ন্যাভিগেশন মেনু

চিন থেকে কেনা ডেমু ট্রেন এখন বোঝা


ভালো ভেবে চিন থেকে ৬৮৬ কোটি টাকায় কিনে আনা ২০ সেট ডেমু (ডিজেল ইলেকট্রিক মাল্টিপল ইউনিট) ট্রেন এখন বাংলাদেশের জন্য বিরাট বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের বহর গতিময় করতে ২০ সেট ডেমু ট্রেন মুখ থুবড়ে পড়েছে। ২০টি’র মধ্যে ১৬ সেটই অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে ইয়ার্ডে।

মাত্র ৪ সেট ট্রেন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। চালু হওয়ার মাত্র সাত বছরের মাথায় এসব ডেমু ট্রেন এখন রেলের কাঁধে বিরাট বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, যাত্রীসেবা আধুনিকায়নের নামে ২০১৩ সালে চিন থেকে সরাসরি কেনা হয় ২০ সেট ডেমু ট্রেন। ৬৩৪ কোটি টাকা দামে কেনা ট্রেনগুলো দেশে আনার পর দেখা যায় যেনতেনভাবে তৈরি করা এগুলো এদেশে চলাচলের উপযোগী নয়। এর পাদানি প্লাটফর্ম থেকে অনেক উঁচুতে। কোনো বগিতে টয়লেট নেই। জানালার কাচ এমনভাবে বসানো ভেতরে বাতাস ঢোকে না।

লাইনে চালু করতে গিয়ে দেখা দেয় নানা জটিলতা। এসব জটিলতা দূর করতে ব্যয় হয় আরও ৫২ কোটি টাকা। মোট ৬৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে চালু করা এসব ডেমু ট্রেন থেকে সাত বছরে রেলের আয় হয়েছে মাত্র ২২ কোটি টাকা।

অথচ এর রক্ষণাবেক্ষণ, জ্বালানি খরচ ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতায় ব্যয় হয়েছে তার কয়েকগুণ বেশি। ২০ সেট ডেমুর মধ্যে ১৮ সেট পূর্বাঞ্চলে এবং ২ সেট পশ্চিমাঞ্চলে দেওয়া হয়েছিল। ২০ সেটের মধ্যে ১৬ সেটই অকেজো হয়ে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে রয়েছে ইয়ার্ডে।

এগুলো আর চালু করে লাইনে দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই। বাকি ৪ সেট কোনোরকমে এখনও চলছে। এর মধ্যে একটি নোয়াখালী-লাকসাম-চাঁদপুর রুটে, একটি ঢাকা-কালিয়াকৈর রুটে, একটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় রুটে এবং একটি চলছে চট্টগ্রাম-নাজিরহাট রুটে ।

বন্ধ হয়ে গেছে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা-কুমিল্লা, ঢাকা-জয়দেবপুর, ঢাকা-টঙ্গী, আখাউড়া- সিলেট এবং ময়মনসিংহ রুটের ডেমু। যে ৪টি সেট চলছে তাও যেকোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে। রেলওয়ের পরিবহন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, চিন থেকে এসব ট্রেন কেনার আগে কোনো রকম সমীক্ষা করা হয়নি।

পরিবহন বিভাগের কোনো মতামত গ্রহণ করা হয়নি। ডেমু ট্রেন মেরামতের জন্য রেলের কোনো ওয়ার্কশপ নেই। এই ট্রেনের স্পেয়ার পার্টসও পাওয়া যায় না। ফলে অকেজো হয়ে পড়ে থাকা ডেমু ট্রেনগুলো আগামীতে স্ক্রাপ করা ছাড়া আর কোনো উপায় দেখা যাচ্ছে না।

এস এস