ন্যাভিগেশন মেনু

গান আর কথায় নিউইয়র্কে মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি-বনভোজন


বঙ্গবন্ধুর ডাকে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়া গেরিলাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এবং গানের মধ্যদিয়ে নিউইয়র্কে বসবাসরত মুক্তিযোদ্ধা এবং নতুন প্রজন্মের মুজিবসেনারা প্রবাস প্রজন্মে বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের অবিস্মরণীয় ঘটনাবলি পৌঁছে দেয়ার প্রয়াস চালালেন।

নিউইয়র্কে বসবাসরত তরুণ গীতিকার-সুরকার-কন্ঠশিল্পী শামীম আক্তার শরিফ গানটি পরিবেশন করেন দরাজকন্ঠে। একইসাথে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে চলা বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির সমর্থনে আন্তর্জাতিক জনমত সুসংহত করার সংকল্পও ব্যক্ত করলেন একাত্তরের বীর সেনারা।

সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, মুক্তিযুদ্ধ-৭১ যুক্তরাষ্ট্র শাখার উদ্যোগে বনভোজনের আড়ালে রবিবার (২০ সেপ্টেম্বর) মুক্তিযোদ্ধা-জনতার সম্প্রীতির এ মেলা বসেছিল নিউইয়র্ক সিটির থেকে ৫৮ মাইল দূর বেলমন্ট লেক স্টেট পার্কে।

সকালে আবহাওয়ায় কিছুটা বৈরী হয়েছিল হিমেল হাওয়ায়। তবে দুপুর গড়াতে গ্রীষ্মের উত্তাপে সবকিছু প্রাণোচ্ছল হয়ে উঠে সবুজ এ অরণ্যে। সেই আমেজে সকলে প্রাণের সাথে প্রাণ মিলিয়ে হৃদয় উজার করে একাত্তরের স্মৃতিচারণ এবং বর্তমান বাংলাদেশ নিয়ে মন্তব্য/মতামত প্রকাশ করেন।

পাশাপাশি চলে খাশি, ভেড়ার মাংস, মাসকলাইয়ের ডাল রান্না এবং মাছ ভাজার পালা। চিকেনের বারবিকিউ ছিল শিশু-কিশোর আর তরুণ-তরুণীদের আগ্রহের খাদ্য। করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সবকিছু অনুষ্ঠিত হলেও হৃদয়ের উষ্ণতা আর প্রাণের উচ্ছাসে সকলের মধ্যেই ভিন্ন এক আমেজ পরিলক্ষিত হয়। তা ছিল করোনার ভীতিকে জয় করতে হবে মানসিক দৃঢ়তা দিয়ে।

হোস্ট সংগঠনের প্রেসিডেন্ট মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ আহমেদের নেতৃত্বে চলায় আগুন জ্বালিয়ে রান্না-বান্নায় সহযোগী ছিলেন কমিউনিটি লিডার ও ফোরামের যুব বিষয়ক সম্পাদক ফাহাদ সোলায়মান, নির্বাহী সদস্য শামীম আকতার শরিফ, মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার চুন্নু, মুক্তিযোদ্ধা সানাউল্লাহ, তরুণ সংগঠক এ টি এম মাসুদ প্রমুখ।

বনভোজন কেন্দ্রের সাথেই লেকে কেউ কেউ নৌকা ভ্রমণে যান। আবার কেউ সন্তানের সাথে ফুটবলে মেতে উঠেন। দুপুরের খাবার পরিবেশনে ছিল বৈচিত্র্য। বনে আর ঘরে রান্না করা খাবার সকলে উপভোগ করেন তৃপ্তি সহকারে। করোনার কারণে উপস্থিতির সংখ্যা ৫০ জনের মধ্যে সীমিত রাখার নির্দেশ থাকায় ফোরামের অনেকে পরিবার-নিয়ে আসতে সক্ষম হয়নি।

দিনভর ব্যতিক্রমী এ আয়োজনের বিশেষ অতিথি ছিলেন বীরপ্রতিক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব:) মঞ্জুর আহমেদ। তিনি তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে সকলকে অভিনন্দন জানান এবং করোনা ভীতি কাটিয়ে উঠতে এ ধরনের আয়োজনের গুরুত্ব অপরিসীম বলে মন্তব্য করেন।

সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের অন্যতম যুগ্ম সম্পাদক আলহাজ্ব আব্দুল কাদের মিয়া বলেছেন, ভয়কে জয় করতে হবে মানবিকতার জয়গানে। করোনাকে ধরাশায়ী করতে হবে স্বাস্থ্যবিধি পরিপূর্ণভাবে মেনে চলে।

আসছে ৩ নভেম্বরের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে অভিবাসীদের পরীক্ষিত বন্ধু হিসেবে ডেমক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী যো বাইডেনকে জয়ী করাসহ চলমান নানা ইস্যুতে মতবিনিময় করেন ফোরামের ভাইস প্রেসিডেন্ট আবুল বাশার চুন্নু ও ড. রফিক আহমেদ, সহ-সম্পাদক আশরাব আলী খান লিটন, প্রবাসী কল্যাণ সম্পাদক হাজী জাফরউল্লাহ, কোষাধ্যক্ষ ও বিশ্ববাংলাটোয়েন্টিফোর টিভির চেয়ারম্যান আলিম খান আকাশ, নারী বিষয়ক সম্পাদক সবিতা দাস, সাংস্কৃতিক সম্পাদক উইলি নন্দী, যুব সম্পাদক  ও ডেমক্র্যাটিক পার্টির সংগঠক ফাহাদ সোলায়মান, নির্বাহী সদস্য মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার প্রমুখ।

অতিথির মধ্যে আরও ছিলেন - জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আলহাজ্ব সালেহ শফিক গেন্দা, ফোরামের সদস্য মোস্তফা কামাল পাশা মানিক, নুরুন্নাহার নিশা, মঞ্জুরুন্নেসা, মাহমুদা বাশার, আবুল বাশার ভূইয়া, জহিরুল ইসলাম ইরান প্রমুখ। 

চমৎকার এ আয়োজনে সহযোগিতা করেছেন - ডা. প্রভাত দাস, জেবিবিএর সেক্রেটারি কামরুজ্জামান কামরুল, গোল্ডেন এইজ হোমকেয়ারের পার্থ গুপ্ত এবং আব্দুল কাদের মিয়া ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ কাদের মিয়া প্রমুখ।

নগদ অর্থ পুরষ্কারের ১৫টি লটারির পাশাপাশি অংশগ্রহণকারী নারীদের জন্যে ছিল বিশেষ আয়োজন। নগদ ৩০০ ডলারের সেই পুরষ্কার জিতে নেন মাহমুদা বাশার। এটি স্পন্সর করেছিলেন মঞ্জুরুন্নেসা কাদের। 

সমাপনী বক্তব্যে ফোরামের সভাপতি রাশেদ আহমেদ সকলকে ধন্যবাদ জানান আন্তরিক সহযোগিতার জন্যে।  তিনি একই চেতনায় বছরের অপর কর্মসূচিগুলোতেও সহযোগিতা পাবেন বলে আশা পোষণ করেন।

এমআইআর/এডিবি