ন্যাভিগেশন মেনু

ক্ষতি সামলাতে দেশে বিনিয়োগে ঝুঁকছে চিনা কোম্পানিগুলো


অর্থনৈতিক প্রতিবেদক: বৈশ্বিক করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বের একাধিক বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান চিন থেকে তাদের কারখানা গুটিয়ে নিচ্ছে। বিশেষ করে দেশটির উহানে মারণঘাতি করোনার উৎপত্তি হওয়ায় বিদেশি কোম্পানিগুলো চিন সরে যাচ্ছে। এতে করে বড় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে কম্যুনিষ্ট দেশটি।

যে কারণে চিন একাধিক দেশে বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য বাজার খুঁজতে মরিয়া। বাণিজ্যের দিক থেকে বাংলাদেশের মার্কেটটা অনেক বড়। এ কারণে বাংলাদেশের বাজারের দিকে ঝুঁকেছে চিনা কোম্পানিগুলো।

তারা এখন বাংলাদেশকে বিনিয়োগের জন্য আকর্ষণীয় স্থান বলে মনে করছে। সুসম্পর্ক বৃদ্ধির গত চিন বাংলাদেশের পণ্যের ওপর থেকে ৯৭ শতাংশ রাজস্ব রহিত করেছে।

চিনের রাষ্ট্রমালিকানাধীন গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সাইক (সাংহাই অটোমোটিভ ইন্ডাস্ট্রি কো-অপারেশন লি.) মোটর বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চাইছে। একই সঙ্গে দেশটির আরেক কোম্পানি সিটিক কনস্ট্রাকশন কৃষি খাত ও অ্যাকোয়াটিক (জলজ) পণ্যেও বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

প্রতিষ্ঠানগুলো জানিয়েছে, চিনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ নীতির অংশ হিসেবে তাঁরা বাংলাদেশকে বিনিয়োগের জন্য বেছে নিয়েছে। উল্লিখিত শিল্প খাতগুলোয় তারা স্থানীয়দের সঙ্গে যৌথ বিনিয়োগ করবে।

গত ১৭ জুন সিটিক কনস্ট্রাকশনের একজন নির্বাহী বাংলাদেশে এ তিন খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করে বেইজিংয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে চিঠি দেয়। ১৯ জুন চিনা কোম্পানির এ আগ্রহের বিষয়টি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে দূতাবাস থেকে চিঠি পাঠানো হয়।

চিঠিতে গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সাইক মোটর সম্পর্কে বলা হয়েছে, এটি চিনের বৃহত্তম চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের একটি। বিশ্বখ্যাত ফরচুন ম্যাগাজিনের ২০১৯ সালের জরিপে এ অটোমোবাইল কোম্পানিটি বিশ্বের সেরা ব্রান্ডগুলোর মধ্যে ‌র‌্যাংকিংয়ে ৩৯তম স্থান পেয়েছে।

ইউরোপের বিশ্বখ্যাত গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ভক্সওয়াগন ও মার্কিন কোম্পানি জেনারেল মোটরসের সঙ্গেও যৌথ বিনিয়োগ রয়েছে এ কোম্পানিটির।

চিনের এ প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, বাংলাদেশে তারা স্থানীয় কোনো অংশীদার কোম্পানির মাধ্যমে এ দেশে তাদের গাড়ি সংযোজন, বিক্রয় ও বিক্রয়োত্তর সেবা নিশ্চিত করবে।

বাংলাদেশে সংযোজিত গাড়িগুলো অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি চিনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ নীতির মাধ্যমে চারপাশের দেশগুলোয় রপ্তানির পরিকল্পনাও রয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দিন জানান, বাংলাদেশের কৃষি, অ্যাকোয়াটিক ও অটোমোবাইল শিল্পে চাইনিজ কোম্পানির আগ্রহের বিষয়টি সরকার ইতিবাচকভাবে দেখছে।

এরই মধ্যে চাইনিজ কোম্পানির প্রস্তাবটি পর্যালোচনার জন্য বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-বিডার কাছে পাঠানো হয়েছে।তিনি বলেন, প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ ও কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে ব্যয় কমাতে বিশ্বের বড় বড় কোম্পানিগুলো তাদের বিনিয়োগ স্থানান্তরের পরিকল্পনা গ্রহণ করছে।

সস্তা শ্রম, ভৌগোলিক অবস্থান ও ১৬ কোটি মানুষের অভ্যন্তরীণ বাজারের চাহিদার কারণে বিদেশি কোম্পানিগুলো এখন বাংলাদেশকে বিনিয়োগের জন্য আকর্ষণীয় স্থান বলে মনে করছে। বাণিজ্য মন্ত্রক বিডা, বিদেশ মন্ত্রকসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে কাজ করছে।

এস এস