ন্যাভিগেশন মেনু

নড়াইল মুক্ত দিবস ১০ ডিসেম্বর


আজ ১০ ডিসেম্বর, নড়াইল মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিন নড়াইল রাজাকার ও পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিপাগল দামাল ছেলেরা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এক সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে নড়াইল শত্রু মুক্ত করে।

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণে সাড়া দিয়ে নড়াইলের মুক্তিপাগল জনতা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তারা নড়াইলের এসডিও’র বাসভবনকে স্থানীয় মুক্তিযুদ্ধের হাই কমান্ডের সদর দপ্তর ঘোষণা করে।

মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ৯ ডিসেম্বর নড়াইল শহরকে হানাদারমুক্ত করার জন্য পরিকল্পনা অনুযায়ী ফজলুর রহমান জিন্নাহর নেতৃত্বে একটি গ্রুপ চিত্রা নদীর পূর্ব দিক থেকে কাভারিং সাপোর্টে, অন্য গ্রুপ সদর থানা লিডার শরীফ হুমায়ুন কবীরের নেতৃত্বে বর্তমান নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের দক্ষিণ দিক থেকে আক্রমণ চালানো হয়।

এসময় পাল্টা আক্রমণে সদরের বাগডাঙ্গা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান শহীদ হন। শহরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাংলোতে অবস্থানরত পাকিস্তানি মিলিটারিকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিলে তারা আত্মসমর্পণ করতে অস্বীকার করেন।

এসময় মুক্তি বাহিনীর সদস্যরা চারিদিক থেকে গুলিবর্ষণ শুরু করলে হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। সেখানে বেশ কয়েকজন পাক মিলিটারি নিহত হয় এবং অন্যদের আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়। ১০ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নড়াইল হানাদার মুক্ত ঘোষণা করা হয়। পরে শহরে বিজয় উল্লাস করতে থাকে। জয় বাংলা স্লোগানে শহরকে প্রকম্পিত করে তোলে বাংলার দামাল ছেলেরা।

১৯৭১ সালে ১৪ ডিসেম্বর ৮ নম্বর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার মেজর মঞ্জুর নড়াইলে আসেন এবং মুক্তি পাগল হাজারও জনতার উপস্থিতিতে ডাকবাংলো প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়।

মহান মুক্তিযুদ্ধে নড়াইল জেলার বিশেষ অবদান রয়েছে। নড়াইল জেলা বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুক্তিযোদ্ধা অধ্যুষিত জেলা। এ জেলা হতে প্রায় ২ হাজার মুক্তিযোদ্ধা মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছে। দেশের ৭ জন বীরশ্রেষ্ঠর একজন মরহুম ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ নড়াইলের কৃতি সন্তান।

আজ বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) দিনটি উপলক্ষে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয় নড়াইল জেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ইউনিটসহ বিভিন্ন সংগঠন।

এস এ / এস এস