ন্যাভিগেশন মেনু

ঠাকুরগাঁওয়ে আসামিকে না ধরে নিরপরাধ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের অভিযোগ


ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে চুরির মামলার প্রকৃত আসামিকে না ধরে নিরপরাধ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করার অভিযোগ উঠেছে বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

সোমবার (২৩ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে বালিয়াডাঙ্গী প্রেসক্লাবের সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন গ্রেপ্তার হওয়া নিরপরাধ ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী রুপসানা আকতার।

গ্রেপ্তার হওয়া ভুল ব্যক্তি হলেন বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার মহিষমারী গ্রামের আলিম উদ্দীন ওরফে বৈশাগুর ছেলে আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বালিয়াডাঙ্গী বাজারের মেইন রোডে দীর্ঘদিন ধরে মুদি ও মুড়ির ব্যবসা করে আসছেন।

সংবাদ সম্মেলনে রাজ্জাকের স্ত্রী লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করে বলেন, সোমবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে বালিয়াডাঙ্গী বাজারের মেইন রোডে নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পুলিশ পরিচয়ে সাদা পোশাকে কয়েকজন লোক তার স্বামীকে তুলে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তিনি থানায় গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন যে তার স্বামীর নামে চুরির মামলা রয়েছে। বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশ ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে। মামলার কাগজপত্র দেখতে চাইলে পুলিশ ভুক্তভোগীদের ঠাকুরগাঁও আদালতে গিয়ে খোঁজ নিতে বলেন।

তিনি আরও বলেন, ওইদিন বিকেলে ঠাকুরগাঁও আদালতে মামলার কাগজপত্র তুলে দেখি যে, ২০১১ সালে ১৬ জুন রাণীশংকৈল থানায় বাইসাইকেল চুরির একটি মামলায় আমার স্বামীকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। অথচ মামলার কাগজপত্র যাচাই করে দেখি যে, ওই মামলার প্রকৃত আসামী বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের দুওসুও জিয়াখোর গ্রামের তসলিম উদ্দীন ওরফে বুধু মোহাম্মদের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক। সে নেকমরদ বাজারে বাইসাইকেল চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে। ওই সময় বাজারের লোকজন বাইসাইকেলসহ তাকে রাণীশংকৈল থানা পুলিশে সোপর্দ করলে ওইসময় তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয় এবং তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। পরবর্তীতে জামিনে বের হয়ে নিখোজ হয় আব্দুর রাজ্জাক।

তা ছাড়াও ২০১১ সালে যে আব্দুর রাজ্জাককে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছিল তখন তার বয়স ছিল ৩৫ বছর। ২০২১ সালে তার বয়স হবে ৪৫ বছর। অথচ ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাকের জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার বয়স ৩৩ বছর।

দীর্ঘ ১০ বছর ওই মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশ প্রকৃত আসামীকে গ্রেপ্তার করতে না পেরে আমার স্বামী আব্দুর রাজ্জাককে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়।

সংবাদ সম্মেলনে তার বাবা আলিম উদ্দীন ওরফে বৈশাগু জানান, আমার ছেলের বিরুদ্ধে কোনও মামলা নেই। কোনও অপরাধ সে করেনি। অথচ চোর বানিয়ে পুলিশ আমার নিরপরাধ ছেলেকে কারাগারে পাঠিয়েছে। আমার ছেলেকে অন্যায়ভাবে চালান দেওয়ার ঘটনা তদন্ত করে দায়ী পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।

বালিয়াডাঙ্গী বণিক সমিতির সভাপতি ও বড়বাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আকরাম আলী জানান, পুলিশ নির্দোষ ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে আদালতে পাঠানোর প্রতিবাদে আগামীকাল কর্মসূচি দেবে বালিয়াডাঙ্গী বণিক সমিতি। সংগঠনের সকলের সাথে রাতেই এ নিয়ে আলোচনায় বসা হবে।

অভিযোগ অস্বীকার করে বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাবিবুল হক প্রধান জানান, পুলিশ নিশ্চিত হয়ে প্রকৃত আসামীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে।

ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, নামের ভুলে প্রকৃত আসামির পরিবর্তে অন্য কাউকে আসামি হিসেবে আদালতে সোপর্দ করার সুযোগ নেই। তারপরও  বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

বিআইবি/সিবি/এডিবি/