ন্যাভিগেশন মেনু

জলে নামলো রাঙ্গাবালি


পায়রা সমুদ্রবন্দরে ব্যবহারের জন্য আনন্দ শিপইয়ার্ড নির্মিত বয়া লেয়িং নৌযান ‘রাঙ্গাবালি’র উদ্বোধন হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাটে আনন্দ শিপইয়ার্ডে আনুষ্ঠানিকভাবে নৌযানটি পানিতে ভাসানো হয়। আগামী ১ মাসের মধ্যে নৌপথে এটি পায়রা বন্দরে পৌছাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জাহাজ চলাচলে নৌ পথ চিহ্নিতকরণে বয়া ব্যবহার করা হয়। একেকটি বয়ার ওজন ১০ থেকে ১৬ টন পর্যন্ত হয়ে থাকে। পানিতে ভাসমান বয়ার ওপরে লাল ও সবুজ সংকেত বাতি বা বীকন থাকে। যার সাহায্যে জাহাজ চলাচল করে। রাঙ্গাবালি জাহাজে ২০ টন ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ক্রেন আছে। যা দিয়ে বয়া স্থাপন ও স্থানান্তরের কাজ চলবে।

 উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান আনন্দ শিপইয়ার্ড এন্ড স্লিপওয়েজ লিমিটেডের (এএসএসএল) চেয়ারম্যান ড. আব্দুল্লাহেল বারী বলেন,   পায়রা বন্দরের জন্য নির্মিত জাহাজ রাঙ্গাবালি খুবই উন্নত মানের। এ জাহাজ ভাল সেবা দেবে বলে প্রত্যাশা করছি।’

 ‘আনন্দ শিপইয়ার্ড বাংলাদেশের শিপ বিল্ডিং এর সুতিকাগার। আনন্দ শিপইয়ার্ডের হাত ধরে দেশে এখন বেশ কয়েকটি জাহাজ নিমার্ণ প্রতিষ্টানের যাত্রা শুরু হয়েছে। জাহাজ নির্মাণ শিল্প দেশে অনেক সমৃদ্ধ হয়েছে,’ যোগ করেন তিনি।

 'দেশে জাহাজ আমদানির প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে ড. বারী বলেন, সম্ভাবনাময় এ খাত একদিন রপ্তানী খাত হিসেবে জায়গা করে নেবে বলে আমার প্রত্যাশা। 

 আনন্দ গ্রুপের  ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফরুজা বারী বলেন,  ‘বাংলাদেশ থেকে আমরাই প্রথম বিদেশে জাহাজ রফতানি শুরু করেছি। জাহাজের গুণগত মানের সঙ্গে আমরা কখনো আপোস করি না। সঠিক গুণগত মান রক্ষা করে রাঙ্গাবালি তৈরি করা হয়েছে। জাহাজটি কমপক্ষে ৫০ বছর সেবা দেবে বলে আশা করছি।’

 জাহাজ নির্মাণ শিল্পে ছোটখাটো কিছু সমস্যা আছে উল্লেখ করে বলেন, উন্নয়নবান্ধব সরকার এসব সমস্যা নিরসনে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। এটা আমাদের প্রত্যাশা।

জাহাজ নির্মাণ শিল্পে বাংলাদেশ খুব শিগগির চায়না ও কোরিয়ার মতো ‘এক্সপোর্ট ওরিয়েন্টেড’ রাষ্ট্রে পরিনত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

 পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ প্রকল্প পরিচালক কায়সার মাহমুদ বলেন, নির্ধারিত সময়েই আনন্দ শিপইয়ার্ড জাহাজ নির্মানের কাজ শেষ করেছে। এটা পায়রা বন্দরের জন্য বড় খুশির খবর। আনন্দ গুনগত মানের জাহাজ তৈরি করেছে যা দীর্ঘ মেয়াদে সেবা দেবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।

 অনুষ্ঠানে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের ডক মাস্টার ক্যাপ্টেন এস এম শরিফুল ইসলাম, ডেপুটি  সুপারভিশন কনসাল্টেন্ট মনিরুল ইসলাম,

 এএসএসএল'র উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল্লাহ নাহিদ নিগার, নির্বাহী পরিচালক তারিকুল ইসলাম, পরিচালক (কারিগরি) সাইফুল ইসলাম ও আব্দুল্লাহ নাজমা নওরোজসহ  আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। 

এর আগে ৩৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকার বয়া লেয়িং নৌযান ‘রাঙ্গাবালি’ নির্মাণে এএসএসএল’র সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ।  

এদিকে সম্প্রতি  ৪৫টি টার্মিনাল পন্টুন নির্মাণে বাংলাদেশ অভ্যন্তরিন নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের সাথে এক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে এএসএসএল। সদরঘাট, পাগলা, মিরকাদিম, নারায়ণগঞ্জ, ফতুল্লাসহ দেশের বিভিন্ন বন্দরে এসব পন্টুন স্থাপন করা হবে। 

গত ২২ আগস্ট বিআইডব্লিউটিএ’র সম্মেলন কক্ষে এএসএসএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফরুজা বারী এবং বিআইডব্লিউটিএ’র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এ চুক্তিতে সই করেন। চুক্তি অনুয়ায়ী ১৮ মাসের মধ্যে পন্টুন সরবরাহ করতে হবে এএসএসএলকে। এ কাজের জন্য এএসএসএল কে ৯৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা  দেবে বিআইডব্লিউটিএ।

এস এস