ন্যাভিগেশন মেনু

টেকসই উন্নয়নে বড় বাঁধা জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিরূপ প্রভাব


‘বাংলাদেশের অভীষ্ট টেকসই উন্নয়নের বড় বাঁধা হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিরূপ প্রভাব। মনুষ্যসৃষ্ট এই অভিঘাত আজ বাংলাদেশের জীবন-জীবিকার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ সরকার সৃষ্ট ঝুঁকি মোকাবেলায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং তা উত্তরণে সুনির্দিষ্ট কার্যক্রম গ্রহণ করেছেন। ’

সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন ও সভাপতিত্ব করেন নেটওয়ার্ক অন ক্লাইমেট চেঞ্জ, বাংলাদেশ (এনসিসি’বি) এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক (রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি) ড. মুহাম্মদ ফররুখ রহমান। অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সাংবাদিক এবং ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিষ্ট ফোরামের সভাপতি   কাউসার রহমান, সিনিয়র সাংবাদিক ও সুন্দরবন-উপকুল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র, এবং মোজাম্মেল হক, সিনিয়র অফিসার - জলবায়ু পরিবর্তন, সেইভ দ্যা চিলড্রেন, ঢাকা অফিস ।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নেটওয়ার্ক অন ক্লাইমেট চেঞ্জ, বাংলাদেশ (এনসিসি’বি) এর রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি অ্যাসোসিয়েট  প্রতীতি কামাল।

ড. মুহাম্মদ ফররুখ রহমান বলেন, এ বছর ২৫টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের   বরাদ্দ ৫৭.৩৩ শতাংশ (৩৪৬,১০৬.৪০ কোটি টাকা)। মোট জলবায়ু সম্পৃক্ত বরাদ্দ হল ৭.২৬ শতাংশ (২৫,১২৪.৯৮ কোটি টাকা)। গত অর্থবছরসহ পূর্বের তিনটি অর্থবছরেও ধারাবাহিকভাবে জলবায়ু সম্পৃক্ত বরাদ্দ হ্রাস পেয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে এ মন্ত্রণালয়ের মোট বাজেটের ৩১.০২ শতাংশ বরাদ্দ জলবায়ু সংশ্লিষ্ট - যা গত অর্থবছর অপেক্ষা ১২.১৯ কোটি টাকা কম।

বিসিসিএসএপি’তে বরাদ্দকৃত বর্তমান অর্থবছরসহ বিগত সময়ে ‘সমন্বিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা’, ও ‘গবেষণা ও নলেজ ম্যানেজমেন্ট’ এ বরাদ্দ হ্রাস পেয়েছে। ‘দক্ষতা বৃদ্ধি ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা জোরদারকরণ’ খাতে বর্তমান অর্থবছরে ২০২০-২১ সংশোধিত বাজেটের তুলনায় কম বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে।

যা সামগ্রিক বিচারে কোনভাবেই কাম্য হতে পারে না। পাশাপাশি তিনি এবারের বাজেটে জলবায়ু সংশ্লিষ্ট পরিকল্পনা এবং তহবিলসমূহে ব্যয়ের ছয়টি প্রধান ধারার বিষয়ে বিশ্লেষন প্রদান করেন। এই অর্থবছরে বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড এ শুধুমাত্র কৃষি মন্ত্রণালয়ে একটি প্রকল্প বৃদ্ধি ছাড়া গত ২০২০-২১ অর্থবছরের সাথে প্রকল্প সংখ্যা এবং বরাদ্দে কোন পার্থক্য নেই।

নিজস্ব তহবিলে পরিচালিত জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় প্রকৃত চাহিদা মাফিক প্রকল্প গ্রহণ ও মূল্যায়নে যথার্থ ভূমিকা পালনের দুর্বলতা স্পষ্টতই প্রতীয়মান হয়েছে।

তিনি জলবায়ুর অভিঘাত মোকাবেলা এবং সুরক্ষা ব্যবস্থা একটি সমন্বিত ও বহুমাত্রিক বিষয়। পাশাপাশি কোভিডের মত অপ্রত্যাশিত মহামারির প্রার্দুভাবে জলবায়ুর অভিঘাত মোকাবেলা করা আরো জটিলতর হয়ে পড়েছে। জলবায়ু   পরিবর্তন বিষয়ে সক্রিয় জাতীয় রাজনৈতিক অঙ্গীকার এবং জলবায়ু ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে নাগরিক সমাজের সূদৃঢ় অবস্থান থাকা স্বত্বেও জলবায়ু পরিবর্তনের মুখে ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীদের জন্য অগ্রাধিকারভিত্তিতে অর্থ বরাদ্দের পাশাপাশি জলবায়ু কার্যক্রমে তাদের কার্যকরি অংশগ্রহণের বিষয়গুলি এখনো অমীমাংশিত অবস্থায় রয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি’র সাগর-রুনি মিলনায়তনে নেটওয়ার্ক অন ক্লাইমেট চেঞ্জ, বাংলাদেশ (এনসিসি’বি) এর উদ্যোগে   জীবন ও জীবিকার অগ্রাধিকার : ন্যায্যতা ও সুশাসন’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। প্রস্তাবিত জলবায়ু বাজেট ২০২১-২২ বিষয়ে নাগরিক সমাজের প্রত্যাশা ও ভাবনা তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

মোজাম্মেল হক বলেন বাংলাদেশ ক্লাইমেট ইনডেক্ট এ দুর্যোগগ্রস্ত দেশের তালিকায় সবসময়ই থাকে। ঘোষিত বাজেটে বিপন্ন জনগোষ্ঠী বিশেষত শিশু, নারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রকল্প বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করেন। জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনায় শিশু, নারী, তরুন জনগোষ্ঠীর সম্পৃক্তা বৃদ্ধি করতে হবে। বাংলাদেশ সিভিএফ’র সভাপতি হিসেবে উচিত অনুসরণযোগ্য কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা।

জিসিএফ ফান্ড এর প্রক্রিয়া কিভাবে সহজতর করা যাবে তা সরকার এবং এনজিও প্রতিনিধিদের সহযোগিতা বাড়ানোর প্রয়োজন।

নিখিল চন্দ্র ভদ্র বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্ত রোধে অনেক প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। কিন্তু যখন আমরা বর্তমান বাজেটের দিকে তাকাই তখন কিছুটা হতাশ হই। তিনি বলেন যত প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসে উপকূলীয় অঞ্চল তত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বর্তমানে সংসদ সদস্যরাও এই ব্যাপারে অবগত ।

নিখিল বলেন, আমাদের ত্রাণ নয় বাধঁ দরকার’ । যদি অবহেলিত উপকূলীয় সকল অঞ্চল নিয়ে সরকার দ্রুত কাজ না করে, তাহলে সরকারের এই শত শত উন্নয়ন সাগরের পানিতে ডুবে যাবে।  উপকূলীয় মানুষদের বাঁচাতে এটার বিকল্প কিছু নাই।  তিনি আরো বলেন, জীবন ও জীবিকাকে প্রাধান্য দিতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই। 

কাউসার রহমান বলেন, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের বাজেটের অর্থ বিগত বছরগুলো থেকে তুলনামূলক কমে গেছে। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উচিৎ কর্মদক্ষতা বাড়াতে ব্যবস্থা গ্রহণ।   

এস এস