ন্যাভিগেশন মেনু

তিন কোটি টাকার সড়কে ১৫ দিনেই ফাটল


নাটােরে সদ্য সংস্কার হওয়া গুরুদাসপুর-নয়াবাজার সড়কে ফাটল দেখা দিয়েছে। উঠে যাচ্ছে পিচের ঢালাই। সড়কের কোথাও কোথাও আবার ধস নেমেছে। সড়কের একপাশ রঙ করা হলেও বাকি কাজ বাদ রয়েছে। অথচ তিন কোটি টাকা ব্যয়ে এই সড়কটির সংস্কার কাজ করা হয়েছে মাত্র ১৫-২০ দিন আগে।

রবিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে সরেজমিনে সড়কে গিয়ে দেখা যায়, পৌর সদরের বাসস্ট্যান্ডের ৫০০ মিটার সড়কের মধ্য একাধিক স্থানে ফাটল ধরেছে। ফিনিশিং ভালো না হওয়ায় সড়কের পিচঢালাই করা পাথর উঠে যাচ্ছে। তাছাড়া পৌর সদরের অদূরে ব্রিজ এলাকার একাধিক স্থানে ফাটল ধরেছে।

এমন নাজুক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে পুরো সড়কজুড়েই। গুরুদাসপুর-নয়াবাজার সড়কে এমন নাজুক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এই সড়কটির সংস্কার কাজ করেছে নাটোরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সরকার কন্সট্রাকশন। এখন সড়কটির স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, চলাচলের ক্ষেত্রে এই সড়কটি অধিকগুরুত্বপূর্ণ হলেও এটির সংস্কার কাজে বিস্তার অনিয়ম করা হয়েছে। বিকেলে গরম করা পিচ ঢালাই করা হয়েছে ভোর পর্যন্ত। ঠান্ডা পিচ ঠিকমতো সমান্তরাল হয়নি। উপরন্তু ঢালাইয়ের মোটা পাথরগুলো উঠে সড়ক উচুঁ নিচু হতে শুরু করেছে।

এই সড়কের উপর নির্ভরশীল ভ্যানচালক তাজেম আলী, সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক মকলেছসহ অন্তত ১৫ জন অভিযোগ করেন, সদ্য সংস্কার করা সড়কটিতে এখনো রঙ করাই শেষ হয়নি। অথচ ৫ কিলোমিটারের পুরো সড়কই ফেটে গেছে। পিচ উঠে যাওয়ায় সড়কে অধিক ঝাঁকুনি হচ্ছে। ফাটল ধরা এই সড়কের স্থায়ীত্ব নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

এই সড়কটিতে শুধু যে ভ্যান, রিক্সা আর সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলে তা নয়, গুরুদাসপুর সদর বাসস্ট্যান্ড থেকে বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের সাথে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম এটি। এই সড়ক দিয়েই উপজেলাতে প্রবেশ করতে হয়। চালকল, চাতাল মিল বেষ্টিত গুরুদাসপুর থেকে প্রতিদিন পণ্যবোঝাই শত শত ট্রাক যাতায়াত করে এই সড়ক দিয়ে। অথচ সড়কটির সংস্কার কাজ করা হয়েছে অত্যন্ত নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে।

স্থানীয়রা জানান, সড়কটিতে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে। সেসময় ঠিকমতো পানি দেওয়া হয়নি। রোলারও করা হয়নি। আবার রাতের অন্ধকারে তরিঘরি করে ঠান্ডা পিচ দিয়ে ঢালাই করা হয়েছে। সড়কটি এখন ভাঙ্গতে শুরু করেছে। পিচঢালার পাথরও উঠে যাচ্ছে। জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির কাজে এমন বিস্তার অনিয়ম দুঃখজনক।

গুরুদাসপুর উপজেলা প্রকৌশল অফিস সূত্র বলছে, গুরুদাসপুর-নয়াবাজারের ৫ কিলোমিটারের এই সড়কটির পূর্ণ সংস্কারের জন্য ব্যায় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৪ লাখ টাকা।

মেসার্স সরকার কন্সট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী সুজিত সরকার জানান, সদ্য সংস্কার হওয়া সড়কে ফাটল ধরার কথা নয়। ফাটলের ব্যপারে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা করা হবে।

গুরুদাসপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. মিলন হোসেন জানান, সড়কে ফাটলের বিষয়টি তার জানা নেই। তবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এএস/সিবি/এডিবি/