ন্যাভিগেশন মেনু

চলনবিলে অবাধে চলছে শামুক নিধন


সিরাজগঞ্জের তাড়াশসহ চলনবিল অধ্যুষিত বিভিন্ন অঞ্চলে পানি কম থাকায় অবাধে চলছে শামুক নিধন। স্থানীয় কৃষক ও মৎস্যজীবীরা প্রতিদিন বিল থেকে শামুক সংগ্রহ করে বিক্রি করছেন।

পরিবেশবিদরা বলছেন, উন্মুক্ত জলাশয়ের প্রাকৃতিক ফিল্টার হিসেবে পরিচিত এসব জলজ প্রাণী নিধনের ফলে জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ হুমকির মুখে পড়ছে। এর বিরূপ প্রভাব দেখা দিয়েছে মাটি ও পানিতে।

তাড়াশের কামারশন গ্রামের লোকমান, সিদ্দিক, রফিক, রবি ও কুশাবাড়ি গ্রামের ইয়ানুস আলীসহ অনেক মাছচাষীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের মতো বিল অঞ্চলের বহু মানুষের সংসার চলে মাছ ধরে। কিন্তু এ বছর ভরা বর্ষায়ও বিলে পানি কম। অল্প পানিতে মাছের দেখা মিলছে না। বাধ্য হয়ে শামুক ধরে বিক্রি করছেন তারা।

তারা জানান, প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত একজন ১৫ থেকে ২০ বস্তা শামুক সংগ্রহ করেন। প্রতি বস্তা শমুক বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে২৫০ টাকায়।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এ শামুক কিনে স্থানীয় খামারিদের চাহিদা মিটিয়ে কুষ্টিয়া, রংপুর, নোয়াখালী, বরিশাল, বাগেরহাট, যশোরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের খামারিদের কাছে বিক্রি করেন।

চলনবিল অঞ্চলে প্রতি বছর প্রায় কোটি টাকার শামুক বিক্রি হয় বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

স্থানীয় শামুক ব্যবসায়ী আব্দুল কাদের বলেন, তিনি প্রতিদিন কামারশন ও কুন্দইল ঘাট থেকে ৫০০ থেকে এক হাজার বস্তা শামুক কিনে থাকেন। অনরূপভাবে হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়কের আট নম্বর সেতুর পাশে ও নাদোসৈয়দপুর খেয়াঘাটসহ বিল অঞ্চলের বেশ কয়েকটি স্থানে শামুক বেচা-কেনা হচ্ছে।

আব্দুল কাদের জানান, 'ছোট-বড় সব মিলিয়ে ২০-২৫ জন ব্যবসায়ী রয়েছে। তারা স্থানীয় সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে শামুক কিনে পাইকারি বিক্রি করেন। বর্ষার তিন-চার মাস শামুক কেনাবেচা হয়। কুষ্টিয়া, রংপুর, নোয়াখালী, বরিশাল, বাগেরহাট, যশোরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের খামারিদের কাছে বিক্রি করা হয় এই শামুক। এই ব্যবসা বৈধ না অবৈধ তা আমি জানি না।'

তাড়াশ ডিগ্রি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক বিদ্যুৎ কুমার দাশ বলেন, প্রাকৃতিকভাবে শামুক পানি পরিষ্কার করে। উন্মুক্ত জলাশয়ের পানি বিশুদ্ধকরণসহ মিঠা পানির মাছের খাদ্যের চাহিদা পূরণ করে শামুক। শামুক কৃষিজমির উর্বরতা বৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে।

এ বিষয়ে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবাউল করিম বলেন, চলনবিল অঞ্চলে মাছের পাশাপাশি প্রাকৃতিকভাবেই ব্যাপক শামুক উৎপাদন হয়। এসব শামুক নিধন বন্ধে অচিরেই কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এমএসএম/এসএ/এডিবি/