ন্যাভিগেশন মেনু

হামলার জন্য চরম মূল্য দিতে হবে: বাইডেন


আফগানিস্তানের কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে হামলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এই হামলার জন্য দায়ীদের চরম মূল্য দিতে হবে।

দেশটির প্রেসিডেন্ট বলেন, 'আমরা ক্ষমা করবো না। আমরা ভুলবো না। আমরা তোমাদের খুঁজে বের করবো এবং এজন্য তোমাদের চরম মূল্য দিতে হবে।'

বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) এক বক্তব্যে জো বাইডেন বলেন, আফগানিস্তানে জিহাদী হামলা সত্ত্বেও কাবুল থেকে লোকজনকে মার্কিন বিমানে করে সরিয়ে নেওয়ার যে অভিযান চলছে তা সম্পন্ন করা হবে।

বাইডেন এই অভিযান সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, 'আমরা সন্ত্রাসীদের কারণে পিছ পা হবো না।' 

গত ১৫ অগাস্ট কাবুল তালেবানের দখলে চলে যাওয়ার পর সেখান থেকে এখন পর্যন্ত এক লাখেরও বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবারের ওই হামলায় এখন পর্যন্ত ১১৩ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৩ জন মার্কিন সেনা সদস্য রয়েছেন।

মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ডের প্রধান জেনারেল ফ্রাঙ্ক ম্যাককেঞ্জি জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে ১১ জন মেরিন সেনা এবং একজন নৌবাহিনীর চিকিৎসক ছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্র তাদের সেনাদের ৩১ অগাস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহারের সময়সীমা ঠিক করেছে, তবে অনেক আফগান ওই সময়ের মধ্যেই দেশ ছাড়তে বিমানবন্দরে ছুটে আসছেন।

বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় ৬টায় প্রথম হামলাটি হয়েছে অ্যাবি গেট লক্ষ্য করে। এই গেটে যেখানে মার্কিন এবং ব্রিটিশ বাহিনী স্থানীয় লোকজনদের বিমানবন্দরে প্রবেশের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছিলেন। পরে সেখানে গোলাগুলি শুরু হয়।

কয়েক মিনিট পরে একটি হোটেলে দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি ঘটে, যেখানে ব্রিটিশ কর্মকর্তারা ব্রিটেনে ভ্রমণ প্রত্যাশী আফগানদের বিভিন্ন দাপ্তরিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছিলেন।

আইসিস-কে, অর্থাৎ ইসলামিক স্টেটের আঞ্চলিক একটি শাখা এমন আত্মঘাতী হামলা চালাতে পারে বলে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তারা এর আগে সতর্ক করেছিলেন।

এই সতর্কতা সত্ত্বেও কোন একটি ফ্লাইটে আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ার ব্যাপারে অনুমোদন পাওয়ার আশায় ওই এলাকায় জড়ো হয়েছিলেন অসংখ্য মানুষ।

বৃহস্পতিবারের হামলার দাবি করেছে আফগানিস্তানে আইএসআইএল (আইএসআইএস), খোরাসান প্রদেশের ইসলামিক স্টেট, আইএসকেপি (আইএসআইএস-কে)। 

তারা বলেছে, তার আত্মঘাতী হামলা 'আমেরিকান সেনাবাহিনীকে সাহায্যকারী দোভাষীদের জন্য একটি সংকেত।' 

২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির পর আফগানিস্তানে এই প্রথম মার্কিন সেনা হতাহতের ঘটনা ঘটলো।

বর্তমানে কাবুল বিমানবন্দরের মাটিতে ৫ হাজার ৮০০ মার্কিন সেনা এবং এক হাজার ব্রিটিশ সেনা রয়েছেন।

এখন পর্যন্ত আফগানিস্তান থেকে এক লাখ চার হাজার বেসামরিক নাগরিককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে ৬৬ হাজার জনকে যুক্তরাষ্ট্রে এবং ৩৭ হাজার জনকে বিভিন্ন মিত্র এবং অংশীদার দেশে পাঠানো হয়েছে।

বিবিসি জানায়, এখনও প্রায় ৫ হাজার মানুষ বিমানবন্দরে এখনও অপেক্ষা করছেন এবং আরও অনেকে তল্লাশি চৌকি পার হওয়ার চেষ্টা করছেন।

কানাডা, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস এবং ডেনমার্কসহ বেশ কয়েকটি দেশ ইতিমধ্যে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে।

তুরস্ক ঘোষণা করেছে যে তারা তাদের সৈন্যদের সরিয়ে নেবে - তারা ছয় বছর ধরে বিমানবন্দরে নিরাপত্তা দিয়ে আসছিল।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বৃহস্পতিবার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে একটি সভায় বলেন, যুক্তরাজ্য তাদের লোকজন সরিয়ে নেওয়ার ফ্লাইট চালু রাখবে।

এডিবি/