ন্যাভিগেশন মেনু

এবার মাদরাসা শিক্ষার্থীকে শিকল পরিয়ে নির্যাতন, ২ শিক্ষক গ্রেপ্তার


লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জের পানপাড়া বাজারে দারুল কোরআন মহিলা মাদরাসায় শিক্ষার্থীদের পায়ে শিকল পরিয়ে নির্যাতনের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির দুই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে রামগঞ্জ থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তার হওয়া দুই শিক্ষক হলেন - মাদরাসার প্রধান শিক্ষক মো. শহীদুল ইসলাম ও সহকারী শিক্ষক মো. আশেক এলাহী তারেক। শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

এর আগে জামালপুর জেলার ইসলামপুর উপজেলার গোয়ালেরচর দারুত তাক্কওয়া মহিলা মাদরাসার মোহতামিম আসাদুজ্জামানের স্ত্রীর এক হাজার টাকা হারিয়ে যায়। পরে মাদরাসার সব শিক্ষক ও অন্য শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় শ্রেণির  তিন ছাত্রীকে সন্দেহ করে এবং টাকা ফেরত দিতে তাদের চাপ প্রয়োগ করে।

কড়া শাস্তির ভয়ে তিন ছাত্রী মাদরাসা ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরে অবশ্য নিখোঁজ তিন ছাত্রীকে রাজধানীর মুগদাপাড়া থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। রামগঞ্জ কাণ্ডে নির্যাতিত শিক্ষার্থীর নানি পারভিন আক্তার বাদি হয়ে রামগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেছেন।

রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

ওসি জানান, গ্রেপ্তার আশিকুর রহমান তারেক লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার শ্যামগঞ্জ গ্রামের দেওয়ান বাড়ির নুরুল আমিনের ছেলে। আর প্রধান শিক্ষক শহীদুল ইসলাম রায়পুর উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের কাট ব্যবসায়ী ফজলুল করিমের ছেলে।

দুই বছর আগে স্বল্প সংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়ে দারুল কোরআন মহিলা মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন শহীদুল ইসলাম। শহীদুল তার বাবা মফিজুল ইসলামকে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি, স্ত্রী রাশেদা বেগমসহ কয়েকজন আত্মীয়কে নিয়ে একটি পরিচালনা কমিটি করে ১১ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা দিয়ে মাদরাসাটি পরিচালনা করে আসছেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, শহিদুল ইসলাম গত ১১ সেপ্টেম্বর মাদরাসার নাজেরা বিভাগের ছাত্র আরমানের পায়ে শিকল পরিয়ে সপ্তাহব্যাপী তার ওপর অমানবিক নির্যাতন চালান। এছাড়া একই বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদ হোসেনকে দিয়ে শহীদুল তার শরীর ম্যাসাজ করার পাশাপাশি নির্যাতন করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে আরমান ও জাহিদকে বিষয়টি গোপন রাখার নির্দেশ দেন প্রধান শিক্ষক।

নির্যাতিত শিক্ষার্থী মো. আরমান হোসেনের নানী পারভিন আক্তার জানান, ‘আরবি পড়াশোনা করার জন্য আমার নাতি আরমান হোসেনকে মাদরাসায় দিয়েছি। সেখানে যে শিকল পরিয়ে এমন নির্যাতনের ঘটনা ঘটতে পারে তা আমরা জানতাম না। মাদরাসার একজন গোপনে ভিডিও ধারণ করায় আমরা তা দেখে নাতিকে জিজ্ঞাসা করলে গতকাল রাতে জানতে পারি। 

তার পায়ে শিকলের দাগ এখনো আছে। আজ তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছি। এমন অমানবিক ঘটনার জন্য জড়িত শিক্ষকদের বিচার দাবি করছি।

ওসি জানান, অভিযুক্ত শিক্ষক মো. শহীদুল ইসলাম ও সহকারী শিক্ষক মো. আশেক এলাহী তারেককে গ্রেপ্তার করে লক্ষ্মীপুর জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। 

এস এস