ন্যাভিগেশন মেনু

ঝালকাঠির ১৬৯টি মন্ডপে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা


সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শ্রী শ্রী দুর্গাপূজা। ঝালকাঠিতে প্রতিবছরই আড়ম্বরপূর্ণভাবে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন করা হয়। তবে করোনার কারণে গতবারের মতো এবারও আনন্দ উদযাপনে কিছুটা ভাটা পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

পূজা সামনে রেখে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন প্রতিমা তৈরির কারিগররা। জেলায় ১৬৯টি মন্ডপে এ বছর পূজা হবে। একযোগে কাজ চলছে সদরের ৭৩টি, কাঁঠালিয়া উপজেলায় ৫৪টি, রাজাপুরে ২১টি এবং নলছিটি উপজেলায় ২১টি পূজামন্ডপে।

মন্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, এখন পর্যন্ত প্রতিমা তৈরির প্রায় ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আর কিছুদিন পরেই রং তুলির আঁচড়ে প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে প্রতিমাগুলো। আগামী ১১ অক্টোবর দূর্গাপূজা শুরু হবে।

প্রতিমা তৈরি নিয়ে কথা হয় কারিগর পরাণ পালের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘গত ২৫ বছর ধরে প্রতিমা তৈরির কাজ করছি। এবার ৯টি মন্ডপের প্রতিমা তৈরির কাজ পেয়েছি। সময়মতো এসব প্রতিমা পূজা উদযাপন কমিটির নিকট হস্তান্তর করতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছি। তবে করোনার আগে প্রতিটি প্রতিমা তৈরি করতে ৫০ হাজার টাকা পাওয়া যেতো। কিন্তু চলমান পরিস্থিতির কারণে প্রতিমা তৈরীর মজুরী ২৫/৩০ হাজার টাকায় নেমে এসেছে।’

হরিসভা রাধাগবিন্দ মন্দিরের দুর্গামন্ডপের প্রতিমা কারিগর উত্তম পাল বলেন, ‘বাপ-দাদার ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন্য এই পেশার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছি। কিন্তু আমার সন্তানরা অন্য পেশায় চলে গেছে। বর্তমানে জিনিষপত্রের দাম বেশি হওয়ায় আমাদের আগের মতো পোষায় না। আমি এবার ১৪টি প্রতিমা বানানোর কাজ পেয়েছি। বাড়িতেও কিছু প্রতিমা বানিয়ে রেখেছি কমদামে রেডিমেট বিক্রি করার জন্য।’

গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া থেকে ঝালকাঠি মদনমোহন আখড়াবাড়ি মন্ডপে প্রতিমা তৈরি করতে আসা ভাস্কর শ্রীবাস গাইন বলেন, ‘হাতে সময় আছে ২০ দিন। এরমধ্যে মাটির কাজ, রং, পোষাক এবং অলংকার পরানোর কাজ শেষকরে মন্দির কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিমা বুঝিয়ে দিতে হবে। তাই ৫ জন মিলে কাজ করে যাচ্ছি।’

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের ঝালকাঠি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তরুণ কুমার কর্মকার বলেন, করোনা পরিস্থির কারণে ১৬৯টি মন্ডপে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত রাখতে প্রতিটি মন্ডপ কমিটি প্রধানদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে যেহেতু সকল মন্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে সেহেতু রাতে মন্ডপগুলোতে প্রতিমা এবং কারিগরদের নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব সেচ্ছাসেবকদের সমন্ময়ে পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশের মাধ্যমে এবারের শারদীয় উৎসবকে বর্ণীলভবে উদযাপন করার আশাবাদী তিনি।

তরুণ কুমার কর্মকার আরও বলেন, পঞ্জিকা মতে, এ বছর দেবী দুর্গা আসবেন ঘোটকে, আর গমন করবেন দোলায় চড়ে। এ বছর মায়ের কাছে বিশ্ব মহামারি থেকে মুক্তির জন্য বিশেষ প্রার্থনা করা হবে।

এএস/সিবি/এডিবি/