বৈশ্বিক করোনাভাইরাসে জেরবার প্রতিটি দেশ।এর থেকে রক্ষা পেতে চলছে নিরন্তর লড়াই।করোনা চিকিৎসায় বেশ কার্যকর অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগ হিসেবে ‘রেমডেসিভির’ নাম উঠে আসার পরেই এর তৈরির অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
বলা হচ্ছে, ওষুধটি করোনাভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট শ্বাসকষ্টের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। রেমডেসিভির বেশ কয়েকটি দেশে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের মধ্য থেকে করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য চিকিৎসা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
আর তাই পিছিয়ে নেই বাংলাদেশ বাংলাদেশ। কেননা এরমধ্যেই মারা গিয়েছেন ১৮২ জন। আর আক্রান্ত ১০ হাজারের উপরে।
করোনা চিকিৎসায় গুরুত্ব দিয়ে দেশের খ্যাতনামা ছয় ওষুধ কোম্পানিকে রেমডেসিভির উৎপাদনের অনুমোদন দিয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর। অনুমোদন পেয়ে কাজও শুরু করেছে কোম্পানিগুলো।
অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন সংবাদমাধ্যমকে জানান, রবিবার ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান দেশের বর্তমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনা করে এ অনুমোদন দেন।
এবার তাই ৬ কোম্পানি উৎপাদনে গেল- বেক্সিমকো, বিকন, এসকেএফ, ইনসেপ্টা, স্কয়ার ও হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস। নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনের এক সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং মারাত্মক লক্ষণযুক্ত ৫৩ জন রোগীর ক্ষেত্রে রেমডেসিভির শতকরা ৭০ ভাগ কার্যকর।
কিন্তু এক-চতুর্থাংশের ক্ষেত্রে কিডনি ও লিভারের জটিলতাসহ নানা ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। আমেরিকান কোম্পানির ওষুধ রেমডেসিভির মূলত সংক্রামক রোগ প্রতিরোধীই। এটি ইবোলা ভাইরাসের চিকিৎসার জন্য তৈরি করা হয়েছিল।
রেমডেসিভির হলো একটি অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগ। ভাইরাসের বংশবৃদ্ধি (Replication) কমায় এ ওষুধ। এটি একমাত্র আমেরিকার জিলিয়াড বায়োটেকনোলজি কোম্পানি তৈরি করে। রেমডেসিভিরের প্রধান কাজ হলো মানব কোষে ঢোকার পর ভাইরাস যে বংশবৃদ্ধি করে তা বন্ধ করে দেওয়া ও বংশবৃদ্ধির গতি কমিয়ে দেওয়া।
করোনাভাইরাসের বংশবৃদ্ধিতে ভাইরাল আরএনএ ডিপেনডেন্ট আরএনএ পলিমারেজ এনজাইম প্রয়োজন। রেমডেসিভির এই এনজাইমকে ব্লক করে। ফলে ভাইরাসের বিস্তার কম হয়। বংশবৃদ্ধি কমে যাওয়ায় আক্রান্ত রোগীর দেহে ভাইরাস লোড অনেক কমে যায়।
এতে তাদের হাসপাতালে অপেক্ষাকৃত কম দিন অবস্থান করতে হয়। মৃত্যুর হার ১১ থেকে ৮ শতাংশে নেমে আসে। চিকিৎসকরা জানান, করোনাভাইরাস মানুষের ফুসফুসের কোষে ঢোকার পর কোষের বংশবৃদ্ধির উপাদানগুলো অকার্যকর করে বংশবৃদ্ধি করতে থাকে।
একটা ভাইরাস মুহূর্তেই লাখো ভাইরাসের জন্ম দেয়। এক সময় এই ছোট ছোট ভাইরাস কোষকে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে বের হয় এবং পাশের নতুন একটি কোষকে আক্রমণ করে, তারপর আবার বংশবৃদ্ধি করতে থাকে।
আর এভাবেই করোনাভাইরাস ফুসফুসকে ধ্বংস করে মাত্র কয়েকদিনে। আর তাই রোগী শ্বাস নিতে পারে না।
এস এস