ন্যাভিগেশন মেনু

চিনের উন্মুক্তকরণের নতুন পদক্ষেপ ঘোষণা করলেন প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং


চেন মিং তুহিনা

তৃতীয় চিন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা ৪ নভেম্বর রাতে শাংহাইয়ে উদ্বোধন হয়। চিনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং অনলাইনে এ অনুষ্ঠানে মূল ভাষণ দেন। ভাষণে তিনি বলেন, নোভেল করোনাভাইরাস বিশ্ব অর্থনীতিকে অস্থিতিশীল ও অনিশ্চিত করে তুললেও চিন উন্মুক্তকরণ আরও বেগবান করেছে এবং সহযোগিতা বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রেখেছে। 

সি চিনপিং বলেন, বিভিন্ন দেশের উচিত কল্যাণমূলক সহযোগিতা, অভিন্ন দায়িত্ব, অভিন্ন পরিচালনা-ভিত্তিক উন্মুক্তকরণের জন্য চেষ্টা করা। তিনি আরও বলেন, চিন উন্মুক্তকরণ, সহযোগিতা, একতা ও অভিন্ন স্বার্থ অর্জনের ধারণা নিয়ে সার্বিকভাবে উন্মুক্তকরণ বেগবান করবে, চিনা বাজার বিশ্বের বাজার ও ভাগাভাগির বাজার – এই ধারণা নিয়ে অগ্রসর হবে, বিশ্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধার জোরদার করবে এবং আন্তর্জাতিক সমাজের জন্য চালিকাশক্তি যোগাবে।

নভেল করোনাভাইরাস মহামারি বিভিন্ন দেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এই বিশেষ প্রেক্ষাপটে তৃতীয় চিন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা শাংহাইয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ২০১৮ সালের পর আমদানি মেলা আন্তর্জাতিক ক্রয়, বিনিয়োগ, সংস্কার, যোগাযোগ ও উন্মুক্ত সহযোগিতার প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। এ বছরের আমদানি মেলার আয়তন গতবারের চেয়ে ৩০ হাজার বর্গমিটার বেড়েছে আর মহামারি প্রতিরোধে বিশেষ জনস্বাস্থ্য প্রদর্শনী এলাকা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ সব এলাকায় বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলো অংশ নিচ্ছে।

ভাষণে সি চিন পিং বলেন, চিন মহামারি প্রতিরোধ নিশ্চিত করে এই মেলা আয়োজন করেছে। এতে বিশ্বের সঙ্গে চিনা বাজারের সুযোগ ভাগাভাগি করা এবং বৈশ্বিক অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে চিনের আন্তরিক ইচ্ছা প্রতিফলিত হয়।

তিনি বলেন, “মহামারির নেতিবাচক প্রভাবের মধ্যেও চিনের উন্মুক্তকরণের গতি বাড়ছে। গত বছরের আমদানি মেলায় উত্থাপিত উন্মুক্তকরণ সম্প্রসারণের পদক্ষেপগুলো সার্বিকভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে চিন আমদানি বাড়িয়ে যাবে। হাইনান অবাধ বাণিজ্য-বন্দর প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা, শেনচেনে সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ বৃদ্ধির পরিকল্পনা, উচ্চমানের অবাধ বাণিজ্য চুক্তি, আমদানি বাণিজ্যের মাধ্যমে নব্যতাপ্রবর্তনের দৃষ্টান্তমূলক এলাকা প্রতিষ্ঠা করা, মেধাস্বত্ব রক্ষা, উচ্চমানের ‘এক অঞ্চল এক পথ’ প্রতিষ্ঠা- ইত্যাদি বিষয়ে ইতিবাচক অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে।”

সি চিন পিং বলেন, “মহামারি বিশ্ব অর্থনীতিকে আরও অস্থিতিশীল ও অনিশ্চিত করেছে। ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, যে কোনও ঝুঁকি ও দুর্ঘটনার মধ্যেও মানবজাতি সামনে এগিয়ে যায়। বর্তমানে বিভিন্ন দেশের উন্মুক্তকরণ ও সহযোগিতার ধারা পরিবর্তন হয়নি। আমাদের উচিত একসঙ্গে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা,  সহযোগিতা ও যোগাযোগ বৃদ্ধি করা এবং কল্যাণমূলক সহযোগিতা, অভিন্ন দায়িত্ব, যৌথ পরিচালনা-ভিত্তিক অভিন্ন উন্মুক্তকরণের জন্য চেষ্টা করা।”

চিনা প্রেসিডেন্ট বলেন, কিছু দিন আগে সিপিসি’র ঊনবিংশ কেন্দ্রীয় কমিটির পঞ্চম পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে চিনের ‘চতুর্দশ পাঁচসালা পরিকল্পনার’ প্রস্তাব করা হয়। চিন সার্বিক সচ্ছল সমাজ প্রতিষ্ঠা করা ও দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করবে এবং আগামীতে সার্বিকভাবে আধুনিক সমাজতান্ত্রিক দেশ প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা নতুন পর্যায়ে নিয়ে যাবে। 

তিনি ঘোষণা করেন,  চিন উন্মুক্তকরণের জন্য ধারাবাহিক পদক্ষেপ নেবে। “প্রথমত, নতুন উন্মুক্ত এলাকা প্রতিষ্ঠা করবে, আরও বেশি উন্মুক্তকরণের নীতি কার্যকর করবে এবং উন্মুক্তকরণের ক্ষেত্রে সংস্কার জোরদার করবে। দ্বিতীয়ত, বৈদেশিক বাণিজ্যের নব্যতাপ্রবর্তন জোরদার করবে। তৃতীয়ত, বাণিজ্যিক পরিবেশ উন্নত করে যাবে। চতুর্থত, দ্বিপাক্ষিক, বহুপাক্ষিক ও আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে।”

সি চিন পিং বলেন, চিন আরও বেশি দেশের সঙ্গে উচ্চমানের বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষর করবে, সক্রিয়ভাবে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সংস্কারে অংশ নেবে, ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগে উচ্চমানের উন্নয়ন বেগবান করবে এবং একসঙ্গে মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি গঠন করবে।

তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতি কঠোর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। আমাদের উচিৎ আস্থা ও সাহস নিয়ে একসঙ্গে বাধা অতিক্রম করা। চিন আশা করে, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে উন্মুক্তকরণের সুযোগ সৃষ্টি করবে, সহযোগিতার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করবে এবং একসঙ্গে মানবজাতির সুন্দর ভবিষ্যৎ  গড়ে তুলবে।”

-    চেন মিং তুহিনা চায়না মিডিয়া গ্রুপের একজন কর্মী