ন্যাভিগেশন মেনু

কক্সবাজারে নির্জন সমুদ্র সৈকতে ডলফিনের নৃত্য


দেশি বিদেশি পর্যটকে ভরপুর চিরচেনা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের এমন ফাঁকা দৃশ্য কবে কে দেখেছেন জানি না। কিন্তু সপ্তাহখানেক ধরে পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘ এই সমুদ্র সৈকতে নেমে এসেছে শুনশান নিরবতা। বিচ মার্কেটে নেই কোলাহল। দেখা মিলছেনা বিচ ফটোগ্রাফারদের। কিটকটগুলো অলস পড়ে আছে। কমে গেছে লাইফগার্ডদের ব্যস্ততা।

এই বিশাল সমুদ্র সৈকতের সারাবছরের ব্যস্ততাকে থামিয়ে দিয়েছে মারণঘাতক করোনাভইরাস (কভিড-১৯)। করােনা আতঙ্কের চিরচেনা সেই সৈকতে নেই পর্যটকের কোলাহল। দাপাদাপি করে সমুদ্র স্নান। 

তবে এমন পরিস্থিতিতে সৈকতের স্বচ্ছ পানিতে খেলতে এসেছে একদল ডলফিন। সৈকতে এই নির্জনতার সুযোগে একদম কাছাকাছি এসে খেলায় মত্ত কালো আর রূপালি রংয়ের ডলফিন দেখে মুগ্ধ হয়েছেন সার্ফাররা।

গত এক সপ্তাহে দুইদিন এমন দৃশ্য দেখেছেন ভাগ্যবানেরা। কলাতলী আর সুগন্ধা সৈকতে দেখা গেছে ডলফিনের মনোমুগ্ধকর ডুবসাঁতার আর কসরত।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন,  হঠাৎ কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কলাতলী পয়েন্টে ডলফিনের দেখা মেলে। ১০ থেকে ১২টি ডলফিনের এই দলটি উপকূলের একদম কাছে চলে আসে। এসময় উপস্থিত স্থানীয়রা পাড় থেকেই ডলফিনের খেলা উপভোগ করেন। একপর্যায়ে কলাতলীতে অবস্থানরত সাইমন বিচ রিসোর্টের এমডি মাহবুব রহমান রুহেল কৌতূহলবশত স্থানীয় সার্ফারদের সঙ্গে নিয়ে সাগরে নেমে পড়েন এবং কিছু ভিডিও চিত্র ধারণ করেন।

মাহবুব রহমান রুহেল জানান, ‘ছোটবেলা থেকে বেশিরভাগ সময় কক্সবাজারে কাটিয়েছি। কিন্তু সমুদ্রে এতো কাছে ডলফিন আর কখনও দেখিনি। প্রথমে আমার রিসোর্টের জিএম আমাকে উপকূলের কাছে ডলফিন দেখা যাওয়ার বিষয়টি জানায়। এরপর আমি ছোট কায়াক (ছোট ডিঙ্গি নৌকার মতো) নিয়ে সাগরে নেমে পড়ি। প্রথমে আমি একটি ডলফিন মনে করেছিলাম। পরে দেখি অনেক ডলফিন। তখন আমার পকেটে মোবাইল ছিল। এই মোবাইল দিয়ে আমি ভিডিও করি।’ 

‘আমি যখন সাগরে ডলফিনের কাছাকাছি চলে যাই, তখন ডলফিনের দলটি আমার কাছে এসে ঘোরাঘুরি করছিল। তখন বুঝলাম যে তারা আমাকে একসেপ্ট করে নিয়েছে। সত্যিই বিষয়টি একদম স্বপ্নের মতো মনে হয়েছে আমার।’

সমুদ্র উপকূলীয় এলাকার স্থানীয় জেলারা জানান, সাগরে মাছ ধরতে গেলে গভীর সাগরে মাঝেমধ্যে ঝাঁকে ঝাঁকে ডলফিন দেখা মেলে। বিশেষ করে শীত মৌসুমের শেষের দিকে এসব ডলফিন দলবেধে সাগরে ঘুরে বেড়ায়। তবে সৈকতের কাছাকাছি আসে না।

দেশজুড়ে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ায় জনসমাগম রোধে ১৮ মার্চ থেকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জেলা প্রশাসন। ফলে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত পর্যটক শূন্য। আর এ সুযোগে লোকালয়ের একদম কাছে চলে আসে ডলফিনের দল।

এডিবি/