ন্যাভিগেশন মেনু

নিউইয়র্কে ডেমক্র্যাটিক পার্টির তৃণমূলে কয়েকজন বাংলাদেশি


২৩ জুন নিউইয়র্কে ডেমক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী বাছাইয়ের নির্বাচনে অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্ট ২৪ থেকে জুডিশিয়াল ডেলিগেট পদে জয়ী হয়েছেন বাংলাদেশী বংশোদ্ভোত মাহফুজুল রহমান ইমরান।

ডাকযোগে পাঠানো ভোট গণনার আগেই কেন্দ্রে এসে ভোট প্রদানকারীদের ২ হাজার ৬৮২ ভোট পেয়েছেন বলে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে।

জ্যামাইকার বাসিন্দা ইমরানের জন্ম ১৯৯১ সালে এবং তার বাবা কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার তৈয়েবুর রহমান হারুন এর আগের নির্বাচনে সিটি কাউন্সিলে ডেমক্র্যাটিক পার্টি থেকে লড়েছেন।

প্রসঙ্গত, ২৩ জুনে দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের এ নির্বাচনে কংগ্রেস, স্টেট অ্যঅসেম্বলি এবং স্টেট সিনেটে বেশ ক’জন বাংলাদেশি লড়েছেন। কেউই তেমন ভোট লাভে সক্ষম হননি। 

নির্বাচন-পর্যবেক্ষকরা মন্তব্য করেছেন যে, বহুজাতিক এই সমাজে ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সকল মানুষের আস্থা অর্জন ব্যতিরেকে কোন নির্বাচনেই জয়ী হওয়া সম্ভব নয়। বাংলাদেশি-আমেরিকানরা ভোটার হিসেবে কোন কোন এলাকায় বড় ধরনের ফেক্টর বলে মনে হলেও তারা ঐক্যবদ্ধ হতে পারেন না আঞ্চলিক এবং অন্যান্য কারণে। 

এজন্যে নিউইয়র্ক সিটির জ্যামাইকা, ব্রুকলীনের চার্চ-ম্যাকডোনাল্ড, ওজনপার্ক, ব্রঙ্কসের পার্কচেস্টার এলাকা থেকে এখন পর্যন্ত কেউ সিটি কাউন্সিলের মেম্বারও হতে পারেননি। 

এদিকে, ওই নির্বাচনে একই এ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্ট থেকে নিউইয়র্ক স্টেট ডেমক্র্যাটিক কমিটিওম্যান হিসেবে মনোনীয় হয়েছেন আরেক বাংলাদেশি বংশোদ্ভোত আমেরিকান জামিলা এ উদ্দিন। কুইন্স কাউন্টি ডেমক্র্যাটিক পার্টির অকুন্ঠ সমর্থনে গুরুত্বপূর্ণ এ আসনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়া সম্ভব হয়েছে জামিলার। খ্যাতনামা শ্রমিক ইউনিয়ন-নেতা মাফ মিসবাহ উদ্দিন এবং কমিউনিটি লিডার মাজেদা এ উদ্দিনের কন্যা জামিলা এগিয়ে যেতে চান বহুদূর। এজন্যে প্রবাসীদের দোয়া চেয়েছেন।  

কুইন্স বরো প্রেসিডেন্টের মনোনয়নে তৃতীয় মেয়াদের জন্যে কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার হয়েছেন এ কে এম নূরল হক। কুইন্সের সাউথ জ্যামাইকা, রিচমন্ডহিল, হলিস, রুজডেল, ফ্লোরাল পার্ক প্রভৃতি এলাকা নিয়ে গঠিত কমিউনিটি বোর্ড-১২ এর উন্নয়ন-অগ্রগতিতে সিটি প্রশাসনে পরামর্শ প্রদানের কাজ করছেন নারায়নগঞ্জের সন্তান নূরল হক।

একইসাথে, মূলধারার সুযোগ-সুবিধায় প্রবাসীদের সম্পৃক্ততার ব্যাপারেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হয় বোর্ড মেম্বারদের। মার্কিন রাজনীতিতে উত্থানের ক্ষেত্রে কমিউনিটি বোর্ডকে সিড়ি হিসেবে বিবেচনা করেন সকলে। 

অপরদিকে, বাংলাদেশী-আমেরিকান শাহজাহান শেখও তৃতীয়বারের মতো ব্রঙ্কস কমিউনিটি বোর্ড-১ এর মেম্বার মনোনীত হয়েছেন। অতি সম্প্রতি বরো প্রেসিডেন্ট রুবিন ডিয়াজ এক চিঠিতে শাহজাহান শেখের এই পুন:মনোনয়নের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

উল্লেখ্য, কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার পদটি অবৈতনিক। স্থানীয় সিটি কাউন্সিল মেম্বার, অ্যাসেম্বলিম্যান, স্টেট সিনেটরদের সুপারিশক্রমে বরো প্রেসিডেন্ট দুই বছরের জন্য এই মনোনয়ন দেন। 

গাজীপুরের কাপাসিয়ার সন্তান শাহজাহান শেখ জানান, স্থানীয় আইনশৃংখলা, নির্বাচিত প্রতিনিধির পরামর্শ, ভূমি ব্যবহারসহ জনকল্যাণমূলক বহু সিদ্ধান্ত কমিউনিটি বোর্ডে গ্রহণ করা হয়। 

জ্যাকসন হাইটস সংলগ্ন সানিসাইড নিয়ে গঠিত কম্যুনিটি বোর্ড-২ এ পুনরায় মেম্বার পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন পেশাগত সততার মাধ্যমে মার্কিন মুল্লুকে বাঙালিদের সুনাম সমুন্নত রাখতে অনন্য ভূমিকা পালনকারী ওসমান চৌধুরী। কয়েক বছর আগে তার ট্যাক্সিতে কয়েক মিলিয়ন ডলারের হীরা-অলংকার ফেলে গিয়েছিলেন এক যাত্রী। সেসব অলংকার তিনি পরবর্তীতে ওই যাত্রীকে খুঁজে ফেরত দিয়ে সততার ক্ষেত্রে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন সারা আমেরিকায়। ডেমক্র্যাটিক পার্টির সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের পাশাপাশি অভিবাসী সমাজের কল্যাণে সদা ব্যস্ত ওসমান চৌধুরী বলেছেন, গণ-পরিবহন সম্পর্কিত কমিটিতে রাখা হয়েছে আমাকে। সেখান থেকেই অভিবাসী সমাজের অধিকার সুরক্ষায় পরামর্শ দিচ্ছি সিটি প্রশাসনে। 

এদিকে, ব্রঙ্কসে অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্ট-৯৭ এর ডিস্ট্রিক্ট লিডার পদে জয়ী হতে না পারলেও কমিউনিটির সুপরিচিত মোহাম্মদ এন মজুমদার আবারো কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার-৯ এ মনোনীত হয়েছেন। গত ১০ বছর থেকেই তিনি কমিউনিটি প্ল্যানিং বোর্ডে ‘ল্যান্ড অ্যান্ড জোনিং কমিটি’র চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালনের মধ্যদিয়ে স্থানীয় প্রবাসীসহ অভিবাসীদের নানা সমস্যার সমাধানে সোচ্চার থাকা মোহাম্মদ এন মজুমদার বহুবছর আগে নোয়াখালী থেকে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন। খ্যাতনামা একটি ল’ ফার্মে যুক্ত থেকে বহু প্রবাসীকে আইনগত সহায়তা দিয়েছেন। এছাড়া আগে থেকেই কমিউনিটি বোর্ডে আরো রয়েছেন আব্দুর রহিম হাওলাদার, আহসান হাবীব, মামনুনুল হক, আব্দুল মুকিত চৌধুরী, শাহনেওয়াজ, মোহাম্মদ আলী প্রমুখ। 

এডিবি/