ন্যাভিগেশন মেনু

চট্টগ্রামের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যান চলাচলের জন্য প্রস্তুত


চট্টগ্রাম নগরীর ভোগান্তি হ্রাস এবং যানজট থেকে রক্ষায় নির্মাণ করা হয়েছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। প্রয়াত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নামে এ উড়াল সড়ক গত বছরের ১৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৪ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। সিডিএ'র এই প্রকল্প যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স-র‍্যাংকিন।

চট্টগ্রামের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যান চলাচলের জন্য চালু হচ্ছে শীঘ্রই। প্রায় ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এক্সপ্রেসওয়ে এখন দৃশ্যমান। সড়কের ৪ লেনের মধ্যে দুই লেনে চলছে বৈদ্যুতিক পোল স্থাপনসহ নানা ধরনের ফিনিশিং কাজ শেষ পর্যায়ে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ওঠা-নামার জন্য ১৫টি র‌্যাম্প নির্মাণ কাজ করছে সিডিএ। এর মধ্যে র‌্যাম্প চারটি আগ্রাবাদে। এতে আগ্রাবাদ জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘর সড়কে একটি, চেম্বার সড়কে একটি এবং আগ্রাবাদ এক্সেস সড়কে হবে দুটি, টাইগারপাস, নিমতলা, সিইপিজেড ও কেইপিজেড এলাকায় র‌্যাম্প থাকছে দুটি। এছাড়া জিইসি মোড়, ফকিরহাট ও সিমেন্ট ক্রসিং এলাকায় থাকছে একটি করে র‌্যাম্প। ১৫টি র‌্যাম্প নির্মাণে সময় লাগবে প্রায় এক বছর।

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে মহানগরীর লালখানবাজার থেকে পতেঙ্গায় শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর পর্যন্ত যেতে সময় লাগবে মাত্র ২০ মিনিট।  

প্রায় ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ উড়াল সড়কটি বিমান বন্দর এলাকা থেকে শুরু হয়ে ইপিজেড-চট্টগ্রাম বন্দর-বারিক বিল্ডিং-আগ্রাবাদ চৌমুহনী, দেওয়ানহাট রেলসেতুর পশ্চিম পাশ দিয়ে পাহাড় ঘেঁষে টাইগারপাস মোড় হয়ে লালখান বাজার মোড় পেরিয়ে ওয়াসার মোড়ে আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারে গিয়ে মিলবে।

সিডিএ প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দিতে প্রস্তুতি চলছে। তবে বৈদ্যুতিক বাতি স্থাপন করতে পারলেই চলতি মাসেই যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।  বাতি স্থাপন সাথে সিসিটিভি ক্যামেরাও স্থাপন করা হবে। এর মধ্যে ১৫টি র‌্যাম্প নির্মাণ এখনো শেষ হযনি। যেসব র‌্যাম্পের কাজ শেষ হয়েছে, তা খুলে দেযা হবে। তবে প্রকল্পটির মেয়াদ বেড়ে আগামী বছর শেষ হবে। আগামী বছর শেষে পূর্ণাঙ্গ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সুফল পাবে নগরবাসী। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কারণে এখন ২০ মিনিটে যাওয়া যাবে। চট্টগ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি আনবে।’

তিনি বলেন, উড়াল সড়কে টোল নেওয়ার জন্য ১৪টি টোল বুথ থাকবে। টেন্ডারের মাধ্যমে এ টোল আদায়ের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হবে। পতেঙ্গা প্রান্তে চারটি টোল বুথ থাকবে। বাকি টোল বুথ বসানো হবে।  এখনো টেন্ডার আহ্বান করা হয়নি।'

সিডিএ সূত্র জানায়, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে চলাচল করলে কার ১০০ টাকা, জিপ ১০০ টাকা, মাইক্রোবাস ১০০ টাকা, মিনিবাস ২০০ টাকা, বাস ৩০০ টাকা, ট্রাক (চার চাকা) ২০০ টাকা করে টোল দিতে হবে। তবে উড়াল সড়কে চলবে না মোটরসাইকেল, ট্রাক (৬ চাকা) এবং কাভার্ড ভ্যান। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চলবে। এজন্য সিসি ক্যামেরা এবং গাড়ি নিয়ন্ত্রণে স্পিড ক্যামেরাও স্থাপন করা হবে। যা নিয়ন্ত্রণ করবে নগর পুলিশ। মন্ত্রণালয় থেকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহনের টোলের হার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২০১৭ সালে একনেকে অনুমোদন হওয়ার পর ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্পটি তিন বছরের মধ্যে সম্পন্ন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে কাজ শুরু হলেও ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে ২০২২ সালে নকশা সংশোধন করে আরও ১ হাজার ৪৮ কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়। বাড়ানো হয় প্রকল্পের মেয়াদ।