ন্যাভিগেশন মেনু

চুয়াডাঙ্গায় পাটচাষ ভাল হলেও দাম নিয়ে রয়েছে শঙ্কা


চুয়াডাঙ্গার পানির অভাবে প্রতিবছর পাট জাগ দিতে গিয়ে নানা সমস্যার মধ্যে পড়লেও এ বছর আগাম বৃষ্টি হওয়ায় পাট জাগ দেওয়া নিয়ে কোন সমস্যায় পড়তে হয়নি চাষিদের। তবে, দাম নিয়ে শঙ্কা জেগেছে চাষিদের মনে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অন্য বছরের তুলনায় এবার পাটের আবাদ ভালো হলেও দাম নিয়ে রয়েছে সংশয়। সময়মতো পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাট কেটে জলাশয়ে জাগ দেওয়া, পাট ছাড়ানো নিয়ে ব্যস্ত চাষিরা। পাট কেটে নদী, পুকুর, নালা, খাল, বিল ও ডোবায় জাগ দেওয়া, আঁশ ছাড়ানোসহ সব মিলিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। 

আবার কোথাও দেখা গেছে নারী-পুরুষ মিলে পাট থেকে আঁশ ছাড়ানোর কাজ করছেন। খরচ বাঁচাতে রিবোন রেটিং পদ্ধতিতে আঁশ ছাড়ানোর জন্য কৃষি বিভাগ কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করলেও তাতে আগ্রহ নেই তাঁদের। কৃষক যদি ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকা মণ দরে পাট বিক্রি করেন তাহলে লাভবান হবেন। ন্যায্যমূল্য পেলে কৃষকরা আরও বেশি পাট চাষে আগ্রহী হয়ে উঠবেন।

চুয়াডাঙ্গার কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের কৃষক হাসান আলী স্বাধীন ৫ বিঘা জমিতে পাটচাষ করেছেন। পাটও ভালো হয়েছে এবং অন্য বছরের তুলনায় ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন তিনি। 

এলাকার পাট চাষি মিজানুর রহমান এ বছর প্রতি বিঘা জমিতে ১০ থেকে ১২ মণ পাট উৎপাদন করেছেন। আর প্রতি বিঘা জমিতে পাট উৎপাদনে খরচ হয়েছে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা।

কৃষক ইউসুফ আলী মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি না হওয়ায় পাট নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন। পরে বৃষ্টি হওয়ায় ফলন ভালো হয়েছে। এবার তিনি ৬ বিঘা জমিতে পাটচাষ করেছেন। বাজারে পাটের মূল্য নিয়ে তিনি কিছুটা সংশয়ে আছেন। যদি সরকার পাটের ভালো দাম নির্ধারণ করে তাহলে আর্থিকভাবে কিছু লাভবান হবেন। আর লাভের মুখ দেখলে আগামী বছর আরও বেশি জমিতে পাটচাষ করার পরিকল্পনা রয়েছে তার। গত বছরের তুলনায় জেলায় এ উপজেলায় পাটের আবাদ অনেক বেশি হয়েছে।

এদিকে এলাকার কৃষকরা যাতে পাট যথাযথভাবে উৎপাদন করতে পারেন এবং স্বল্প খরচে উচ্চ ফলনশীল পাট উৎপাদন করতে পারেন এ জন্য কৃষকদের কাছে গিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন  উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা। বিভিন্ন রোগবালাই থেকে পাটকে মুক্ত রাখতেও পরিমিত পরিমাণ ওষুধ প্রয়োগের পরামর্শও দিয়েছেন।

জেলা চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আলী হাসান বলেন, পাট চাষের জন্য এ জেলার মাটি খুবই উপযুক্ত। সমস্যা হচ্ছে পাট পচানো নিয়ে। প্রবাহমান পানিতে পাট জাগ দিলে পাটের মান ভালো হয়। আর ভালো পাটের দামও ভালো। তবে এ বছর আগাম বৃষ্টির কারণে পাট জাগ দিতে চাষিদের ভোগান্তি পেতে হচ্ছে না। গত বছর জেলাতে পাট চাষ হয়েছিলো ১৫ হাজার ২২৪ হেক্টর জমি চলতি বছর চাষ হয়েছে ১৬ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমি। বর্তমান বাজারমূল্য থাকলেও চাষিরা পাট এবং পাটকাটি বিক্রি করে বিঘা প্রতি ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা পাবে। প্রত্যাশা অনুযায়ী লাভ না হলেও লোকশান হবে না।

এনআই/ ওয়াই এ/ এডিবি