ন্যাভিগেশন মেনু

দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ত এলাকায় কৃষিবিপ্লব ঘটবে: কৃষিমন্ত্রী


দেশের উপকূলীয় ও দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ত জমিতে কৃষি উৎপাদনের সম্ভাবনা অনেক। এই এলাকায় কৃষিতে বিপ্লব ঘটবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।

তিনি জানান, ইতোমধ্যে আমাদের কৃষিবিজ্ঞানীরা ধান, ডাল, তরমুজ, আলু, ভুট্টা, বার্লি, সূর্যমুখী, শাকসবজিসহ অনেক ফসলের লবণাক্ততাসহিষ্ণু উন্নত জাত উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছে। এসব জাত ও উৎপাদন প্রযুক্তি উপকূলবর্তী বিপুল এলাকার চাষীদের মধ্যে দ্রুত সম্প্রসারণের জন্য কাজ চলছে। এ লক্ষ্যে রোডম্যাপ প্রণয়নের কার্যক্রম চলমান আছে।

কৃষিমন্ত্রী জানান, চাষীরা এসব ফসলের চাষ করলে দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ত এলাকায় নতুন করে কৃষিবিপ্লব ঘটবে। এ এলাকার মানুষের মাথাপিছু আয় বাড়বে। মানুষের জীবনযাত্রার মানের কাঙ্খিত পরিবর্তন হবে।

রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় ঘেরের আইলে আগাম সীম চাষ ও অফসিজন তরমুজ চাষ সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে আয়োজিত কৃষক সমাবেশে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। 

কৃষিমন্ত্রী ড. রাজ্জাক বলেন, দেশের প্রায় ২৫ শতাংশ এলাকা হচ্ছে উপকূলীয় এলাকা। লবণাক্ততার কারণে এ এলাকায় সারাবছরে একটি ফসল হতো। আমন ধান তোলার পর বছরের বাকি সময়টা মাঠের পর মাঠ জমি অলস পড়ে থাকতো। এই প্রতিকূল ও বিরূপ পরিবেশে বছরে কীভাবে দুইবার বা তিনবার ফসল চাষ করা যায় - সে লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে আসছি।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে অনেক সাফল্য এসেছে। এটিকে আরও সম্প্রসারিত করা হবে, যাতে এ এলাকায় সারাবছর ধরে বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করা যায়।

এ সময় সেচের পানির সমস্যা দূর করতে খুলনা, বাগেরহাটে ছয় শতাধিক খাল খনন ও পুনঃখনন করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান মন্ত্রী।

পরিদর্শনকালে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী নায়ায়ণ চন্দ্র চন্দ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব ওয়াহিদা আক্তার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহ, বিএডিসি'র চেয়ারম্যান ড. অমিতাভ সরকার, বিএআরসি'র নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মো: বখতিয়ার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনার উপ-পরিচালক মো: হাফিজুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

প্রসঙ্গত, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসেবে, উপকূলীয় এলাকায় মোট জমির পরিমাণ ২৮ লাখ ৩০ হাজার হেক্টর, এরমধ্যে চাষযোগ্য ২১ লাখ ৬২ হাজার হেক্টর। আর লবণাক্ত এলাকার পরিমাণ ১০ লাখ ৫৬ হাজার হেক্টর। এছাড়া লবণ পানির ভয়াবহতার কারণে প্রতিবছর শুষ্ক মওসুমে উপকূলীয় এলাকায় ৫ লক্ষাধিক হেক্টর জমি অনাবাদি থেকে যায়।

মৃত্তিকা গবেষণা ও উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের জরিপ মতে, খুলনার মোট ২ লাখ ১৩ হাজার হেক্টর আবাদযোগ্য জমির মধ্যে লবণাক্ত জমির পরিমাণ এক লাখ ৯০ হাজার হেক্টর। যা মোট আবাদযোগ্য জমির ৮৯ শতাংশ।

একেএইচ/এডিবি/