ন্যাভিগেশন মেনু

নতুন জাতের ‘বিএসআরআই আখ-৪৮’ অবমুক্ত


পাবনার ঈশ্বরদীতে অবস্থিত ‘বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট’ (বিএসআরআই) আরও একটি উচ্চফলনশীল ও অধিক চিনি পাওয়া সম্ভব এমন নতুন জাতের আখ উদ্ভাবন করেছে। অধিক চিনি পাওয়া সম্ভব এই জাতের নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিএসআরআই আখ-৪৮’।

বিএসআরআইয়ের দীর্ঘ ১০ বছর গবেষণায় উদ্ভাবিত এই নতুন জাতের আখ অনুমোদনসাপেক্ষে অবমুক্ত করা হয়।

দেশের চাষীরা এখন উচ্চফলনশীল আখের যে জাতগুলো চাষ করেন, তার চেয়ে ৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ বেশি উৎপাদনক্ষমতার জাত উদ্ভাবনের দাবি করেছে বিএসআরআই। এরইমধ্যে পাবনার ঈশ্বরদী, রাজশাহী, ঠাকুরগাঁও, জামালপুর ও গাজীপুরে আখের এই জাতের পরীক্ষামুলক চাষ করা হয়েছে।

বিএসআরআইয়ের মহাপরিচালক ড. আমজাদ হোসেন আজকের বাংলাদেশ পোস্টকে বলেন, সম্প্রতি ন্যাশনাল সিড বোর্ডের সভায় নতুন জাতের এই আখের অনুমোদন দিয়েছে। ২০০৯ সালে ভারত ও পাকিস্তানের দুটি উচ্চফলনশীল জাতের আখ নিয়ে কাজ শুরু হয়। ২০১১ সালে দুই দেশের দুটি জাত ক্রস করে ক্লোন নির্বাচন শেষে নতুন জাতটির উদ্ভাবনের কাজ শুরু হয়। দীর্ঘ গবেষণা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও মাঠপর্যায়ে চাষের মাধ্যমে নতুন জাতের সফলতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

তিনি বলেন, বিভিন্ন সুগারক্রপ গবেষণা ইন্সটিটিউট নতুন এ আখের বীজ তৈরি করবে। আগামী এক বছরের মধ্যেই কৃষকের হাতে এই বীজ ব্যাপকভাবে পৌঁছে দেওয়া হবে। এই জাতের আখ চাষ করে কৃষক লাভবান হবেন। নতুন এই জাতটি মোটা, স্মাট ও উইল্ট রোগ প্রতিরোধী। এতে লালপচা রোগ দেখা যায় না। এ জাতের আখের পাতায় ধার কম থাকায় শ্রমিকরা অনায়াসে আখক্ষেতে কাজ করতে পারেন।

ড. আমজাদ হোসেন জানান, উদ্ভাবিত নতুন আখ জাতের প্রাথমিক ফলন পরীক্ষা, অগ্রবর্তী ফলন পরীক্ষা, আঞ্চলিক ফলন পরীক্ষাসহ বেশকিছু গবেষণার মাধ্যমে এটিকে নতুন জাত নির্বাচন করে গত ১৭ জুন জাতীয় বীজ বোর্ডের ১০৫তম সভায় অবমুক্তির জন্য উপস্থাপন করা হয়। পরে সভায় উপস্থিত সকল সদস্যদের সম্মতিক্রমে নতুন জাতের আখ অবমুক্ত করা হয়।

বোর্ড সভায় সভাপতিত্ব করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম। এতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার । তারা বিএসআরআইয়ের উদ্ভাবিত নতুন এই জাতের আখের প্রশংসা করেন।

বিএসআরআইয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রতি একর জমিতে এই জাতের আখ চাষ করে ৯৩ দশমিক ৫০ থেকে ১২১ দশমিক ৫২ মেট্রিকটন পর্যন্ত উৎপাদন পাওয়া যেতে পারে। এর আগে দেশে উচ্চফলনশীল আখগুলোর মধ্যে চেকজাত-৩৯ অন্যতম ছিল। বিএসআরআই আখ-৪৮ চেকজাতের তুলনায় ৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ বেশি উৎপাদন দেবে। চেকজাত-৩৯ এর তুলনায় নতুন জাতে শূন্য দশমিক ৩৮ শতাংশ চিনি এবং শূন্য দশমিক ৮৫ শতাংশ বেশি গুড় পাওয়া যাবে।

জেএইচ/সিবি/