দেশে প্রথমবারের মতো দুইজনের শরীরে ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ শনাক্ত হয়েছে। তারা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
চলতি মাসে রাজধানীর বারডেম জেনারেল হাসপাতাল থেকে তাদের শরীরে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস শনাক্ত করা হয়।
এদিকে সম্প্রতি ভারতে রোগটি ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে সতর্ক বার্তা জারি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বারডেম হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানান, গত ৮ মে ৪৫ বছর বয়সী এক রোগীর শরীরে মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এরপর গত ২৩ মে ৬০ বছর বয়সী আরও একজনের শরীরেও ছাত্রাকজনিত রোগটি শনাক্ত হয়।
বারডেম হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. লাভলি বাড়ৈ গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের ল্যাবে দুজনের শরীরে মিউকরমাইকোসিস শনাক্ত হয়েছে। আমরা তাদের চিকিৎসা দিচ্ছি এবং ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছি। বারডেমের ল্যাবরেটরিতে করোনা রোগীর শরীরে এবারই প্রথম রোগটি শনাক্ত হয়।
তিনি আরও জানান, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে অবস্থা গুরুতর হতে পারে। তাই, তাদের সতর্কভাবে চিকিৎসা দিতে হয়।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, যাদের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ও রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল তাদের মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
ব্ল্যাক ফাঙ্গাস ছত্রাক-জাতীয় একটি রোগ, যা প্রধানত কভিড রোগীদের মধ্যে ছড়াচ্ছে। মাত্রা ছাড়া স্টেরয়েড নিলে, বেশিদিন হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকলে অথবা উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের এই ছত্রাকের শিকার হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
এছাড়া শাকসবজি, মাটি, ফল, একই মাস্ক প্রতিদিন পরা থেকে এই রোগ ছড়ায় বলে সতর্ক করা হয়েছে।
এ রোগের উপসর্গ হলো জ্বর, মাথাব্যথা, নাক ও চোখ লাল হয়ে যাওয়া, দৃষ্টি কমে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, রক্তবমি ইত্যাদি।
ভারতে মিউকরমাইকোসিস বা ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। দেশটিতে এ পর্যন্ত ৮ হাজার ৮০০ জন এই ফাঙ্গাসে সংক্রমিত হয়েছে।
জানা যায়, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা কালো ছত্রাকে সংক্রমিত প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষ মারা যাচ্ছে। আর যারা বেঁচে যাচ্ছে, তাদের মধ্যে একটি অংশের চোখ অপসারণ করতে হচ্ছে।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি। আইইডিসিআর আজই হাসপাতালে গিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত হবে।
ওয়াই এ/এডিবি/
