ন্যাভিগেশন মেনু

পাবনায় লোকসানে বন্ধ সুগার মিল, অনিশ্চয়তায় শ্রমিকরা


দীর্ঘ ২০ বছরেও লাভের মুখ না দেখে ৩৪৫ কোটি টাকার বেশি লোকসানের বোঝা নিয়ে গত বছরের ডিসেম্বর বন্ধ হয়ে যায় পাবনা সুগার মিলস লিমিটেড।

গত বছরের ডিসেম্বরে শিল্পমন্ত্রণালয় থেকে মিল বন্ধের চিঠি আসার পর মিলের শ্রমিক, আখ চাষী ও কর্মচারীরা পাবনা দাশুরিয়া সড়কে কয়েক দফা বিক্ষোভ করেন। গত কয়েক মাস তারা আশাবাদী ছিলেন আবার হয়তো চালু হবে সুগার মিল।

মিল বন্ধের পর থেকেই পরিবার পরিজনদের নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়ে শ্রমিকরা।

শ্রমিকরা জানান, তারা দীর্ঘ প্রায় একবছর বেতন না পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে অনাহারে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

পাবনা চিনিকল ওয়াকার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, আমাদের একদিকে আশ্বস্ত করা হচ্ছে মিলটি পূনরায় চালু করা হবে, অন্যদিকে মিল থেকে যন্ত্রপাতি সরঞ্জাম সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। বেতন ভাতা পাবো কিনা জানিনা। আমরা পরিবার নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছি। আমরা এখনো আশাবাদী আবার পাবনা সুগার মিলটি চালু হবে।

 সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯২ সালের ২৭ ডিসেম্বর পাবনা-রাজশাহী মহাসড়কের দাশুড়িয়ায় পাবনা সুগার মিলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ১৯৯৭-৯৮ সালে মিলটি বাণিজ্যিকভাবে আখ মাড়াই শুরু করে। মিলটি প্রতি মাড়াই মৌসুমে ১৫ হাজার মেট্রিকটন আখ মাড়াই করতে সক্ষম।

শুরু থেকেই লোকসান টানতে থাকে মিলটি। দীর্ঘ ২০ বছরে মিলটির লোকসানের পরিমান দাঁড়িয়েছে ৩৪৫ কোটি টাকা।

লোকসানের পর মিলের কর্মকর্তারা নানা অজুহাত সামনে আনেন। তবে বিশ বছরেও এসব অজুহাত নিরসন করে মিলটিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে ব্যর্থ হয় তারা।

পাবনা সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন লোকসানের কথা স্বীকার করলেও নিরসনে তেমন পদক্ষেপ নিতে পারছেন না বলে জানান।

দীর্ঘ ২০ বছরেও মিলটি লাভের মুখ দেখেনি কেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, মিলের হাতে আখ উৎপাদনের জন্য বিপুল পরিমান জমি নেই। সেই সঙ্গে বিভিন্ন অজুহাত তুলে ধরেন।

তবে, সুগার রিফাইন্ড করার প্লান্টসহ বেশ কিছু পরিকল্পনা নিয়ে চিন্তা ভাবনা চলছে উল্লেখ করে তিনি জানান, লোকসান কমাতে এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

পাবনা আখ চাষী সমিতির সদস্য মো. বাদশা মিয়া জানান, 'পাবনা সুগার মিল কর্তৃপক্ষ প্রতি বছর লোকসানের পর নানা অজুহাত সামনে আনেন। তবে বিশ বছরেও এই সব অজুহাত নিরসন করে মিলটিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিনত করতে কার্যত: তারা ব্যর্থ হয়েছেন। মিলের ক্যাপসিটি আছে উৎপাদনের, তাহলে লোকসান হচ্ছে কেন?'

পাবনা সুগার মিল কর্তৃপক্ষ বলছেন, 'পাবনা অঞ্চলে উন্নতজাতের আখ চাষ হয় না। তবে সুগার রিসার্চ ইন্সটিটিউট এ কথা মানতে একেবারেই রাজি নয়। তারা বলছেন, গবেষণাজাত যে আখ বীজ উৎপাদিত হচ্ছে সেটি উচ্চফলনশীল।'

দীর্ঘদিন বেতনভাতা না পাওয়া শ্রমিকরা মিলের লোকসানের কারন অনুসন্ধান করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া এবং বন্ধ সুগার মিল দ্রুত খুলে দেওয়ার দাবিতে অটুট রয়েছে।

কে এস/এস এ/এডিবি