ন্যাভিগেশন মেনু

কেরুজ চিনিকলের ২৮ কোটি টাকা মুনাফা


লোকসানের কারণে দেশের ১৫টি চিনিকলের মধ্যে ৬টি চিনিকল বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। নানা প্রতিকুলতার মধ্যেও চুয়াডাঙ্গার দর্শনা কেরুজ চিনিকলটি ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৪০ কোটি টাকা মুনাফা করলেও চিনি উৎপাদন বিভাগে ৭৬ কোটি টাকা লোকশান দিয়েছে। সেই সাথে সরকারকে ৭৩ কোটি টাকা রাজস্ব দেওয়ার পাশাপাশি ২৮ কোটি টাকা নিট মুনাফা অর্জন করেছে। 

আগামীতে চিনিকলটিকে আরও লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তুলতে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

চুয়াডাঙ্গার জেলার একমাত্র ভারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান দর্শনা কেরুজ চিনিকল। ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এ চিনিকলের বয়স আজ ৮৩ বছর। বয়সের ভারে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিকায়নের কাজ শুরু হলে তা চলছে কচ্ছপগতিতে। এ প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত আছে প্রায় ১২ হাজার লোক।

দেশ ভাগের পর ১৯৭২ সালে তৎকালীন সরকার চিনিকলটিকে জাতীয়করণ করে। সেই থেকে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশনের আওতায় পরিচালিত হয়ে আসছে।

এখানে শুধু চিনি উৎপাদনই হয় না চিনির পাশাপাশি অ্যালকোহল, স্পিরিট, জৈব সার উৎপাদন হয়ে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২০-২১ অর্থবছরে ৯৪ কার্যদিবসে ১ লাখ ১১ হাজার ৮৬২ মেট্রিকটন আখ মাড়াই করে চিনি উৎপাদন করেছে ৫ হাজার মেট্রিকটন। যেখানে বন্ধ হওয়া কুষ্টিয়া জগতি চিনিকলের ১৪ হাজার মেট্রিকটন আখ রয়েছে। ফলে চিনি উৎপাদন বিভাগ ও কৃষিখামারসহ মোট লোকসান হয়েছে ৭৬ কোটি ৫ লাখ টাকা।

চিনিকল কর্তপক্ষ জানান, ২০২০-২১ অর্থ বছরে মিলটির চিনি কারখানায় ৭২ কোটি, ৯টি খামারে ৩কোটি ৮৫ লাখ ও পরীক্ষামুলক খামারে ২০ লাখসহ মোট ৭৬ কোটি ৫ লাখ টাকা লোকসান হয়।

পাশাপাশি কেরু ডিস্টিলারি (মদ কারখানা) এ বছর ৫২ লাখ ৪৭ হাজার ৪৭৩ লিটার দেশি মদ, ৪৬ লাখ ৯৬ হাজার লিটার থিনার, ১ লাখ ১৬১ হাজার কেস বিলাতি মদ উৎপাদন ও বিক্রি করে রেকর্ড করেছে।

সরকার গত অর্থবছরে ২৫ কোটি টাকা মুনাফা অর্জনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করে দিলেও তা টপকে গেছে প্রতিষ্ঠানটি। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে  মুনাফা অর্জনের পরিমান ছিলো ১৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা। 

চিনি উৎপাদন বিভাগে লোকশানের কারণ হিসেবে মানহীন আখের জাতকেই দায়ী করেছেন আখচাষীরা। সেই সাথে আখচাষ দীর্ঘমেয়াদি চাষ হওয়ায় অনেকেই এ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এক বছরে জমিতে ৩ থেকে ৪টি সবজিসহ বিভিন্ন চাষাবাদ করার দিকে ঝুকে পড়েছে চাষীরা। বেশি কিছু চাষী জানিয়েছেন, শুধু আখের কারণে না, সীমাহীন অনিয়ম দূর্নীতির কারণেও লোকশানের পাল্লা ভারি হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির।

চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আবু সাঈদ বলেন, 'জেলার অন্যতম অর্থনৈতিক চালিকা শক্তি কেরুজ চিনিকলটি। তাই এলাকার বৃহত্তর স্বার্থে এ প্রতিষ্ঠানকে টিকিয়ে রাখার জন্য চিনিকলের অন্যতম কাঁচামাল আখচাষ বাড়ানো খুবই জরুরি। সেই সাথে দায়িত্বরতদের নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে কাজ করতে হবে। তাহলেই প্রতিষ্ঠানটি ফিরে পাবে তার সোনালী অতীত।'

এনআই/এডিবি/