ন্যাভিগেশন মেনু

কথাসাহিত্যেক নিমাই ভট্টাচার্য আর নেই


বাংলা কথাসাহিত্যের অন্যতম জনিপ্রয় উপন্যাস ‘মেমসাহেব’ এর রচয়িতা নিমাই ভট্টাচার্য আর নেই। তাঁর এই বিখ্যাত উপন্যাসটি তাঁকে লেখক হিসেবে জনপ্রিয়তা এনে দেয়। বেশ কয়েক বছর ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। 

বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) সকালে কলকাতার টালিগঞ্জে নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন নিমাই ভট্টাচার্য। দুপুরে তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ভারতীয় প্রকাশনা সংস্থা দে’জ পাবলিশিং।

একদিকে তিনি ছিলেন প্রখ্যাত সাংবাদিক, অন্যদিকে খ্যাতিমান লেখক। সাংবাদিকতার পাশাপাশি নিমাই ভট্টাচার্য রচনা করেছেন অন্তত তিন ডজন বই। তাঁর প্রকাশিত উপন্যাসের সংখ্যা ১৫০টিরও বেশি। তাঁর লেখা বইগুলো নানাভাবে সমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যময়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর।

তার জনপ্রিয় উপন্যাস ‘মেমসাহেব’ চলচ্চিত্রে রূপ পায় ১৯৭২ সালে। তাতে কেন্দ্রীয় বাচ্চু চরিত্রে অভিনয় করেন উত্তম কুমার। এছাড়া অভিনয় করেছিলেন মেমসাহেব হিসেবে অপর্ণা সেন। এরপর তার অনেক উপন্যাসের চিত্রায়ণ হয়েছে।

জীবদ্দশায় সাহিত্য কর্মের জন্য অসংখ্য স্বীকৃতি পাওয়া বরেণ্য এই কথাসাহিত্যিক ১৯৩১ সালের ১০ এপ্রিল বাংলাদেশের যশোর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৮ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান বর্তমান বাংলাদেশ থেকে তিনি ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। পরে কলকাতার রিপন কলেজে ভর্তি হন। কলেজে পড়ার সময়েই সাংবাদিকতা শুরু করেন তিনি।

নিমাই ভট্টাচার্য ১৯৫০ সালে ‘লোকসেবক’ পত্রিকা দিয়ে সাংবাদিকতা জীবন শুরু করেন। তারপর দিল্লিতে গিয়ে বেশ কয়েকটি পত্রিকায় কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৫০ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত ৩০ বছরের সাংবাদিকতা জীবনের বড় সময়টা কাটিয়েছেন দিল্লিতে। কাজ করেছেন পাঁচটি পত্রিকায়।

নিমাই ভট্টাচার্য ‘মেমসাহেব’ ছাড়াও  ‘পিয়াসা’, ‘ম্যারেজ রেজিস্ট্রার’, ‘অষ্টাদশী’, ‘ডিপ্লোম্যাট’, ‘নাচনী’, ‘ইমন কল্যাণ’, ‘ব্যাচেলার’ এর মতো অসংখ্য জনপ্রিয় উপন্যাস লিখেছেন।

দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনে জওহরলাল নেহরু, লাল বাহাদুর শাস্ত্রী, ভি কে কৃষ্ণমেনন, মোরারজী দেশাই, ইন্দিরা গান্ধীসহ অনেকের স্নেহভাজন ছিলেন নিমাই ভট্টাচার্য। সাংবাদিকতা থেকে অবসর নেওয়ার পর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পত্রিকায় কলাম লিখতেন তিনি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিষয়েও অগাধ পাণ্ডিত্য ছিল নিমাই ভট্টাচার্যের।

ওয়াই এ/ওআ