ন্যাভিগেশন মেনু

পরিবহণ খাতে চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্ব: ক্ষমতার পালাবদলে বেপরোয়া মামুন-মন্টু জুটি


বাংলাদেশের পরিবহণ খাতে চাঁদাবাজি এবং দখলদারিত্বের বিষয়টি নতুন কিছু নয়। বিভিন্ন সংগঠনের নামে বেনামে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এসব অপকর্ম, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চরম আকার ধারণ করে। সরকারের মদদপুষ্ট কয়েকজন রাজনৈতিক পরিচয়ধারী সুবিধাভোগীর ছত্রছায়ায় সাধারণ বাস ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যবসা পরিচালনা প্রায় অসম্ভব হয়ে ওঠে।

ঢাকা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির প্রত্যক্ষ মদদে দিনের পর দিন চলেছে এই চাঁদাবাজি। তবে, ছাত্র জনতার গণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, কোনো ধরনের নির্বাচন ছাড়াই কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া জোরপূর্বক এই সমিতির প্রধানের চেয়ার দখলে নেন।

তার সাথে চাঁদাবাজির দোসর হিসেবে যোগ দেন পূর্বের আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগী এবং কট্টর সমর্থক মমিনুল্লাহ মামুন এবং মন্টু মিয়া। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে তারা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন অধীনস্থ গুলশান এলাকায় 'ঢাকা চাকা' নামে বাস সার্ভিস চালু করেছিলেন।

মন্টু মিয়ার নেতৃত্বে মতলব এক্সপ্রেস, ভূঁইয়া পরিবহণ এবং মমিনুল্লাহ মামুনের নেতৃত্বে স্বাধীন পরিবহণ বেস্ট শতাব্দী এসি লাল সবুজ পরিবহণ বিভিন্ন রুটে চলাচল করেছে প্রবল দাপটের সাথে। তবে, সরকারের পতনের পর এই মামুন-মন্টু জুটি তাদের রাজনৈতিক লেবাস বদলে আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা শুরু করেছে লাগামহীন চাঁদাবাজি এবং নজিরবিহীন দখলদারিত্ব।

ঢাকা থেকে বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বাসগুলোতে এই ধরনের নৈরাজ্য চালানোর পাশাপাশি, নারায়ণগঞ্জ রুটে আরটিসির বিন্দুমাত্র তোয়াক্কা না করে অনুমোদনহীনভাবে বাস চলাচলের রুট বর্ধিতকরণের মতো অবৈধ কার্যক্রমও চালু করেছে তারা। তাদের সর্বশেষ শিকার নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচলকারী শীতল পরিবহণ। 

বিগত সরকারের অলিখিত গডফাদার কুখ্যাত শামীম ওসমানের ছত্রছায়ায় চলা শীতল পরিবহণের প্রধান কাউন্টার দখল করে রাতারাতি নাম বদলে ‘গ্রীন ঢাকা’ নামে আত্মপ্রকাশ করেছে মামুন-মন্টু জুটি এবং চালু করেছে তাদের বাস সার্ভিস।

রাজনৈতিক পালাবদলের ফলে দলীয় পরিচয় বদলে আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠা এই ব্যক্তিদের কার্যক্রমকে বাস মালিকরা অত্যন্ত বিপদজনক ও পরিবহণ খাতের জন্য হুমকি হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, ক্ষমতার পালা বদলে রাজনৈতিক পরিচয়ে যারা-ই পরিবহণ খাতের সংগঠনগুলোর নেতৃত্বে আসুক, তাদের প্রধান উদ্দেশ্য থাকে এই খাতের চাঁদাবাজি, স্বেচ্ছাচারিতা, এবং অরাজকতার নিয়ন্ত্রণ নেয়া। যার ফলে ভোগান্তির শিকার হয় সাধারণ ব্যবসায়ী এবং জনগণ।