ন্যাভিগেশন মেনু

ইতালিতে গভীর ভালোবাসায় বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উদযাপিত


ইতালির রোমে বাংলাদেশ দূতাবাসে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর জন্মশতবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন করা হয়েছে।

বুধবার (১৭ মার্চ) ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন, জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, জাতির পিতা ও মুক্তিযুদ্ধের বীর শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন, বাণী পাঠ, দোয়া ও মোনাজাত, গ্রাফিক নোভেল প্রদর্শণ এবং দেশি ও বিদেশি আলোচকদের অংশগ্রহণে আলোচনা সভা এবং শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা।

সকালে জাতীয় সঙ্গীতের সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের পর দূতাবাসের সভাকক্ষে দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। 

এরপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্মিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর বর্ণাঢ্য জীবনের ওপর নির্মিত একটি গ্রাফিক নোভেল প্রদর্শিত হয়। 

গ্রাফিক নোভেল প্রদর্শনের পর সুস্মিতা সুলতানার নির্দেশনায় ইতালিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাংস্কৃতিক সংগঠন 'সঞ্চারি সংগীতায়ন' এর শিশু-কিশোরদের ধারনকৃত 'শোন একটি মুজিবরের থেকে...' পরিবেশিত হয়। 

আলোচনা সভায় সম্প্রতি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়া ইতালির নাগরিক ভিসেনজো ফালকোনে (Vincenzo Falcone) এবং তার স্ত্রী গ্রাজিয়েল্লা মেলানো লাউরা (Graziella Melano Laura) এ দিনটি উপলক্ষে তাদের শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।

প্রসঙ্গত, এ দম্পতি দীর্ঘ ৪০ বছর যাবৎ বাংলাদেশের বসবাস করছেন এবং সাতক্ষীরা জেলায় ঋশিল্পী সংস্থার প্রতিষ্ঠা করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

এছাড়া ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশি রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এবং সাংবাদিকরা আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। 

আলোচকরা বঙ্গবন্ধুর কর্মময় গৌরবান্বিত জীবনের ওপর আলোকপাত করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ নামে রাষ্ট্রের সৃষ্টি হতো না।

বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধু শিশুদের ভালবাসতেন, তাই আনন্দঘন এ দিনটিকে সরকার জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করছে। 

ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. শামীম আহসান তার বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল বীর শহীদদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধুমাত্র বাঙালি জাতিকেই স্বাধীনতা অর্জনে নেতৃত্ব দেননি, সারা বিশ্বের নিপীড়িত-নির্যাতিত স্বাধীনতাকামী মানুষের মুক্তি সংগ্রামেও অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন এবং ভবিষ্যতেও মানুষকে প্রেরণা যোগাবেন। 

তিনি আরও বলেন, ২০২১ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’ হওয়ায় এ বছরটি বাঙালি জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বছর। 

রাষ্ট্রদূত বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল বাঙালিকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তি দেওয়া। গণমানুষের এ অধিকার আদায়ের জন্য তিনি সারাজীবন আন্দোলন করেছেন এবং বিভিন্ন মেয়াদে কারাগারে তাঁর কেটেছে প্রায় ১৩ বছর। বঙ্গবন্ধুর সম্মোহনী ব্যক্তিত্ব ও ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্ব সমগ্র জাতিকে একসূত্রে গেঁথেছিল যার ফলে বাঙালি পেয়েছে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর কিশোর জীবনের কিভাবে তাঁর মানবিক গুণাবলি ও শিশুদের প্রতি গভীর মমত্ববোধ সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে তা তুলে ধরেন। 

দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতায় প্রবাসী বাংলাদেশি শিশু-কিশোররা স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করে। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী ও বিজয়ী শিশু-কিশোরদের নাম ঘোষণা করা হয়। 

উল্লেখ্য, কোভিড মহামারির ভয়াবহতার প্রেক্ষিতে ইতালি সরকার কর্তৃক আরোপিত কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে শুধুমাত্র দূতাবাসের সদস্যদের উপস্থিতিতে সীমিত পরিসরে দূতাবাসে এবং অনলাইন প্লাটফর্ম জুম-এ অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়। 

এডিবি/