পাবনার চাটমোহরের কৃষকরা চলতি রবি মৌসুমে ৮০ হেক্টর জমিতে কালোজিরা চাষ করেছেন। ইতোমধ্যে কালোজিরা পাকতে শুরু করেছে। কতিপয় কৃষক জমি থেকে যাদুর ফসল কালোজিরা তুলতে শুরু করেছেন।
চাটমোহর কৃষি অফিস সূত্র জানায়, ৮০ হেক্টরের মধ্যে ৫ হেক্টর জমিতে বারি-১ এবং ৭৫ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের কালোজিরা চাষ হয়েছে।
গত রবি মৌসুমে ২ হেক্টর জমিতে বারি-১ ও ৮৪ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের কালোজিরা চাষ হয়েছিলো।
হেক্টর প্রতি ফলন হয়েছিল ১.২ মেট্রিকটন। গত বছরের চেয়ে চলতি মৌসুমে ৬ হেক্টর জমিতে কালোজিরার আবাদ কম হয়েছে।
পাবনার চাটমোহরের চড়ুইকোল ব্লকের হরিপুর মোমিনপাড়া গ্রামের কালোজিরাচাষী রওশন আলম জানান, প্রদর্শনীর আওতায় চলতি মৌসুমে ৩৩ শতাংশ জমিতে স্থানীয় উন্নত জাতের কালোজিরা চাষ করেছেন তিনি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাটমোহরে পাবনা এ প্রদর্শনী বাস্তবায়ন করছে। এ বছর তিনি প্রথম কালোজিরা চাষ করেছেন। উপজেলা কৃষি অফিস প্রণোদনার ড্যাপ, পটাশ, ইউরিয়া ও জিপসাম সার দিয়েছিল।
তিনি আরও জানান, ৩৩ শতাংশ জমি চাষে ২ কেজি বীজ লেগেছে, যার দাম ৮০০ টাকা। জমি চাষে ১ হাজার টাকা, সেচ বাবদ ১ হাজার টাকাসহ তার সর্বমোট ৩ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে।
তিনি আরো জানান, ইতোমধ্যে কালোজিরা পাকা শুরু করেছে। বিঘাপ্রতি ৩ থেকে সাড়ে ৩ মণ ফলন পাওয়া যেতে পারে। বর্তমানে প্রতিমণ কালোজিরা প্রায় ১১ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ভরা মৌসুমে প্রায়শই কালোজিরার দাম কম থাকে। এ বছর বাজারদর ভালো থাকলে বিঘা প্রতি প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা লাভের আশা করেন তিনি।
চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ.এ মাসুম বিল্লাহ জানান, কালোজিরা মাঝারি আকৃতির মৌসুমী গাছ। এ গাছে একবার ফুল ও একবার ফল হয়। কালোজিরার বীজ থেকে তেল উৎপন্ন হয়। বহুবিধ উপকারিতার কারণে কালোজিরাকে ম্যাজিক ফসল বলা হয়। চলতি মৌসুমে চাটমোহরে মাঠ থেকে কালোজিরা উঠানোর কাজ শুরু হয়েছে।
চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক রুহুল কুদ্দুস ডলার জানান, শতাধিক পুষ্টি ও উপকারী উপাদান সমৃদ্ধ কালোজিরা বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক। এটি আমাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার পাশাপাশি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কালোজিরার তেল ও মধু আমাদের শরীরের জন্য উপকারী।
কালোজিরা প্রসবকালীন ব্যাথাসহ শরীর, গলা, দাঁত, পেট ও মাথাব্যথা, বাতের ব্যথা নিরসনে অত্যন্ত উপকারী। এছাড়া আরও অনেক রোগ নিরসনে কালোজিরা ভূমিকা রাখে। তবে পুরোনো কালোজিরার তেল এবং অতিরিক্ত কালোজিরা খেলে তা ক্ষতির কারণ হতে পারে।
আইকেআর/ ওয়াই এ/এডিবি
