এবার ভারতের উপদ্রুত উপত্যকা জম্মু-কাশ্মীরে লাইন অব কন্ট্রোলের নিরাপত্তায় নারীশক্তি।
অযোধ্যায় রামমন্দিরের শিলান্যাস। জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপের প্রথম বর্ষপূর্তি। দেশজুড়ে করোনা প্রতিরোধের লড়াই। এতকিছুর মাঝে সবার অলক্ষ্যে আরও এক ইতিহাস তৈরি করল ভারতীয় সেনা।
এই প্রথম জম্মু-কাশ্মীরের লাইন অফ কন্ট্রোলে নিরাপত্তার দায়িত্বে এলেন দেশের মহীয়সীরা।
জলপাই উর্দি। হাতে অ্যাসল্ট রাইফেল। ভারি বুটের শব্দ। ভূস্বর্গে পা দিলে প্রকৃতির মোহময়ী রূপের সঙ্গে চোখে আসবে এগুলিও। যাকে বলে চেনা ছবি।
তবে একটু ভাল করে লক্ষ্য করলে বোঝা যাবে যে, সেই ‘চেনা ছবি’তেও রয়েছে এক অচেনা টুইস্ট! সেনার রুক্ষ উর্দির আড়ালে রয়েছে কোনও এক বোন, মায়ের কোমল মুখ।
সেই কোমল মুখে দেখা মিলবে একজোড়া বজ্রকঠিন চোখেরও। ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে পুরুষ সহযোদ্ধাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশমাতৃকার নিরাপত্তার দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন ভারতীয় সেনার অসম রাইফেলসের ‘রাইফেল উইমেন’রা।
একে তো উপত্যকার মতো সংবেদনশীল এলাকা। তাও আবার যে সে জায়গা নয়। এক্কেবারে পাক অধিকৃত কাশ্মীর লাগোয়া সাধনা পাস। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে যা দশ হাজার ফুট উঁচুতে।
এই এলাকার তিথওয়াল ও তংধরের মধ্যে গোটা চল্লিশেক গ্রাম। বিভিন্ন কাজে বহু গাড়ি এপার-ওপার করে। থাকেন প্রচুর স্থানীয় মহিলা। যাঁদের সেভাবে তল্লাশি করতে পারেন না পুরুষ জওয়ানরা।
এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে জাল নোট, অস্ত্র, মাদক থেকে শুরু করে বোরখার আড়ালে চলে আসে সন্ত্রাসবাদীরাও। এই সমস্যা মেটাতেই মহিলা জওয়ানদের পোস্টিং দেওয়া হয়েছে সাধনা পাসে।
আপাতত এক মহিলা অফিসারের নেতৃত্বে ছ’জন মহিলা জওয়ানকে মোতায়েন করা হয়েছে এই এলাকায়। যাঁদের প্রধান কাজ হবে মহিলাদের তল্লাশি করা। পাশাপাশি অস্ত্র, জাল নোটের চোরাচালানেও কড়া নজর রাখার দায়িত্ব পেয়েছেন তাঁরা।
অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই নিজেদের গুণে স্থানীয়দের সঙ্গে মিশে গিয়েছেন ‘রাইফেল উইমেন’রা। এলাকার আবালবৃদ্ধবনিতার সঙ্গে মিশছেন মা, বোন, মেয়ের রূপে নিজেদের পরিবারের মতো করেই।
বেশকিছু ছবি ও ভিডিও ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে। যেখানে তাঁদের ডিউটি করার সঙ্গেই দেখা গিয়েছে স্থানীয়দের সঙ্গে হাসিখুশিভাবে কথা বলতে। পুরুষ জওয়ানদের রাখি বেঁধে দিতে। ‘মায়ের জাত’কে পেয়ে অনেকটাই সহজ হয়েছেন স্থানীয়রা।
এস এস