ন্যাভিগেশন মেনু

জীবননগরে আগাম শিম চাষে কৃষকের ভাগ্যবদল!


চলতি মৌসুমে কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় আগাম শিম চাষে ভাগ্যবদলের আশা করছেন উপজেলার কৃষকরা।

গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা রাখতে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি শীতকালীন সবজি হিসেবে রূপভান ও রানীর মতো বিস্কুট, অটো, ইপসা-১, ২ এবং বারী-১, ২ ও ৪ নামে আগাম জাতের শিম চাষ করেছে জীবননগর উপজেলার কৃষকরা।

মাঠজুড়ে শাদা ও বেগুনি রঙের ফুলে ভরে গেছে মাচা। এ যেন এক চোখ জুড়ানো দৃশ্য। এর মাঝে উঁকি দিচ্ছে নতুন শিম।

অনুকূল আবহাওয়ায় শিমের ভালো ফলন ও দাম বেশি পাওয়ায় বেশ খুশি চাষিরা। ইতোমধ্যেই আগাম জাতের শিম উঠতে শুরু করেছে। পুষ্ট গাছ ও প্রচুর ফুল আসায় চলতি মৌসুমে শিমের ভালো ফলন হবে বলে আশা করছেন চাষিরা। ফলে করোনার দুঃসময়ে তাদের মুখে এখন মিষ্টি হাসি।

জীবননগর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, ‘এ বছর জীবননগর উপজেলায় ১১২ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের শিমের আবাদ করেছেন কৃষকরা। যা গতবছরের তুলনায় ৩০ হেক্টর বেশি।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে শিম তুলতে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে চাষিদের। গ্রামীণ সড়কে দাঁড়িয়ে যতো দূর চোখ যায় শুধুই শিমের সবুজ ক্ষেত। সবুজ পাতা আর বেগুনি রঙের ফুলে ছেয়ে গেছে আদিগন্ত।

শিম বিক্রির জন্য গ্রামে বসেছে অস্থায়ী বাজার। এসব বাজার থেকে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নছিমন-করিমন ও ট্রাকবোঝাই করে শিম যাচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন হাটবাজারে। বর্তমানে পাইকারিতে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে। অবশ্য প্রথম দিকে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা দরেও শিম বিক্রি করেছেন কৃষকরা।

উপজেলার আন্দুলবাড়িয়া গ্রামের চাষি বাদশা মন্ডল বলেন, ‘শিম মূলত শীতকালীন সবজি। বেশি দামের আশায় একটু আগেভাগে এক বিঘা জমিতে শিমের আবাদ করেছি। এ বছর ২ বিঘা জমিতে শিমের আবাদ করেছেন। বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা। ইতোমধ্যে তিনি ১ লাখ ২৫ হাজার টাকার শিম বিক্রি করেছেন। তিনি আরও ২ লাখ টাকার শিম বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন।’

উপজেলার দেহাটি গ্রামের পাইকারি শিম ব্যবসায়ী আব্দুল হক জানান, ‘স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে শিম কিনে ঢাকা, সিলেট, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন পাইকারি বাজারে পাঠানো হচ্ছে। ইতোমধ্যেই নতুন শিম পাঠানো শুরু হয়েছে। খুচরা বাজারে শিমের চাহিদা ও দাম ভালো।’

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বলেন, আগাম সবজি চাষ ঝুঁকিপূর্ণ। তবে অসময়ে এ আবাদ থেকে চাষিরা বাড়তি আয় করতে পারেন। এবার চলতি মৌসুমের শুরুতে শিম ক্ষেত্রে ছত্রাক ও পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছিলো। কিন্তু কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও সুষ্ঠু পরিচর্যায় শেষ পর্যন্ত শিমের ফলন ভালো হয়েছে। অন্য বছরের তুলনায় এবার দামও ভালো। শিমের উৎপাদন বাড়াতে মাঠ পর্যায়ে কৃষি বিভাগ কাজ করছে।

এসকে/এমআইআর/এডিবি