ন্যাভিগেশন মেনু

করোনা: অনলাইনে চলছে বশেফমুবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের পাঠদান


নভেল করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) কারণে সাধারণ ছুটির প্রভাব যাতে ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাজীবনে না পড়ে সেজন্য অনলাইনে শিক্ষাকার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেফমুবিপ্রবি)।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদের নির্দেশে বশেফমুবিপ্রবির ছয়টি বিভাগের শিক্ষকগণ শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনলাইনে শিক্ষাকার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

ছয়টি বিভাগ হচ্ছে- কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, সমাজকর্ম বিভাগ, গণিত বিভাগ এবং ফিশারিজ বিভাগ।

অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘জুম’ এর মাধ্যমে গত সপ্তাহ থেকে রুটিন অনুসারে নিজ নিজ কোর্সের ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষকগণ। প্রতিটি ক্লাসেই শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার ৫০ থেকে ৬৫ শতাংশ।

শিক্ষকবৃন্দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ও তৃতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের ৭০-৮০ শতাংশ ক্লাস ছুটির আগেই সম্পন্ন হয়ে যায়। অনেক বিভাগে শেষ হয়েছে ল্যাবসহ ব্যবহারিক ক্লাস। এ অবস্থায় বাকি ২০-৩০ শতাংশ ক্লাসও অনলাইনে ঈদের আগেই সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।

তারা বলছেন, কভিড-১৯ এর কারণে ছুটি শুরুর প্রথমদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন গ্রুপে শিক্ষার্থীদের কোর্স ম্যাটেরিয়াল দিয়ে দেওয়া হয়। এর মাঝে অনেকে অনলাইনেই তাদের অ্যাসাইনমেন্টও জমা দিয়েছেন। তবে গতসপ্তাহ থেকে অনলাইনে সরাসরি ক্লাস শুরু হয়েছে। 

ফলে এই ছুটিতেই প্রতিটি কোর্সের শতভাগ ক্লাস সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর শিক্ষার্থীরা শুধু সেমিস্টার পরীক্ষায় অংশ নেবে। এতে করোনার ছুটির প্রভাব তাদের শিক্ষাজীবনে পড়বে না।

এ বিষয়ে বশেফমুবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, কভিড-১৯ এর অচলাবস্থার মাঝেও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসগুলো অনলাইনে নিয়মিতভাবে পরিচালানা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে অনলাইন শিক্ষা প্রদানের জন্য যে প্রযুক্তি প্রয়োজন আমাদের অনুষদের ডিন, বিভাগের চেয়ারম্যান ও শিক্ষকেরা তা ব্যবহারে দক্ষতা দেখিয়েছেন। আমাদের লক্ষ্য সময় মতো সেমিস্টার শেষ করা। দীর্ঘ ছুটির কারণে শিক্ষার্থীরা যাতে কোনো ক্ষতির সম্মুখীন না হয় সেজন্যেই আমরা এ উদ্যোগ নিয়েছি।

‘এক সপ্তাহ থেকে পুরোদমে অনলাইনে প্রতিদিনই রুটিন অনুযায়ি ক্লাসে শিক্ষকরা পাঠদান করছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিক্ষার্থীরাও অংশ নিচ্ছে। তবে স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট সুবিধা না থাকার কথা জানিয়েছে অনেক শিক্ষার্থী। যারা ক্লাসে অংশ নিতে পারছে না তারা পরবর্তীতে ভিডিও দেখে লেকচার শুনে নিতে পারবে।’

তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস এ অবস্থা বেশিদিন থাকবে না। তবে এই মহামারি চলাকালে শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। একই সঙ্গে নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করে কারিকুলাম অনুযায়ী পড়াশোনা করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, দুর‌্যোগের এই মুহূর্তে সঠিক কর্মসূচি গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়নে উপাচার্য যথাযথ নির্দেশনা এবং উৎসাহ তাদের অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে।

উল্লেখ্য, গত ১৭ মার্চ থেকে অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ও ১৬ মে পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে। 

এদিকে সম্প্রতি অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে কিনা তা জানানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণের প্রতি আহ্বান জানান মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। 

একই সঙ্গে যেসব বিশ্ববিদ্যালয় এই বন্ধের সময় অনলাইনে ক্লাস পরিচালনা করছে, সেখানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে অনলাইনে ক্লাসে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হচ্ছেন কিনা,  ইন্টারনেট সংযোগ ও খরচের বিষয়েও জানাতে বলেন তিনি। 

এডিবি/