াও দিনে দুইবার জোয়ার-ভাটা হয়। জোয়ারের সময় বনের বিশাল অংশ দুই থেকে তিন ফুট পানিতে তলিয়ে যায়।  তাই এই বনে কেবল সেই সব গাছপালাই জন্মে যা জোয়ারের লবনাক্ততা ও  জলমগ্নতার মাঝে টিকে থাকতে পারে। এখানে সুন্দরী, গেওয়া, গোরান, পাইনের মতো গাছ জন্মে। এক একটি সুন্দরী গাছ ৮০ বছর পর কাটার উপযোগী হয়। বন বিভাগ বনের প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য গাছ কাটার নিয়ম করে দিয়েছে। স্থান নির্দিষ্ট করে দিয়ে দেয় এবং এক স্থানে গাছ কাটা হলে ২০ বছরের মধ্যে আর সেই স্থানে আর গাছ কাটাতে দেওয়া হয় না।

এখানে  রেস্ট হাউস এমন জায়গায় আছে যেখান থেকে বাঘের পানি খাওয়া ও বিশ্রাম নেওয়া দেখা যায়। যারা বনে রাত্রিযাপন করতে চান তারা বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে কটাকা, কচিখালি, হিরণ পয়েন্টের রেস্ট হাউসে থাকতে পারেন। ট্যুর অপারেটররাও এ ব্যাপারে আপনাকে সাহায্য করতে পারবে। এছাড়া রেস্ট হাউস খালি থাকলে চৌকিদারের কাছ থেকে স্পট বুকিং নিয়ে রাতে থাকতে পারেন।

জামতলা সি-বিচ:

কটকার জামতলা খাল ধরে এগোলেই জামতলি। এখানে আছে টাইগার ফার্ন, হেতেল বন; যেখানে বাঘ মামা রেস্ট নেয়, লুকিয়ে থাকে। আছে ওয়াচ টাওয়ার, শন মাঠ, জাম গাছ। বাদামতলি সি-বিচ যেতে হলে এই বিশাল বড় শন মাঠ আর সারি সারি ঘন জাম গাছ পেরিয়ে যেতে হয়।

সুন্দরবন এমনিতেই সুন্দরবন না এর সৌন্দর্য রক্ষায়ে নিরলস কাজ করে বন বিভাগসহ আরও অনেকেই। বাঘের গলায় রেডিও কলার পরিয়ে টাইগার রিসার্চ ও গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হয়।

দুবলারচর:     

সুন্দরবনের আরকটি অন্যতম স্পটের নাম দুবলার চর। এখানে স্থায়ি ও অস্থায়ি জেলের বসবাস। ১০ হাজারের উপর মানুষ আছে দুবলার চরে। তারা সবাই পুরুষ। আছে বনের ভেতরে বাজার। দুবলার চরে জেলেরা মাছ ধরে এনে চরের এই খোলা ময়দানে মাছ শুকিয়ে শুটকি তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শুটকি পল্লী এই দুবলার চর। দুবলার চরের পাশে আরও অনেক চর আছে। যেমন- ডিমের চর, পক্ষীর চর, টিয়ার চর ইত্যাদি। 

এই দুবলারচরের মানুষেরা কার্তিক মাসে গঙ্গা দেবী ও  নীল কমল দেবতার পূজো করে থাকেন। পূজো উপলক্ষে রাস মেলা বসে।

এ বন থেকে সংগ্রহ করা হয় নানা ধরনের গাছপালা। আহরন করা হয় মধু, ঝিনুক, মাছ এগুলো অবশ্যই সরকারি বিধি মোতাবেক। সংরক্ষিত বনাঞ্চলে কোন কিছু কাটা, মারা, ধরা, সংগ্রহ করা, বিনষ্ট করা কিংবা কোন ধরনের বিধিমালা পরিপন্থি আচরন করা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। এর আইনকানুন সর্বদা মেনে চলবেন।

করমজল পর্যটন কেন্দ্র:

মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে পশুর নদীর তীর ঘেঁষে করমজল পর্যটন কেন্দ্র। এখানে অনেক পর্যটক একদিনে সুন্দরবন ভ্রমণের স্বাদ নিতে বেড়াতে আসেন। বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে ৩০ হেক্টর জমির উপরে এটি গড়ে তোলা হয়।

পর্যটন কেন্দ্রটির প্রথমে পড়বে সুন্দরবনের মানচিত্র, যা বেড়াতে আসা পর্যটকদের এই বন সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দেবে। বনের ভেতর দিয়ে কাঠের তৈরি আঁকাবাঁকা ট্রেইল, পশুর নদীর তীরে বিশ্রাম নেওয়ার বেঞ্চ, পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, শেড, বাংলাদেশের একমাত্র হরিণ ও কুমিররের প্রাকৃতিক প্রজনন কেন্দ্র ও জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য। নদী, প্রকৃতি, ও জীব বৈচিত্র্যতা এসব কিছু আপনার মনকে প্রশান্তিতে ভরে তুলবে।

যারা সুন্দরবনকে বইয়ের পাতায় বা ছবিতে দেখেছেন তারা স্বচক্ষে না দেখলে বুঝতে পারবেন না, কি অসম্ভব সুন্দর এর অনুভূতি। সুন্দরবনকে জানতে হলে এখানে আসবেন  এবং দেখবেন দু’চোখ ভরে এর অপার সৌন্দর্য।  

উপযুক্ত সময়:

সুন্দরবন এক এক ঋতুতে এক এক রকম। সাধারণত ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত সুন্দরবন ভ্রমনে আসলে ভালো। এ সময় পরিবেশ ঠাণ্ডা থাকে।

ভ্রমনে অবশ্যই যা যা লাগবে:

দক্ষ গাইড, পানযোগ্য খাবার পানি, শুকনো খাবার, রান্নার করার সরঞ্জাম, টর্চ লাইট, ক্যামেরা, দূরবীন, সময় কাটানোর জন্য বই, বিছানা যা ভ্রমনে অবশ্যই লাগবে।  

ঢাকা থেকে যেভাবে যাবেন:

মোংলা বা শরণখোলা থেকে সুন্দরবন যেতে হলে আপনাকে খুলনা যেতে হবে। ঢাকা থেকে খুলনা বাস, ট্রেন, লঞ্চে যাওয়ার ব্যবস্থা আছে। গাবতলী, সায়েদাবাদ, আব্দুল্লাহপুর, শ্যামলী থেকে সোহাগ, হানিফ, ঈগল পরিবহন চলাচল করে। ভোর ৬টা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত নিয়মিত খুলনার উদ্দেশে যাত্রা করে। 

বুড়িগোয়ালিনীর নীল ডুমুর থেকে সুন্দরবন যেতে হলে আপনাকে সাতক্ষীরা হয়ে যেতে হবে। ঢাকা থেকে সাতক্ষীরায় অনেকগুলো পরিবহন নিয়মিত যাত্রা করে। সৌদিয়া এয়ারকন, হানিফ, এসপি গোল্ডেন, দিগন্ত, এম আর এন্টারপ্রাইজ পরিবহনের বাসগুলো অন্যতম।

সুন্দরবন কিভাবে যাবেন:

ট্রলারে:

বর্তমানে সবাই ট্যুর গাইডের সহায়তায় সুন্দরবন ভ্রমণ করতে আসেন। কিন্তু যাঁরা অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করেন তাঁরা মাছ ধরার ট্রলার ভাড়া করে সুন্দরবন ঘুরতে আসতে পারেন। ট্রলারে সুন্দরবন ঘোরা কষ্টসাধ্য, মজা, বিপদজনক, সাশ্রয়ী ও রোমাঞ্চকর। ১০-১৫ জনের একটি দলের সুন্দরবন ভ্রমনে ২০ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হবে।

ট্রলারে করে সুন্দরবন আসতে আপনাকে খুলনা, সাতক্ষীরা বা বাগেরহাটের বন কর্মকর্তার কাছ থেকে নির্দিষ্ট ফরমে আবেদন ও সরকারি ফি পরিশোধ করতে হবে। এরপর সুন্দরবনে আপনার এবং ট্রলারের প্রবেশের অনুমতি নিতে হবে। অনুমতিতে রুট, কয়জন, কয়েদিন থাকবেন তা উল্লেখ করতে হবে। ট্রলার ভাড়া করার সময় দরদাম করে, এর আয়তন, এর ইঞ্জিন কন্ডিশন ভালোভাবে দেখে নেবেন।

জাহাজে:

যারা পরিবার নিয়ে সাচ্ছন্দে সুন্দরবন ঘুরতে চান, তারা ট্যুর প্যাকেজের মাধ্যমে ঘুরতে আসতে পারেন। এখন অনেক ট্যুর কোম্পানি প্যাকেজে সুন্দরবন ভ্রমণ করিয়ে থাকে। এদের মধ্যে আছে -

ডিঙ্গি ও ভেলা ভেসেলের বেঙ্গল ট্যুরস লি. হলি ডেস ট্যুর। ফোনঃ১৫৫২৫৫৫৫৫০

দি গাইড ট্যুরস লি. ফোনঃ০১৭১১-৫৪০৪৩১

খুলনার বাদাবন ও ওটি আলী ভেসেল পরিচালক

রুপান্তর ইকো ট্যুরিজম লি. ফোনঃ০১৭১১-৮২৯৪১৪

সাতক্ষীরা তিনটি ভেসেল পরিচালনাকারী

বর্ষা ট্যুরিজম, ফোনঃ০১৭১৫-২৫১৯৬৩

সুন্দরবন ওয়ান্ডার্স এন্ড এডভেঞ্চার্স লি. ফোনঃ ০১৭১১-৪৩৯৫৫৭

রয়েল ভেসেলের গন্ডোলা রয়েল ট্যুর লি. ফোনঃ ০১৭১১-২৯৫৭৩৮

সুন্দরবন প্যাকেজে খাবারের মান, সাধারন খরচ ও জাহাজের ধরন অনুযায়ী জন প্রতি ৫,০০০/-  থেকে  ১০,০০০/- টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। তার জন্য অগ্রিম বুকিং দেওয়া দিতে হয়।

এসএম/এডিবি