ন্যাভিগেশন মেনু

দেশের মানুষের কল্যাণ ছাড়া,আমার কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই: প্রধানমন্ত্রী


নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার একটাই কাজ দেশের মানুষের কল্যাণ করা। আর কোনো চাওয়া-পাওয়ার আমার কিছু নেই।  
শনিবার (২৮ অক্টোবর) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল উদ্বোধন উপলক্ষ্যে কর্ণফুলীর কেইপিজেড মাঠে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে স্বাধীনতা পেয়েছেন, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আজকে কর্ণফুলী টানেল, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আজকে উন্নয়ন। আপনারা আমাদের কাছে ওয়াদা করেন, আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় দিয়ে আওয়ামী লীগকে সেবা করার সুযোগ দেবেন কি না, হাত তুলে ওয়াদা করেন। এ সময় উপস্থিত নেতাকর্মীরা হাত তুলে ওয়াদা করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, দোয়া করবেন এই উন্নয়নের ধারা যেন অব্যাহত থাকে। ওই লুটেরা সন্ত্রাসীদের হাতে যেন দেশ না পড়ে।

শেখ হাসিনা বলেন, চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে বিবেচনা করে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হাতে নেওয়া হয়েছে। আমরা উন্নয়ন করছি, আর বিএনপি জ্বালাও-পোড়াও করছে। আমরা বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতা দিচ্ছি। যাতে কোনো লোক কষ্ট না পায়। আজকে বিনাপয়সায় বই দেওয়া হচ্ছে। আমরা বৃত্তি-উপবৃত্তি দিচ্ছি। আজকে সকলের হাতে মোবাইল ফোন। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা ২০০৮ সালে দিয়েছিলাম। আজকের সমস্ত বাংলাদেশে ডিজিটাল নেটওয়ার্ক আছে। সারাদেশে বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্প দিয়ে আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালে সরকারে এসে আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক দ্বারা অব্যাহত রেখেছে। যার কারণে বাংলাদেশে আজকে মানুষের ভাতের কষ্ট নেই। সবাই দুই বেলা খেতে পারছে। আমরা বিনা পয়সার ঘর করে দিচ্ছি। ১৯৯১ সালে ঘূর্ণিঝড়ের বাড়িঘর যারা হারিয়েছে, তাদের জন্য আমরা কক্সবাজারে ফ্ল্যাট করে দিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, বঙ্গবন্ধুর বাংলায় কেউ গৃহহীন থাকবে না। প্রত্যেক মানুষকে জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। আমাদের যুবকদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। যারা বিদেশে যান, আমার অনুরোধ দালালকে টাকা দিয়ে যাবেন না। আমি কর্মসংস্থান ব্যাংক করে দিয়েছি। সেখান থেকে জামানত ছাড়া ঋণ পাবেন। লোকজনকে বিভিন্ন ভাষা শেখার জন্য আমরা সুযোগ করে দিয়েছি। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করে।

তিনি বলেন, ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধ, এখন আবার গাজা ও ইসরাইল যুদ্ধ। এ কারণে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। তবে আমরা এক কোটি পরিবারকে কার্ড দিয়েছি। এটি দিয়ে তারা স্বল্পমূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য নিতে পারছে। করোনার সময় আমরা বিনামূল্যে টিকা দিয়েছি। পৃথিবীর অনেক ধনী দেশ দিতে পারেনি। আমরা দিয়েছি আপনারা যাতে সুরক্ষিত থাকেন। গ্রাম পর্যায়ের রাস্তাঘাট করে দিয়েছি। চট্টগ্রামের এত উন্নয়নের করেছি যা এর আগে কেউ করেনি। বিএনপির কাজ মানুষ খুন, লুটপাট ও দুর্নীতি করা। খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এ মামলায় যিনি সাজাপ্রাপ্ত। তার ছেলে তারেক রহমান বিভিন্ন মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে বিদেশে পালিয়ে আছে। সে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে মুচলেকা দিয়ে দেশ ছেড়েছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, আজকে আপনাদের জন্য আমি একটি ছোট উপহার নিয়ে এসেছি। এটি হলো টানেল। এখন দইজ্জার তল দিয়ে গাড়ি চলে। দক্ষিণ এশিয়ায় এত বড় আর টানেল নেই। আগামীকাল টানেল জনসাধারণ চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এখন ঢাকা থেকে কক্সবাজার যেতে চট্টগ্রাম চট্টগ্রামের ভেতরে ঢুকে যানজট পড়তে হবে না। টানেল এটি এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে যুক্ত হবে। যা আমাদের উন্নয়নের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখবে।

তিনি বলেন, রোদের মধ্যে অনেক কষ্ট করে আপনারা উপস্থিত রয়েছেন। এজন্য আপনাদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি সব হারিয়েছি ৭৫ এর ১৫ আগস্ট। বাবা শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের রাজপথের রাষ্ট্রপতি ছিলেন থাকেন নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমার পরিবার-পরিজনের সবাইকে হত্যা করা হয়েছে। আমি তাদের মাগফেরাত কামনা করি। আমি ও আমার ছোট বোন বিদেশে ছিলাম। তাই বেঁচে গিয়েছিলাম। ছয় বছর আমাদেরকে আসতে যাওয়া হয়নি। পরে জোর করে দেশে ফিরে দেশের মানুষের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে।

জনসভায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলটির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।

বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে বঙ্গবন্ধু টানেলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পরপরই গাড়িবহর নিয়ে টানেলের ভেতর দিয়ে পতেঙ্গা থেকে আনোয়ারায় যান প্রধানমন্ত্রী। টানেল পার হয়ে তিনি নিজের হাতে টোল দেন। পরে দুপুরে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের আনোয়ারায় কোরিয়ান ইপিজেড মাঠে জনসমাবেশে যোগ দেন।