কবরস্থান এ যাওয়া শুধু ধর্মীয় দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণই না এটা সোয়াবের কাজ ও। নিয়মিত কবর জিয়াতোড়ে যাওয়া একজন মুমিনের একটি ভালো গুন্ ও বটে। অন্তত সপ্তাহে একদিন কবর জিয়ারত করতে গেলে নিজের মরণের কথাও বার বার স্বরণ হবে এবং পাপ থেকে দূরে থাকবে এবং অন্তর নরম হয়ে যাবে।
এর ফলে নিজের মধ্যে উপলব্ধি আসবে যে এই দুনিয়ার জীবন ক্ষণস্থায়ী, আখিরাত বা পরোকালই আমাদের আসল ঠিকানা। মিছে দুনিয়ার পিছে অযথা সময় নষ্ট না করে পাপ কাজ পরিত্যাগ করে পুণ্যের কাজের দিকে মন ঝুকে যাবে।
তাই আমাদের সকল মুসলিমকেই অন্তত সপ্তাহে একবার তা নাহলে মাসে একবার হলেও কবরস্থানে গিয়ে কবর জিয়ারত করা উচিত। আর কবর জিয়ারত করতে গেলেই আপানর জানতে হবে কবর জিয়ারতের দোয়া। এই পোস্টে আমরা কবর জিয়ারতে দোয়া এবং নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। আশা করি আপনি উপকৃত হবেন এবং নিজে পড়ার পর অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনার কবরবাসীর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় এই দোয়া পাঠ করেন—
السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ يَا أَهْلَ الْقُبُورِ يَغْفِرُ اللَّهُ لَنَا وَلَكُمْ أَنْتُمْ سَلَفُنَا وَنَحْنُ بِالأَثَرِ
উচ্চারণ : আসসালামু আলাইকুম ইয়া আহলাল কুবুর; ইয়াগফিরুল্লাহু লানা ওয়ালাকুম, আনতুম সালাফুনা ওয়া নাহনু বিল আ-সার।
অর্থ : হে কবরবাসী! তোমাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। আল্লাহ আমাদের ও তোমাদের ক্ষমা করুন, তোমরা আমাদের আগে কবরে গিয়েছ এবং আমরা পরে আসছি। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১০৫৩)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, একবার রাসুল (সা.) একটি কবর জিয়ারতে গিয়ে বলেন—
السَّلامُ عَلَيْكُمْ دَارَ قَوْمٍ مُؤمِنينَ وإِنَّا إِنْ شَاءَ اللَّهُ بِكُمْ لاحِقُونَ
উচ্চারণ : আসসালামু আলাইকুম দারা ক্বাওমিম মুমিনিন ওয়া ইন্না ইনশাআল্লাহু বিকুম লা-হিকুন।
অর্থ : মুমিন এই ঘরবাসীদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। ইনশাআল্লাহ আমরা আপনাদের সঙ্গে মিলিত হবো। (সহিহ মুসলিম : ২৪৯)
প্রথমেই কবরস্থানে যাওয়ার পর কবর জিয়ারতের দোয়া পড়বেন। এরপর কবরবাসীর উদ্দ্যশ্যে সওয়াবের নিয়তে দরুদ শরিফ পথ করবেন। সাথে অন্য কিছু সুরা মিলিয়ে পড়বেন। এরপর মৃতের জন্য বা কবরবাসীর জন্য মাগফিরাতের জন্য দোয়া করবেন।
হাদিসে কবর জিয়ারতের জন্য বেশ কিছু সুরার ফজিলতে বর্ণনা দেওয়া আছে । পাশাপাশি দরুদ শরিফের ফজিলতের কথাও আছে । তাই দরুদ শরিফ, সুরা ফাতিহা, সুরা ইখলাস, আয়াতুল কুরসি ও অন্য যেসব সুরা সহজ মনে হয়— সেগুলো পড়ে সওয়াব উপহার দেবেন।
কবর সামনে রেখে দুই হাত তুলে দোয়া করা উচিত নয়। তাই কবরকে পেছনে রেখে কিংবা কবরের দিকে পিঠ দিয়ে এরপর কিবলামুখী হয়ে দোয়া করা চাই। আবার কেউ চাইলে হাত না তুলে মনে মনেও দোয়া করতে পারেন। (ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি খণ্ড ৫, পৃষ্ঠা ৩৫০, কিতাবুল কারাহিয়্যা)
আশা করি এখন আপনি কবর জিয়ারতের দোয়া এবং নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত একটা ধারণা লাভ করেছেন। আল্লাহ আমাদের সকলকে দুনিয়া নেক আমল করার তৌফিক দেন করুক। এবং মৃত্যুর পর আমাদের ওয়ারিশ ও বংশদরদের দ্বারা কবর জিয়ারত করে মৃত্যুর পর আমাদের আমোল নামায় সোয়াব পাঠানোর তৌফিক দেন করুক। আমিন