ন্যাভিগেশন মেনু

করোনাক্রান্ত রোগীদের যে খাবারে মানা


করোনা যেন একটা রাজকীয় রোগ।। তার ধরনই আলাদা। তার নানা উপসর্গ। আমরা জানি করোনা হলেই থাকবে গলা ব্যথা ও জ্বর। অথচ  গলাব্যথা নেই। নেইও জ্বর। তবে রোগী করোনা পজিটিভ। ক্রমশই বাড়ছে এমন উপসর্গহীন করোনা রোগীর সংখ্যা। কম উপসর্গ বা উপসর্গ নেই এমন করোনা রোগীদের বাড়িতে রেখেই চিকিৎসার কথা জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের স্বাস্থ্যদপ্তর।

হোম আইসোলেশনে কোন খাবার খেলে দ্রুত সেরে ওঠা সম্ভব? কোন খাবার বাদ দিতে হবে রোজকার খাদ্যতালিকা থেকে? জানালেন ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট এবং ডায়েটিশিয়ান ডা. অরিজিৎ দে।

মেপে খেতে হবে খাবার:

নুন দৈনিক মাত্র ৫ গ্রাম। এর বেশি নয়। ডা. দে জানিয়েছেন, নুনে প্রচুর পরিমাণ সোডিয়াম রয়েছে। তা রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। শুরু হয় হৃদরোগের সমস্যা। এই সময় এমনিই রক্তে অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমতে থাকে। উচ্চ রক্তচাপ বিপদ ডেকে আনতে পারে।

চিনি ভুলে যান রোজকার খাবার থেকে। মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করলে খেজুর কিংবা টাটকা মরশুমি ফল খান। অতিরিক্ত চিনি ইনসুলিন হরমোনের কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয়। শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা কমে গেলে ভাইরাস ভয়াল আকার নেবে।

বারবার নয় চা-পান/বাজারি প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট: অনেকে বারবার চা খাচ্ছেন। অবিলম্বে বন্ধ করুন। বেশি চা খেলে শরীরে ডিহাইড্রেশন হয়। দিনে দু’বারের বেশি চা খাবেন না। দিনে বেশি চা জাতীয় পানীয় খেতে ইচ্ছে করলে গ্রিন টি খান।

অতিরিক্ত ওজন কমাতে এবং হৃদযন্ত্রের কাজ ঠিক রাখতে গ্রিন টি মোক্ষম অস্ত্র। বিজ্ঞাপন দেখে ভুলেও কোনওরকম প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট খাবেন না।

ভুলেও নয় যে কাজ:

কোনওভাবেই বাসি অথবা ঠান্ডা খাবার খাবেন না। খাবার গ্রহণ করার আগে অবশ্যই তা ফুটিয়ে নিন। ঠান্ডা খাবারে যদিও বা জীবাণু জন্মায় ফুটিয়ে নিলে তা শেষ হয়ে যাবে।

এই ক’টা দিন ফ্রিজের খাবার ভুলে যান। শরীরের তাপমাত্রার সঙ্গে ফ্রিজের তাপমাত্রার পার্থক্য অনেক। দু’ধরনের তাপমাত্রা শরীরে

ভাইরাস-ব্যাকটিরিয়ার বংশবৃদ্ধিতে সাহায্য করে। কোনও কায়দার রান্না নয়। আধসিদ্ধ খাবার বাদ দিয়ে পুরোপুরি রান্না করা খাবার খান।

আদা-রসুন-পিঁয়াজ-হলুদ: এই চার অস্ত্র ভাইরাসের যম। করোনা চিকিৎসায় এবং ভাইরাস ঠেকাতেও এদের জুড়ি মেলা ভার। পিঁয়াজে থাকে ভিটামিন সি-সালফার, জিঙ্ক, সেলেনিয়াম।

রসুনের ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম, সালফার আর আদার অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান ভাইরাস বধের মূল অস্ত্র। আদা, রসুন, পিঁয়াজ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়।

হোম আইসোলেশনে রোজকার খাবারে যোগ করুন এই তিনটি জিনিস। ডা. অরিজিৎ দের পরামর্শ, যাঁরা পিঁয়াজ-রসুন খান না তাঁরা সকালে খালি পেটে অবশ্যই কাঁচা হলুদ খাবেন। ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে কাঁচা হলুদ অব্যর্থ।

প্রোবায়োটিক অবশ্যই:

দুধ রাখুন রোজকার খাদ্যতালিকায়। যাঁরা দুধ খেতে চান না, তাঁরা দই অবশ্যই খাবেন। দই-দুধ অথবা ছাঁচ প্রোবায়োটিক জাতীয় খাবার। এমন খাবার যত বেশি খাবেন, অন্ত্রে পৌঁছবে উপকারী ব্যাকটিরিয়া। এই ব্যাকটিরিয়াগুলো ক্ষতিকর ভাইরাস বা ব্যাকটিরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সহায়ক হবে। দ্রুত সারবে করোনা সংক্রমণ।

বেশি পিএইচ-এ করোনা জব্দ:

ডায়েটিশিয়ান ডা. দে জানিয়েছেন, করোনা ভাইরাসের পিএইচ মাত্রা ৫.৫ থেকে ৮.৫। যাঁর শরীরে পিএইচ মাত্রা কম তাঁর এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ততধিক।

বেশি পিএইচ-যুক্ত খাবার খেলে করোনাকে ঠেকানো সম্ভব। মোসম্বি, পাতিলেবু, পাকা পেঁপে, আমন্ড বাদাম, আনারসে আছে প্রচুর পিএইচ।

অ্যালকোহলে মৃত্যু:

বাড়িতেই তো রয়েছি। অ্যালকোহল খেলে ক্ষতি কী? এমন চিন্তা দূরে সরান। ভাইরাস শরীরের নানা অঙ্গকে আঘাত করেছে। তা ঠিক রাখতে যে সমস্ত ওষুধ খাচ্ছেন অ্যালকোহল সেগুলোকে কাজই করতে দেবে না।

নুন-গরম জলের বিকল্প নেই:

বারবার স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোবেন। বাড়িতে থাকলে সাবানজল দিয়েই চল্লিশ সেকেন্ড ধরে হাত পরিষ্কার করুন। এই সাবান/স্যানিটাইজার ত্বকের কোভিড ভাইরাসের প্রোটিন আস্তরণকে ভেঙে দেয়।

কিন্তু গলা? সেখানেই তো ভাইরাস থাকে ৭২ ঘণ্টা। নুন-গরম জল শ্বাসনালির ভাইরাসের প্রোটিন ভেঙে দেবে। প্রতিদিন চারবার করে গার্গল করুন।

এস এস