ন্যাভিগেশন মেনু

কুমিল্লা ইপিজেডের বিষাক্ত বর্জ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে খালসহ ফসলের মাঠ


কুমিল্লা ইপিজেডের বর্জ্যের বিষাক্ত পানি খাল, বিল, ফসলের মাঠসহ জলাশয়গুলোতে ছড়িয়ে পড়ায় চাষাবাদ ব্যাহত ছাড়াও মাছসহ অন্যান্য জলজপ্রাণী শূন্য হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি বিষাক্ত এই বর্জ্যমিশ্রিত পানি ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় গৃহস্থালী কাজ ছাড়াও সেচ সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন বহু কৃষক।

এ অবস্থায় নগরীর দক্ষিণের বিভিন্ন স্থানসহ সদর দক্ষিণ, লালমাই, লাকসাম উপজেলার গুইঙ্গাজুড়ি খাল সংলগ্ন পাড়ের কমপক্ষে ৩০টি গ্রামের বাসিন্দাদের।

কুমিল্লা রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা (ইপিজেড) দেশের অর্থনীতির পাশাপাশি কুমিল্লার শ্রমজীবী মানুষের কর্মসংস্থান লাঘবে যাত্রা করলেও এর বিষাক্ত বর্জ্য পানিতে মিশে অসংখ্য মানুষের দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।

নগরীর পুরাতন বিমান বন্দর এলাকায় ১৯৯৯ সালে  প্রায় ১৬৭ একর ভূমির উপর কুমিল্লা ইপিজেড প্রতিষ্ঠা হয়। বর্তমানে এখানে দেশি-বিদেশিসহ যৌথ মালিকানাধীন রয়েছে ৪৭টি কারখানা। প্রতিদিন এই কারখানাগুলো থেকে কমপক্ষে ১৫ হাজার ঘনমিটার বর্জ্য রাসায়নিক ও জৈবিক পদ্ধতিতে পরিশোধন করার লক্ষ্য নিয়ে ২০১৪ সালে সাড়ে ৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার প্রতিষ্ঠা করা হয়।

তবে, ইপিজেডের দক্ষিণ অংশের সাধারন মানুষের বক্তব্য - কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার নির্মাণের পরও ইপিজেডের কারখানাগুলোর তরল বর্জ্য প্রতিদিনই ড্রেনে ফেলায় সেগুলো ইপিজেডের বাইরের খাল, জলাশয়, ফসলের জমিসহ অন্যান্য জলাশয়ে ছড়িয়ে পড়ছে। এতে একদিকে ফসলের জমিতে চাষাবাদ কমছে, পুকুর, জলাশয় বা খালে মাছসহ জলজ প্রাণীগুলো মরে যাচ্ছে।

এছাড়া খাল বা জলাশয়ের পানি ব্যবহারের অনুপযোগীসহ তীব্র গোখাদ্য সংকটেও পড়েছে কৃষকরা। এ ছাড়াও বিষাক্ত বর্জ্য পানির দুর্গন্ধে বাসা-বাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী-শিক্ষকসহ চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারন মানুষের।

বিজয়পুর গ্রামের মমতাজ, আব্দুর রশিদ, দত্তপুর গ্রামের টিটু, বাগমারা গ্রামের নুরু, নজরুল প্রমুখ জানান, ‘যতোই দিন যাচ্ছে গুইঙ্গাজুড়ি খালের পানি ততোই বিষাক্ত হচ্ছে। তাই এখন আর কেউ খালের পানি ব্যবহার করছেনা।’

তারা আরও বলেন, ‘বারপাড়া ইউনিয়নের বিজয়পুর সংলগ্ন হরষপুর জলায় আগে শুস্ক মৌসুমের শুরুতে হাজার হাজার মানুষ পলো, ছিটা জাল, মই জাল, পাই জাল, ফেলুন জালসহ বিভিন্ন দেশিয় পদ্ধতিতে মাছ শিকার করলেও সাম্প্রতিক সময়ে ইপিজেডের বিষাক্ত বর্জ্যে খাল, জলাশয় মৎস্যশূন্য হয়ে পড়ায় এখন আর সেই উৎসব চোখে পড়ে না।’

তাদের দাবি দ্রুত ইপিজেডের বর্জ্য পরিশোধনে ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে আশপাশের খাল-বিল, জলাশয়সহ ফসলের জমি দুষনমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হউক।

কে ডি এইচ/এমআইআর/এডিবি