ন্যাভিগেশন মেনু

নোবিপ্রবির মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসাসেবা পেতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি


নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসাসেবা দিতে রয়েছেন মাত্র তিনজন চিকিৎসক। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আট হাজার আবাসিক-অনাবাসিক শিক্ষার্থীর চিকিৎসা সেবা পেতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মেডিকেল সেন্টারের তিনজন চিকিৎসকই মহিলা। দেড় বছর আগে প্রধান মেডিক্যাল অফিসার চলে যাওয়ায় কোনও পুরুষ চিকিৎসক নেই। নতুন করে চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ফলে চাহিদামতো চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে না বলে জানায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিভিন্ন সময়ে অসুস্থ হলে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসকদের মাধ্যমে সেবা গ্রহণ করে এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ নিয়ে থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যালে চিকিৎসককে দেখানোর পর অল্পমূল্যের কিছু ওষুধ ছাড়া কোনও ওষুধ দেওয়া হয় না। এ ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ কোনও চিকিৎসা সরঞ্জাম নেই।

শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করেন, করোনায় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় টেলিমেডিসিন সেবা চালু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ঘরে বসে বিভিন্ন সময় ফোনকলের মাধ্যমে সেবা নিয়ে থাকি। আমরা ছেলেরা একজন পুরুষ চিকিৎসকের সঙ্গে যেভাবে সব সমস্যা শেয়ার করতে পারি সেভাবে একজন মহিলা চিকিৎসকের সঙ্গে সকল সমস্যা শেয়ার করতে পারি না। এ ছাড়া কোনও ছাত্র অসুস্থতার জন্য হেঁটে মেডিক্যালে যেতে না পারলে একজন মহিলা চিকিৎসক ছাত্রদের আবাসিক হলে এসে চিকিৎসা দেওয়া কষ্টকর। তাই মহিলা চিকিৎসকের পাশাপাশি পুরুষ চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

শিক্ষার্থীদের দাবি, নিউরোলজিস্ট ও চক্ষু চিকিৎসকসহ ভালোমানের দক্ষ চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়াসহ পর্যাপ্ত পরিমাণে বিভিন্ন প্রকার প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম, সার্বক্ষণিক চিকিৎসক ও অন্তত ১০-১৫ টি শয্যাবিশিষ্ট মেডিক্যাল সেন্টারের ব্যবস্থা করা।এছাড়া মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও নিয়মিত কাউন্সিলিং প্রোগ্রাম চালু করার দাবি জানান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সালাউদ্দিন মহসিন জানান, 'আমাদের মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসক থাকলেও কোনও পুরুষ চিকিৎসক নেই। যার কারণে অনেকেই মেডিক্যাল সেন্টারে যেতে চান না। তা ছাড়াও আমাদের মেডিক্যাল সেন্টারের যন্ত্রপাতিগুলো শিক্ষার্থীদের স্বার্থে সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয় না। আর প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়ার জন্য গেলে যখন সাধারণ পথ্যগুলোও পাওয়া যায় না, তখন মনে হয় এ যেন এক ঢাল-তলোয়ারবিহীন নিধিরাম সর্দার।'

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল অফিসার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফারুক উদ্দিন বলেন, পুরুষ চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি আমাদের মাথায় রয়েছে। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে আমরা এ বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করবো। বর্তমানে তিনজন চিকিৎসক রয়েছেন। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে আরও চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হবে। এ ছাড়া মেডিক্যালের চিকিৎসা কার্যক্রম আরও ভালো করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ দিদার-উল-আলম বলেন, 'বিষয়টি নিয়ে আমরাও ভাবতেছি। বর্তমান যেসব মহিলা চিকিৎসক রয়েছেন তারা আগেই নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন। দীর্ঘদিন নিয়োগ বন্ধ থাকায় নতুন করে চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে পরবর্তী নিয়োগে পুরুষ চিকিৎসকের বিষয়টি মাথায় রেখেই ব্যবস্থা করা হবে। মেডিক্যালের জন্য নতুন ভবন করা হয়েছে এবং সেখানে এটিকে স্থানান্তর করা হয়েছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের সেবা দিতে চিকিৎসা ব্যবস্থা আরও উন্নত করা হবে।'

এসএসএফ/সিবি/এডিবি/