ন্যাভিগেশন মেনু

চৈত্ররোদ মাথায় নিয়ে নন্দীগ্রামে ভোট প্রার্থণা মমতা’র


‘এটা আমার আবেগের জায়গা’, এখান থেকে আন্দোলনের ফসল তুলে ক্ষমতায় এসেছি। তাই এবার এখান থেকে দাঁড়িয়েছি, সবার কাছে ভোট চাই’।

আজ বুধবার নন্দীগ্রামে ভোটের আগেরদিন সিঙ্গুরের মাটিতে এভাবে ভোট চাইলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিনের সভা থেকে সিঙ্গুরের আবেগ ছুঁয়ে গেলেন মমতা।

মমতা জানালেন, “২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিঙ্গুর থেকে দাঁড়াতে চেয়েছিলাম। বেচারামকে বলেছিলাম, অন্য কোনও জায়গা থেকে মাস্টারমশাইকে দাঁড়ানোর জন্য বোঝাতে। কিন্তু উনি বুঝতে চাননি।

সিঙ্গুর আমার আন্দোলনের জায়গা। সিঙ্গুর নিয়েও আমার আবেগ আছে।” যদিও তৃণমূল নেত্রীর দাবি মানতে নারাজ সিঙ্গুরের বিজেপি প্রার্থী ‘মাস্টারমশাই’ রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য।

মাস্টারমশাই বলেন, “উনি দাঁড়াতে চাইলে নিশ্চয়ই দাঁড়াতে পারতেন। বেচারামকে দিয়ে কেন আলোচনা করানো হল। উনি নিজে কথা বলতে পারতেন আমার সঙ্গে।

তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী আমাকে জিতিয়েছেন কিনা জানি না, সিঙ্গুরের মানুষ আমাকে ভোট দিয়েছেন।এগারোয় রাজ্যের পরিবর্তনের হটস্পট ছিল সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রাম। একুশের ভোটযুদ্ধে সেই নন্দীগ্রাম থেকে লড়ছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

ওই বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটের আগের দিনই তাৎপর্যপূর্ণভাবে তৃণমূল নেত্রী সভা করলেন জমি আন্দোলনের আরেক ভরকেন্দ্র সিঙ্গুরে। সভা থেকে ছুঁয়ে গেলেন জমি আন্দোলনের সেই আবেগকে। মঞ্চে ডেকে নিলেন তৎকালীন সঙ্গীদের।

রীতিমতো নাম ধরে ধরে খোঁজ নিলেন অনেকের। বললেন, “এখানকার সকলকেই তো চিনি আমি। নাম ধরে ধরে প্রত্যেককে জানি।

এদিকে রাত পোহালেই দ্বিতীয় দফার ভোট।এই পরিস্থিতিতে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম । তৃণমূলের কার্যালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। যদিও অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেই দাবি বিজেপির।

বুধবার সকালে নন্দীগ্রামের ১ নম্বর ব্লকের আমগেছিয়ায় তৃণমূলের কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়। ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। কার্যালয়ের সামনে থাকা শাসকদলের পতাকাও ছিঁড়ে ফেলা হয় বলে অভিযোগ।

ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বাভাবিকভাবেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। বেশ কয়েকজন তৃণমূল কর্মীকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ।

তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ, বিজেপির তরফেই এদিন ওই কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হয়েছে।যদিও এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলেই দাবি স্থানীয় বিজেপি নেতার। তাঁর কথায়, “কোনওভাবেই  বিজেপির সঙ্গে কোনও যোগ নেই। ওরা নিজেরাই ভাঙচুর করে বিজেপির দিকে আঙুল তুলছে।

বৃহস্পতিবার নন্দীগ্রামে ভোটগ্রহণ। তার আগে বুধবার দুপুরে হুগলিতে জোড়া সভা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চৈত্রের রোদ মাথায় করে ভরদুপুরে এলেন সিঙ্গুরে।

সভা থেকে এই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে বেনজির সৌজন্য দেখালেন দলনেত্রী। সদ্য দলবদল করা মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে কড়া ভাষা প্রয়োগ করতেও দেখা গেল না তাঁকে।

বরং মাস্টারমশাইয়ের দলবদল নিয়ে তৃণমূল নেত্রী যে অবাকই হয়েছেন, তা স্পষ্ট তাঁর বক্তব্যেই। বললেন, “মাস্টারমশাই কীভাবে দাঁড়ান বিজেপির হয়ে? আমি অনুরোধ করেছিলাম, আপনাকে কোনও উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান করে দেব। সম্মানের সঙ্গে কাজ করবেন।”

মমতার ভাষণের পরতে পরতে ঝরে পড়ল মাস্টারমশাইয়ের উদ্দেশে শ্রদ্ধা। বললেন, “আমি আজও রবীন্দ্রনাথবাবুকে সম্মান করি।” একইসঙ্গে বিজেপিকে কটাক্ষ করে তৃণমূল নেত্রী বললেন, “৯২ বছর বয়সের মাস্টারমশাইকে সেবা না করে ভোটে দাঁড় করিয়ে দিল বিজেপি।”

এডিবি/