ন্যাভিগেশন মেনু

কেরু চিনিকলের ৭টি উন্নয়ন প্রস্তাব সদর দপ্তরে


চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় কেরু চিনিকল কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানকে ঢেলে সাজাতে ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়নযোগ্য ৭টি উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রকল্প ঢাকা সদর দপ্তরে প্রেরণ করেছে।

সদর দপ্তরের অনুমোদন মিললে শুরু হবে বাস্তবায়নের কাজ। আর তা বাস্তবায়ন করা হলে বাড়তি রাজস্ব সেই সাথে অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন করবে প্রতিষ্ঠান। সেই সাথে চিনিকলটি ফিরে পাবে তার অতীত ঐতিহ্য।

জেলার একমাত্র রাষ্ঠায়ত্ব শিল্প প্রতিষ্ঠান দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি চিনিকল। ৫টি বিভাগের সমন্বয়ে পরিচালিত হয় এ প্রতিষ্ঠনটি। ১৯৩৮ সালের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ অবদি ২০ জন ব্যবস্থাপনা পিরচালক বিভিন্ন মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রতি বছর কৃষি খামার ও চিনি উৎপাদন বিভাগে কোটি কোটি টাকা লোকশান গুনলেও ডিস্টিলারি বিভাগ থেকে তা পুষিয়ে নেয়। শুধু প্রতিষ্ঠানই লাভ করে না সরকারও পায় মোটা অংকের রাজস্ব। অর্থ বছর শেষে সার্বিক হিসাব নিকাশে প্রতিষ্ঠানের লাভের পাল্লায় ভারী থাকে।

প্রতিষ্ঠানকে আরও লাভজনক করতে বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়নযোগ্য ৭টি উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রকল্পের প্রস্তাব প্রেরণ করেছেন ঢাকা সদর দপ্তরে।

এর মধ্যে রয়েছে বিএসআরআই কর্তৃক উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশলি ও চিনিসমৃদ্ধ জাতের আখ প্রতিস্থাপন। কৃষি খামারের জমি লিজ। চিনি কারখানার ৪নং বয়লারের এয়ার প্রিহিটার টিউব এবং ১নং ও ৪নং বয়লারের সুপার হিটার চিউব পরিবর্তন। যাতে করে বেশি আখ মাড়াই ও চিনি উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।

এছাড়া, ডিস্টিলারি কারখানার বয়লার স্থাপন ও ফরেণ লিকার ইউনিট সেমি-অটোমেশন করা। যাতে করে ভোক্তার চাহিদা অনুযায়ী বেশি পণ্য উৎপাদন করা সম্ভব হয়। আর উৎপাদন এবং উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে পারলে অধিক মুনাফা অর্জন করা সম্ভব হবে।’

এছাড়াও কক্সবাজার, কুয়াকাটা ও রংপুর পারমানবিক প্রকল্প এলাকায় ৩টি ফরেণ লিকার বিক্রয় কেন্দ্র এবং রাজশাহী মহানগর ও কক্সবাজার রামুতে ২টি দেশীয় মদের ওয়্যার হাইজ স্থাপন। জৈবসার কারখানার উৎপাদন বেগবান করার লক্ষে ৩ হাজার মে.টন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন কোম্পোষ্টিং ইয়ার্ড ও গোডাউন তৈরী করা হলে চাহিদা অনুযায়ি জৈবসার উৎপাদন করা সম্ভব হবে।

সেই সাথে রাসায়নিক সারের ব্যবহার থেকে কৃষকদের ফেরাতে পরিবেশ বান্ধ জৈবসার ব্যবহারে উৎসাহিতকরণ এবং বাজারজাতকরণে প্রচার প্রচারণা বৃদ্ধি করা। বিএমআর কেরুজ প্রকল্পের চলমান কার্যক্রম দ্রুত শেষ করার প্রস্তাব।

বর্জ্য পরিশোধনাগার স্থাপন। যাতে করে চিনিকল এলাকার মানুষ ও প্রাণীর জন্য একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশ যেমন নিশ্চিত হবে তেমনি জলজ ও বায়ুমন্ডলের ইকো-সিস্টেম ভারি কণা থেকে রক্ষা পাবে। সেই সাথে চিনিকল সংলগ্ন এলাকার পরিবেশ কারখান বর্জ্যর দুরগন্ধ থেকে রক্ষা পাবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান সনৎ কুামার সাহা বলেন, ‘চিনিকল কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে উন্নয়মূলক পরিকল্পনার প্রস্তাবগুলো এসেছে। তা পর্যালোচনা করে দ্রুত অনুমোদন এবং বাস্তবায়ন হয় সে লক্ষে কাজ চলছে। এরই মধ্যে যে সব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে তাতে আগামী অর্থ বছরে সরকারকে রাজস্ব দিয়েও ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন করবে কেরু চিনিকল।

এ ধারা অব্যাহত এবং প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে আগামী ৪ থেকে ৫ বছর পর এই প্রতিষ্ঠান থেকে শতকোটি টাকা করে মুনাফা অর্জন করা সম্ভব। তবে এর জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে সততা এবং নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে হবে।

চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সাঈদ বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে প্রস্তাবগুলো পাঠানো হয়েছে। অনুমতি পেলে কাজ শুরু হবে। সবাইকে মনে রাখতে হবে প্রতিষ্ঠানের মুনাফা অর্জন মানে সকলের আয় বৃদ্ধি। শুধু ব্যাক্তির উন্নয়ন হবে না, এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নও ঘটবে। কারণ এ প্রতিষ্ঠনের সাথে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িয়ে আছে অনেকেই। তাই ব্যাক্তির চাইতে আমার কাছে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ রক্ষা করার মূল কাজ। আর এ কাজ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে যেন অন্যায়ের কাছে মাথানত না করে সততার সাথে করতে পারি এর জন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।’

এনআই/এমআইআর/এডিবি