ন্যাভিগেশন মেনু

নেহার টার্গেট ছিলো শিল্পপতি, সরবরাহ করতো নারী-মদ


রাজধানীর আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর মৃত্যুর পর এখন একে একে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে অন্ধকার জগতের সব চাঞ্চল্যকর তথ্য।

ডিজে পার্টি, মদ পার্টি কিংবা শিশা লাউঞ্জের রঙিন জগতের আলো-আঁধারে ডিজে নেহা এই ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামি নেহা। এই নেহার অন্যতম টার্গেট ছিলো শিল্পপতি কিংবা তাদের সন্তানরা। হাতের নাগালে কোনো শিল্পপতি পেয়ে গেলেই যেনো কপাল খুলে যেতো তার। কলাকৌশলে বিভিন্ন রকমের অসহায়ত্ব প্রকাশ করেই জায়গা করে নিতো টার্গেটকৃতদের মনে।

বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তারের পর শুক্রবার ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে নেহাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।

রবিবার রিমান্ডের তৃতীয় দিনে নেহার ফোন থেকে পুলিশ ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের ডজনখানেক শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীর নম্বর পেয়েছে। যেগুলো সাংকেতিকভাবে সংরক্ষণ করা। এসব ধর্নাঢ্যদের অনেকের কাছে মদ, তরুণী সরবরাহ করতেন তিনি। কখনও কখনও নেহা নিজেই তাদের সঙ্গ দিয়েছেন। বিনিময়ে তাদের কাছ থেকে হাতিয়েছেন মোটা অঙ্কের টাকা। 

ডিজে নেহার পছন্দের মোবাইল ফোনে (আইফোন) টার্গেট করা ব্যবসায়ী ও ধনী যুবকদের নম্বর ‘ক্লায়েন্ট-১’, ‘ক্লায়েন্ট-২’, ‘ক্লায়েন্ট-৩’ এমন ধারাবাহিকভাবেই সংরক্ষণ করা আছে।

শিল্পপতিদের মনের গভীরে জায়গা করে নিতে প্রয়োজনে দেহ বিলিয়ে দিতে কার্পণ্য করতো না নেহা। প্রয়োজনে তার আওতায় থাকা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সুন্দরী তরুণীদের ম্যানেজ করে ওই শিল্পপতিদের সঙ্গে একান্তে সময় কাটানোর সুযোগ করে দিতো এই নেহা। এর বিনিময়ে হাতিয়ে নিতো মোটা অংকের টাকা কিংবা দামি গিফট।

জিজ্ঞাসাবাদে নেহা জানিয়েছেন, গত বছরের মার্চে চট্টগ্রামের এক গাড়ি ব্যবসায়ীর সঙ্গে একটি পার্টিতে তার পরিচয় হয়। এরপর ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে কৌশলে ৬ মাসে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন নেহা। নেহার এসব কাজে সহযোগিতা করতেন তারই চাচাতো ভাই শাফায়াত জামিল বিশাল। ভাই বিশাল সার্বক্ষণিক নেহার সঙ্গেই থাকতেন।

২৮ জানুয়ারি উত্তরার ব্যাম্বু স্যুট রেস্টুরেন্টে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মদপান করাতে নেহা ও তার খুব কাছের বন্ধু আরাফাত পার্টির আয়োজন করেন। মদপানের পর অসুস্থ হয়ে আরাফাতও মারা গেছেন। সেদিন নেহার ফোনেই তার চাচাতো ভাই শাফায়াত জামিল ওরফে বিশাল এয়ারপোর্ট এলাকা থেকে মদ কিনে নিয়ে যায় ওই রেস্টুরেন্টে।

নেহা পুলিশকে জানিয়েছেন, খদ্দেরদের তালিকা সংরক্ষণ করতেন বিশাল। এছাড়াও অবৈধ দরদামে সে মধ্যস্থতাকারী হিসাবে দায়িত্ব পালন করতেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী মাধুরীর মৃত্যুর পর তার বাবার মামলায় অজ্ঞাত আসামি হিসাবে নিজেই আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন বিশাল। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন। এছাড়া ওই ছাত্রীর ছেলে বন্ধু আরিফ এবং তাদের বাসায় আশ্রয়দাতা তাফসিরও কারাগারে আটক রয়েছেন। 

ওআ/