ন্যাভিগেশন মেনু

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষকের পদাবনতি


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ৩ শিক্ষককে পদাবনতির শাস্তি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। অ্যাকাডেমিক গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির দায়ে তাদের এ শাস্তি দেওয়া হয়।

শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষকরা হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিয়া রহমান, অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজান ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক ওমর ফারুক।

বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাবির মাসিক সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান সভাপতিত্ব করেন।

গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির দায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনর্ধারণী এই ফোরাম সামিয়া রহমানকে সহযোগী অধ্যাপক থেকে নামিয়ে সহকারী অধ্যাপক করেছে। এছাড়া, একই প্রবন্ধের সহলেখক অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজানকে শিক্ষা ছুটি শেষে চাকরিতে যোগদানের পর দুই বছর একই পদে থাকার শাস্তি দিয়েছে।

একই সিন্ডিকেট সভায় পিএইচডি থিসিসে জালিয়াতির আরেকটি ঘটনায় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক ওমর ফারুকের ডিগ্রি বাতিলের পাশাপাশি তাকে সহকারী অধ্যাপক থেকে প্রভাষক পদে পদাবনতি করা হয়েছে।

২০১৬ সালের ডিসেম্বরে সামিয়া রহমান ও সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজানের যৌথভাবে লেখা ‘এ নিউ ডাইমেনশন অব কলোনিয়ালিজম অ্যান্ড পপ কালচার: এ কেস স্ট্যাডি অব দ্য কালচারাল ইমপেরিয়ালিজম’ শিরোনামের আট পৃষ্ঠার একটি গবেষণা প্রবন্ধ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সোশ্যাল সায়েন্স রিভিউ’ জার্নালে প্রকাশিত হয়। এই প্রবন্ধের প্রায় পাঁচ পৃষ্ঠা ছিল ফরাসি দার্শনিক মিশেল ফুকোর ‘দ্য সাবজেক্ট অ্যান্ড পাওয়ার’ নামের একটি নিবন্ধের হুবহু নকল, যা ১৯৮২ সালে শিকাগো ইউনিভার্সিটির জার্নাল ‘ক্রিটিক্যাল ইনকোয়ারি’তে প্রকাশিত হয়।

পরে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো প্রেস এক লিখিত অভিযোগে মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এই চুরির কথা জানায়।

এ ছাড়াও এই দুইজনের বিরুদ্ধে এডওয়ার্ড সাঈদের ‘কালচার অ্যান্ড ইমপেরিয়ালিজম’ গ্রন্থের অনেক পাতা নকলের অভিযোগও ছিল।

অন্যদিকে, পিএইচডি থিসিসে জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৮ সালে সিন্ডিকেটের এক সভায় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ওমর ফারুকের ডিগ্রি বাতিল করা হয়। অপরাধের তুলনায় এটা লঘু মনে হওয়ায় তার শাস্তি পুননির্ধারণে গত ২৯ অক্টোবরের সিন্ডিকেট সভায় তিন সদস্যের ট্রাইবুনাল গঠন করা হয়। ওই ট্রাইব্যুনাল ফারুককে পদাবনতি দিয়ে প্রভাষক পদে নামিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করে৷

সিন্ডিকেট সদস্যরা সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে দুটি ট্রাইবুনালের সুপারিশের ভিত্তিতে। এখন এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করার সুযোগ থাকলেও শাস্তির মুখোমুখি হওয়া শিক্ষকেরা আর সিন্ডিকেটে আপিল করতে পারবেন না।

এডিবি/