ন্যাভিগেশন মেনু

ঠাকুরগাঁওয়ে সোনালী আঁশে ফিরেছে সুদিন, খুশি কৃষক


ঠাকুরগাঁওয়ে সোনালী আঁশ পাটের সুদিন ফিরে এসেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে জেলায় পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। পাটচাষীরাও ভালো দাম পেয়ে খুশি।

তারপরও পাটের উৎপাদন মোটামুটি ভালো হয়েছে। এখন ক্ষেত থেকে পাট কর্তন,জাগ দেওয়া,পানিতে ডোবানো ও ধোয়ার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা।

অনেকে পাট ধোয়া ও শুকানোর কাজেও ব্যস্ত। অনেকে পাট শুকিয়ে বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন বিক্রি করতে। বিক্রিও হচ্ছে ২ হাজার ৭০০ থেকে ৩ হাজার টাকা মণ দরে। শুরুতে অবশ্য এ দাম ছিল ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকা।

পাটের বর্তমান দরে উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। তারপরও পাটকাঠি পাওয়ায় কৃষানীরা খুশি।

অবশ্য এখন বিক্রি না করে কয়েক মাস পাট ঘরে মজুদ রাখতে পারলে কৃষকরা দ্বিগুন টাকা লাভবান হবেন বলেও জানান ব্যবসায়ীরা।

আখানগর ভেলারহাট এলাকার কৃষক মনসুর আলী, শাহীন বাদশা ও আব্দুল আজিজ জানান, একবিঘা জমিতে হালচাষ, সার, বীজ, সেচ, নিড়ানি, পাট কর্তন, ধোয়া ও শুকাতে ব্যয় হচ্ছে ৫-৭ হাজার টাকা। আর একবিঘা জমিতে পাট পাওয়া যাচ্ছে ১০-১২ মণ। যার বাজার মূল্য ৩ হাজার টাকা দরে ৩৬ হাজার টাকা। এতে খরচ বাদ দিয়ে বিঘা প্রতি ২৫-৩০ হাজার টাকা লাভ হচ্ছে।অবশ্য যারা অন্যের জমি ফসল ফলানোর চুক্তিতে কিনে নিয়ে আবাদ করেন তাদের লাভ ৫ হাজার কম হচ্ছে বলে জানান চাষীরা।

রহিমা বেগম নামে এক কৃষানী জানান, একমাত্র পাটই কৃষক পরিবারগুলোকে বাচিয়ে রেখেছে। তাছাড়া পাটখড়ি জ্বালানি হিসেবে বেশ ভালো। একবিঘা জমিতে পাট চাষ করলে ওই পরিবারকে আর জ্বালানির চিন্তা করতে হয় না।

চলতি বছর ঠাকুরগাঁও জেলায় ৬ হাজার ২৯২ হেক্টর জমিতে পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। আবাদ হয়েছে ৬ হাজার ৮১৭ হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে দেশি জাতের পাট আবাদ হয়েছে ৭১৭ হেক্টর ও তোষা জাতের পাট আবাদ হয়েছে ৬ হাজার ১০০ হেক্টর। আর পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৫৯ হাজার ৪২৫ বেল।

এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবু তাহের বলেন, 'এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চাইতে অতিরিক্ত জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। তবে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় অনেক জায়গায় কৃষকরা বিভিন্ন সমস্যায় পড়ছে। যদি বৃষ্টিপাত বেশি হতো তাহলে পাটের মান আরেকটু ভালো হতো এবং কৃষকরা ভালো দাম পেতো।'

তিনি বলেন, পাটচাষকে লাভজনক করতে হলে সবক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হবে। এ সমস্ত প্রযুক্তি ব্যবহার করলে উৎপাদন খরচ কমে আসবে। উৎপাদন বেশি হবে। তবেই কৃষকরা লাভজনক অবস্থায় পৌঁছাবে। তা ছাড়াও পাট কর্তন পরবর্তী পানিতে ডোবানোর ক্ষেত্রে রিবন নেটিং পদ্ধতি ঠাকুরগাঁওয়ে এখনো জনপ্রিয় হয়ে উঠেনি। এটি কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় করা গেলে পাট জাগ দিতে সমস্যা সমাধান হবে এবং পাটের আঁশের মান ভালো হবে। কৃষকেরও ভালো দাম পাবেন।

বিআইবি/এসএ/এডিবি/