ন্যাভিগেশন মেনু

করোনার চেয়ে মৃত্যু বেশি অন্য রোগে


করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন যত মানুষেরর মৃত্যু হচ্ছে, তার চেয়ে বেশি মৃত্যু হচ্ছে অন্য রোগে। চিকিৎসকরা বলছেন, নভেল করোনাভাইরাসের চেয়ে বড় ‘ভাইরাস’ হলো মানুষের মধ্যে করোনা নিয়ে আতঙ্ক। তাই করোনা নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে বরং সচেতনতার ওপর জোর দিতে বলছেন চিকিৎসকরা। করোনা মোকাবেলায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বার বার পরামর্শ দিচ্ছেন জনগনকে।

ইন্টারনেটে পাওয়া এক স্বাস্থ্য পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বে করোনাভাইরাসে যে সংখ্যক মৃত্যু হচ্ছে এর চেয়েও অনেক বেশি মৃত্যু হচ্ছে অন্যান্য রোগে। 

এক হিসাবে দেখা গেছে, গত তিন মাসে বিশ্বে প্রায় অর্ধকোটি মানুষ মারা গেছে ক্যান্সার, সর্দি-কাশি, ম্যালেরিয়া, এইডস, ধূমপান, মদ্যপান ইত্যাদি কারণে।

গত তিন মাসে করোনাভাইরাসে বিশ্বে মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ১৪ হাজার ৬৮৭ জনের। একই সময়ে সাধারণ ঠাণ্ডায় (কমন কোল্ড) মৃতের সংখ্যা ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৬০২, ম্যালেরিয়ায় ৩ লাখ ৪০ হাজার ৫৮৪। আর শুধু ক্যান্সারেই এই তিন মাসে মারা গেছেন ১১ লাখ ৬৭ হাজারের বেশি মানুষ।

এছাড়াও গত তিন মাসে বিশ্বে আত্মহত্যা করেছে ৩ লাখ ৫৩ হাজার ৬৯৬ জন। ওই সময়ে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৪৭৯ জনের, এইচআইভিতে ২ লাখ ৪০ হাজার ৯৫০ জনের, অ্যালকোহল পানে ৫ লাখ ৫৮ হাজার ৪৭১ জনের, ধূমপানে ৮ লাখ ১৬ হাজার ৪৯৮ জনের ও ক্যান্সারে ১১ লাখ ৬৭ হাজার ৭১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বিশ্বে এখন পর্যন্ত ৫৯ লাখ ২০ হাজার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে বিদেশে আক্রান্ত হয়েছে ৫৮ লাখ ৭৪ হাজার ৭৫৬ জন। এর অর্থ হলো সম্প্রতি বিদেশ সফর করে না থাকলে উদ্বেগ ৯৫ শতাংশ কমা উচিত।

আর যদি কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েই যায় তাহলেও তার আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। করোনা সংক্রমণের ৮১ শতাংশ ঘটনাই মৃদু, ১৪ শতাংশ মাঝারি এবং মাত্র ৫ শতাংশ জটিল হয়। এর অর্থ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও রোগীর সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

অনেকে বলে থাকেন, করোনা সোয়াইন ফ্লু ও সার্সের চেয়েও ভয়াবহ। কিন্তু পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে সার্সে মৃত্যুর হার ছিল ১০ শতাংশ, সোয়াইন ফ্লুতে ২৮ শতাংশ। অন্যদিকে করোনাভাইরাসে ২ শতাংশ। করোনাভাইরাসে মৃত্যু হওয়া ব্যক্তিদের বয়স বিবেচনায় নিলে দেখা যায়, ৫৫ বছরের কম বয়সীদের মৃত্যু হার মাত্র ০.৪ শতাংশ।

পরিসংখ্যান বলছে, গত ১ মে বিশ্বে করোনাভাইরাসে ছয় হাজার ৪০৬ জনের মৃত্যু হয়। ওই একই দিনে ক্যান্সারে ২৬ হাজার ২৮৩ জন, হৃদেরাগে ২৪ হাজার ৬৪১ জন, ডায়াবেটিসে ৪ হাজার ৩০০ জন মারা গেছে। ভাইরাসের চেয়ে ২৮ গুণ বেশি মৃত্যু হয়েছে আত্মহত্যায়। মশার কারণে প্রতিদিন বিশ্বে ২ হাজার ৭৪০ জনের মৃত্যু হয়। প্রতিদিন মানুষের হাতে ১ হাজার ৩০০ মানুষ নিহত হয়। সাপের কামড়ে প্রতিদিন মারা যায় ১৩৭ জন। শার্কের আঘাতে প্রতিবছর বিশ্বে অন্তত দু'জন নিহত হয়।

তাই করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক নয়, বরং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে দৈনন্দিন করণীয়গুলো করা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা উচিত।

সিবি/ এডিবি