ন্যাভিগেশন মেনু

পণ্য রফতানিতে পাটখাত আবার পুনরুজ্জীবিত হয়েছে: বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী


বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় চট্টগ্রামের কেএফডি জুট মিলস্ লিমিডেটের উৎপাদিত পাটপণ্য বিদেশে রফতানি শুরুর মাধ্যমে পাটখাত আবার পুনরুজ্জীবিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতিক)।

মঙ্গলবার (২৪ মে) দুপুরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় কেএফডি জুট মিলস্ লিমিটেডের উৎপাদন কার্যক্রম পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি) মিলসমূহ ভাড়া ভিত্তিক বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হওয়ায় এসব মিলে নতুন করে অনেকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে। কেএফডি জুট মিলের ইজারাদার ইউনিটেক্স জুট ইন্ডাস্ট্রিজ এ পর্যন্ত ১৩০ টন পাটজাতপণ্য ভিয়েতনাম, তিউনিশিয়া ও চীনে রফতানি করেছে। এছাড়াও প্রায় ৬০০ টন পাটপণ্যের অর্ডার শিপমেন্টের অপেক্ষায় আছে।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামের কেএফডি জুট মিলস লিমিটেডকে ইউনিটেক্স জুট ইন্ড্রাস্ট্রিজ লিমিটেডের কাছে ভাড়াভিত্তিক ইজারা দেওয়া হয়। কেএফডি জুট মিলটি বর্তমানে ৪০০ শ্রমিকের মাধ্যমে দৈনিক গড়ে ১০টন পাটপণ্য উৎপাদন করছে। ইউনিটেক্স জুট ইন্ড্রাস্ট্রিজ এ পর্যন্ত ১৩০ টন পাটজাতপণ্য ভিয়েতনাম, তিউনিশিয়া ও চীনে রফতানি করছে। এছাড়াও প্রায় ৬০০ টন পাটপণ্যের অর্ডার শিপমেন্টের অপেক্ষায় আছে। ইউনিটেক্স জুট ইন্ডাস্ট্রিজ আরো দুটি উৎপাদন ইউনিট আধুনিকায়নের মাধ্যমে চালু করতে যাচ্ছে। ফলে প্রচলিত ও বহুমুখী পাটপণ্য মিলে দৈনিক গড়ে ১০০ টন পণ্য উৎপাদন করা সম্ভব হবে। আশা করছি, এখানে ৩৫০০ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘নরসিংদীর বাংলাদেশ জুট মিলস্ লিমিটেড ভাড়াভিত্তিক ইজারা দেওয়া হয়েছে। মিলটিতে ইতোমধ্যে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এছাড়াও খুলনার ক্রিসেন্ট জুট মিলস্ ও চট্টগ্রামের হাফিজ জুট মিলের লিজ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’

এছাড়াও ১৩টি জুটমিলের জন্য ২য় ইওআই (এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট) বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে ১৮টি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কাছ হতে ৫৩টি প্রস্তাব পাওয়া গেছে। প্রস্তাবসমূহ দ্রুত যাচাইবাছাই করা হচ্ছে। আশা করছি, এই পর্যায়ে আরও কয়েকটি মিল ভাড়াভিত্তিক লিজ দেওয়া সম্ভব হবে বলেও জানান মন্ত্রী।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী বলেন, ‘নতুন করে এসব মিলে অনেকের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে এবং এ ক্ষেত্রে অবসানকৃত শ্রমিকরা অগ্রাধিকার পাবেন।’

পরিদর্শন শেষে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী মিল প্রাঙ্গনে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। এসময় তিনি বলেন, ইজারা দেওয়া সরকারি পাটকল কেমন চলছে দেখতে এসেছি। বেসরকারি উদ্যোক্তারা পাটের ভবিষ্যৎ কার্যক্রম এগিয়ে নিতে পারবে কিনা। এখানে বেশ কর্মচাঞ্চল্য দেখছি। শ্রমিকদের কানে কানে জানতে চেয়েছি তারা কেমন আছে। মালিক শ্রমিক মিলে মিল চালালে, মালিকবান্ধব শ্রমিক ও শ্রমিকবান্ধব মালিক হলে মিল ভালো চলে।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান আমলে পাট ছিল প্রধান আয়ের উৎস, পাটের সুদিন ফিরছে, পাটের সুতা তৈরি হচ্ছে। পাট রফতানির সব আয় ডলারে হবে, শতভাগ ভ্যালু অ্যাডিশন হবে। কৃষক যখন পাট রোপণ করছে, সেটি একেকটি ডলার। পাটকড়ির চারকোল রফতানি করছি। পাট ও পাটকড়ি দুটি রফতানি হচ্ছে।

তিনি বলেন, কারখানার প্রতি ভালোবাসা থাকলে উন্নতি হবে। মেশিনকে ভালোবাসতে হবে, শ্রমিককে ভালো বাসতে হবে। মেশিন মায়ের সমান, মেশিনকে আদর করতে হবে। একটি বেয়ারিং ভাঙলে দ্রুত না বদলালে পুরো মেশিন নষ্ট হয়ে যেতে পারে। প্রতিযোগিতায় টিকতে হলে নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদন করতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি, বস্ত্র ও পাট সচিব মো. আব্দুর রউফ, ইউনিটেক্স গ্রুপের সিএফও মো. আরিফ, বিজনেস কো-অর্ডিনেটর সাকিব আহমেদ সিদ্দিকী, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার, ইউপি চেয়ারম্যান জহির আহমদ চৌধুরীসহ ইউনিটেক্স গ্রুপের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।