নির্জন এলাকায় পরিত্যক্ত ঘরে একাকী বসবাসকারী চাকুরিচ্যুত সাবেক প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবেদীনের আবাসন, চিকিৎসা ও ভাতাসহ সব বিষয়ে দায়িত্ব নিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার খড়িবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবেদীন অক্লান্ত পরিশ্রম করে স্কুলে পাঠদানের অনুমতিসহ বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা করেন। পরবর্তীতে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি অজ্ঞাত কারণে তাকে চাকরিচ্যুত করে। এ ঘটনার তিনি আদালতের আশ্রয় নেন।
কিন্তু মামলা চালাতে গিয়ে মানুষগড়ার কারিগর জয়নাল এখন নিঃস্ব। নিজস্ব আত্বীয়-স্বজন না থাকায় বুড়িরবাঁধ পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি বিদ্যুৎবিহীন পরিত্যক্ত অন্ধকার ঘরে একাকী জীবন-যাপন শুরু করেন। ওই ঘরে একটি চৌকি একটি টেবিল এবং কয়েকটি চাদর ও কম্বলই তার একমাত্র সম্বল।
বয়সের ভারে অসহায় জয়নাল আবেদীনের শরীরে বাসা বেঁধেছে বিভিন্ন রোগ। কোমর ব্যথাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত তিনি। আত্মসম্মান নিয়ে সচেতন এই ব্যক্তির আজ খাবার ও ওষুধ কেনার সামর্থ নেই। চিরকুমার এই অসহায় মানুষটিকে দেখারও কেউ নেই। সারাদিন পরে থাকেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়ন বকসের হাটে। সেখানে ময়লা আবর্জনায় শুয়ে দিন কাটান তিনি। অর্থাভাবে মানুষের কাছে হাত পেতে যা পান তাই নিয়ে চলে তার জীবন।
এ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদপত্রে সংবাদ প্রকাশিত হলে প্রশাসনের নজরে আসে। বৃহস্পতিবার আকচা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ওই মানুষ গড়ার কারিগরকে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে যান। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন তার কথা শোনেন এবং তাকে প্রধানমন্ত্রীর আবাসন প্রকল্পের আওতায় একটি পাকা ঘর প্রদানের আশ্বাস দেন। সেই সাথে বয়োবৃদ্ধ হওয়ায় তাকে বয়স্কভাতা কার্ড দেওয়ার আশ্বাস দেন।
ঠাকুরগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন আজকের বাংলাদেশ পোস্টকে জানান, আকচা ইউনিয়নের পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিত্যক্ত ঘরে বসবাসকারী জয়নাল আবেদীনের বিষয়ে প্রশাসনের সবাই ওয়াকিবহাল রয়েছেন। ডিসি স্যারের নির্দেশনামতে স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ওই শিক্ষককে ডেকে আনা হয়। তাকে প্রধানমন্ত্রীর আবাসন প্রকল্পের আওতায় একটি ঘর প্রদান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও তার জীবধারণের জন্য একটি বয়স্কভাতা কার্ড ও চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতা করা হবে।
বিআইবি/সিবি/এডিবি
